মোটরসাইকেল চোরকে থানায় এনে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ ওসির বিরুদ্ধে
Published: 30th, March 2025 GMT
জয়পুরহাটের কালাইয়ে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে মোটরসাইকেল চোরকে ধরার পর থানা থেকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কালাই থানার ওসি জাহিদ হোসেনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় রোববার বিকেলে মোটরসাইকেলের মালিক কালাই পৌরশহরের থুপসাড়া মহল্লার আব্দুল খালেকের ছেলে আবু ইউসুফ নিজেই সাংবাদিকদের অভিযোগ করেছেন।
আবু ইউসুফ জানান, শনিবার রাতে চোরকে তার বাড়ি থেকে ধরে এনে থানা হাজতে সারারাত রেখে টাকা নিয়ে রোববার সকালে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
আটক মনোয়ার হোসেন উপজেলার পুনট ইউনিয়নের রাধানগর গ্রামের মৃত কাছেম উদ্দিনের ছেলে।
অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১১ মার্চ বিকেলে কালাই পৌরশহরের থুপসাড়া মহল্লার আবু ইউসুফ নিজ বাড়ির রাস্তার পাশে তার ব্যবহৃত পালসার মোটরসাইকেলটি রেখে ভিতরে প্রবেশ করেন। কিছুক্ষণ পর বাড়ির বারান্দা থেকে মোটরসাইকেলের পাশে দুইজন অপরিচিত ব্যক্তিকে দেখতে পান তিনি। সন্দেহ হলে বাড়ির পিছন গেট হয়ে বাইরে আসামাত্র মোটরসাইকেলটি ওই দুই ব্যক্তি নিয়ে যায়। তখন মোটরসাইকেলের মালিকও তাদের পিছনে ধাওয়া করে ধরার চেষ্টা করেন, কিন্তু ধরতে পারেননি। এরপর তিনি পার্শ্ববর্তী একটি অফিসের সিসিটিভি থেকে ভিডিও সংগ্রহ করেন এবং তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে ওইদিনের ভিডিও ও চোরের ছবি পোস্ট করেন। সেই সঙ্গে কালাই থানায় সরবরাহ করেন।
ফেসবুক পোস্টের জেরে গত ২৯ মার্চ স্থানীয় লোকজন ওই ছবি শনাক্ত করেন এবং মোটরসাইকেল মালিককে জানান। এরপর ইউসুফ শনিবার সন্ধ্যায় থানায় গিয়ে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদ হোসেন এবং ইন্সপেক্টর তদন্ত এসএম কামাল হোসাইনকে চোর শনাক্তের বিষয়ে জানান। রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে চোরকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
চুরি যাওয়া মোটরসাইকেল মালিক আবু ইউসুফ বলেন, চোরকে শনাক্তের পর আটক করতে আমি নিজেই পুলিশকে সহযোগিতা করেছি। রাতে যখন চোর মনোয়ারকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়, তখন আমি থানায় গিয়েছি। তখন ওসি আমাকে বলেন, ‘রাত অনেক হয়েছে, রোববার সকালে আসো, মামলা নিয়ে চোরকে জেল-হাজতে পাঠানো হবে।’ কিন্তু সকালে থানায় গিয়ে শুনি চোরকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। একজন অভিযুক্ত ব্যক্তিকে পুলিশ কেন ছেড়ে দিল? তাকে থানায় এনে যদি ছেড়ে দেওয়া হবে, তাহলে নিয়ে আসা হলো কেন? এ নিয়ে আমি হতাশ।
আবু ইউসুফের বাবা আব্দুল খালেক বলেন, এত প্রমাণ দেওয়ার পরও ওসি কীভাবে একজন অভিযুক্ত ব্যক্তিকে থানায় এনে ছেড়ে দেয়। আবার বলেছেন, ‘ছেড়ে দিয়েছি তো কী হয়েছে, তদন্ত করছি, ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য মিনহাজুল ইসলাম চৌধুরি টোপন বলেন, সিসিটিভি ভিডিওতে যে ছবি দেখা যাচ্ছে, সেই ব্যক্তি মনোয়ার, এতে কোনো ভুল নেই। ছবি দেখেই গত রাতে পুলিশ তাকে বাড়ি থেকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। সকালে শুনলাম রাতেই তাকে ছেড়ে দিয়েছে।
কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদ হোসেন জানান, অভিযোগকারীর দেওয়া ছবি সরবরাহের ভিত্তিতে একজন ব্যক্তিকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছিল, পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। মোটরসাইকেল চুরির ঘটনায় তদন্ত চলমান।
মুঠোফোনে জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার মুহম্মদ আবদুল ওয়াহাব জানান, এ ঘটনায় তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সব হারানো শিশুদের রঙিন ঈদ
ফাতেমা লাল টুকটুকে জামা পরেছে। দুই হাতে মেহেদি দেওয়া। একটু পরপর দেখছে মেহেদি নষ্ট হয়ে গেল কি না। অন্য শিশুরা কাছে গেলেই সে সতর্ক হয়ে যাচ্ছিল। একসময় দেখা গেল, মেহেদি রাঙা হাতেই হাতের আঙুল মুখে দিয়ে আপন মনে চুষছে।
শুধু ফাতেমা নয়, বিভিন্ন বয়সী ২১টি শিশুর বেশির ভাগেরই হাতে মেহেদি দেওয়া। তাদের মধ্যে কয়েক মাস বয়সী শিশুও রয়েছে।
আজ রোববার রাজধানীর আজিমপুরে ছোটমণি নিবাসে ঢুকতেই কে কার আগে হাতের মেহেদির নকশা দেখাবে, তাই নিয়ে লেগে গেল ঝগড়াঝাঁটি। ফলে কারও হাতের মেহেদিই আর ভালো করে দেখা গেল না।
ছবি তুলতে গেলেও একই সমস্যা। একজন হাত দেখায় তো আরেকজন হাত গুটিয়ে রাখে। আরেকজন গিয়ে একজনের নাকে মেহেদি লাগিয়ে দেয়। নাক লাল হয়ে গেল। আরেকজনের হাতের কনুইতে মেহেদি লাগিয়ে দিল আরেকজন।
এভাবেই হাতে মেহেদি দেওয়ার মধ্য দিয়ে ছোটমণি নিবাসের শিশুদের ঈদ উদ্যাপন শুরু হয়েছে। এরা হলো মা-বাবাহীন পরিত্যক্ত শিশু, দাবিদারহীন শিশু, উদ্ধার করা বিপন্ন শিশু ও আইনের সংস্পর্শে আসা শিশু।
জন্মের পর এক দিন বয়স থেকে ৬ বছরের বেশি সময় পর্যন্ত এই শিশুরা ছোটমণি নিবাসে বড় হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। থানা ও আদালতের মাধ্যমে শিশুদের এখানে পাঠানো হয়।
পরম মমতায় ছোট্ট শিশুকে কোলে নিয়েছেন ছোটমণি নিবাসের উপ-তত্ত্বাবধায়ক জুবলী বেগম। যিনি শিশুদের কাছে খালামণি নামে পরিচিত। ঢাকা, ৩০ মার্চ