পশ্চিম আকাশে দেখা গেছে এক ফালি বাঁকা চাঁদ। এর মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে সিয়াম সাধনার মাস পবিত্র রমজান। চলে এসেছে খুশির ঈদ। গলিতে গলিতে বাজছে সেই চিরচেনা গান, ‘ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে…’। পাড়ায় পাড়ায় ফুটছে পটকা। বের হয়েছে আনন্দ মিছিল। ছেলে-বুড়ো সবার মধ্যে খুশির ঝিলিক। ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে পড়েছে ঘরে ঘরে। মসজিদের মাইকে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে ঈদ জামাতের সময়।

ঈদের আগের দিন চাঁদ দেখা যায় বলে তা ‘চাঁদরাত’ হিসেবে পরিচিত। চট্টগ্রামের মানুষের কাছে যার অপর নাম ‘চান রাইত’। সন্ধ্যায় চাঁদ দেখার পর ঘরে-বাইরে ব্যস্ততা শুরু হয়েছে। ঘরে ঘরে চলছে ঈদের দিন অতিথি আপ্যায়নের প্রস্তুতি। আর বাইরে শেষ মুহূর্তের প্রয়োজনীয় কেনাকাটা নিয়ে তুমুল ব্যস্ততা।

স্থানীয় প্রবীণ বাসিন্দাদের মতে, চাটগাঁ শহর (চট্টগ্রাম) একসময় ব্যবসার দিক থেকে খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। নদী ও সড়কপথে সারা দেশ থেকে মানুষ এখানে আসতেন ঈদের বাজার করতে। তাঁরা বাজার করে ঈদের এক-দুই দিন আগে চলে যেতেন। তখন শহর ফাঁকা ও নির্জন হয়ে পড়ত। সেই সুযোগে ঈদের কেনাকাটা করতেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কেনাকাটার সেই ধারা এখনো রয়ে গেছে।

‘চান রাইত’ উপলক্ষে রোববার রাতে চট্টগ্রামের অভিজাত বিপণিবিতান থেকে শুরু করে ফুটপাতের দোকান—সব জায়গা ক্রেতাদের ভিড়ে ঠাসা। কাপড়ের দোকান, জুতার দোকান থেকে শুরু করে প্রায় সব ধরনের দোকানে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। একেবারে শেষ মুহূর্তে ক্রেতাদের সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে বিক্রেতাদের।

চট্টগ্রাম নগরে ঈদের আগের রাতে সবচেয়ে বেশি মানুষের জমায়েত হয় নিউমার্কেট এলাকায়। এখানে রয়েছে নিউমার্কেট, পৌর জহুর হকার্স মার্কেট, তামাকুমুন্ডি লেন, রিয়াজউদ্দিন বাজার।

আবার সড়কের দুই পাশে রয়েছে হাজারো ভাসমান দোকান। এই এলাকায় পাওয়া যায় না এমন কোনো দোকান নেই। তাই শেষের দিকে প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে এখানে চলে আসেন লোকজন। রাতভর ঘুরে ঘুরে কিনে নেন পছন্দের জিনিসপত্র।

রোববার রাত আটটায় নিউমার্কেট গিয়ে দেখা যায়, দোকানের ভেতর-বাইরে মানুষে ঠাসা। সন্ধ্যায় ইফতার শেষে বিশ্রাম নিয়ে কেনাকাটা করতে এসেছেন চট্টগ্রামবাসী। কিছু কিছু দোকানে ক্রেতাদের চাপে বাইরে থেকে দোকানের ভেতরে প্রবেশ করার সুযোগ ছিল না। সবচেয়ে বেশি ভিড় দেখা গেছে পাঞ্জাবির দোকানগুলোতে।

পছন্দের পোশাক কিনতে ফুটপাতের দোকানে ভিড়। হকার্স মার্কেট, চট্টগ্রাম, ৩০ মার্চ.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

শান্তিগঞ্জে ধান শুকানোর জায়গা নিয়ে দু’পক্ষে সংঘর্ষ, আহত ২০

সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জে ধান শুকানোর জায়গা নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের  অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন৷ আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টারি দিকে উপজেলার শিমুলবাঁক ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

সংঘর্ষে গুরুতর আহতরা হলেন- রঘুনাথপুর গ্রামের মহিবুর রহমান মানিক (৩৫), কামাল হোসেন (২৮), শাহীন (৩৮), জোনাক আহমদ (২৮), তারেক আহমদ (৩২), বদরুল আলম (৪২), শাহ আলম (৪৫), দুলাল (৪৫), মকসুদ আলী (৫০), আইবুর রহমান (৪০) ও শফিক আলী (৫০)৷ তাৎক্ষণিকভাবে অন্য আহতদের নাম জানা যায়নি।

পুলিশ জানায়, রঘুনাথপুর গ্রামে পূর্ব বিরোধের জেরে ধান শুকানোর জায়গা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে দুইপক্ষের সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হন। আহতদের সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে৷ 

শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আকরাম আলী বললেন, ধান শুকানোর জায়গা দখল নিয়ে দুইপক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। ফের সংঘর্ষের আশঙ্কায় গ্রামে পুলিশ মোতায়েন করা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ