ফাতেমা লাল টুকটুকে জামা পরেছে। দুই হাতে মেহেদি দেওয়া। একটু পরপর দেখছে মেহেদি নষ্ট হয়ে গেল কি না। অন্য শিশুরা কাছে গেলেই সে সতর্ক হয়ে যাচ্ছিল। একসময় দেখা গেল, মেহেদি রাঙা হাতেই হাতের আঙুল মুখে দিয়ে আপন মনে চুষছে।
শুধু ফাতেমা নয়, বিভিন্ন বয়সী ২১টি শিশুর বেশির ভাগেরই হাতে মেহেদি দেওয়া। তাদের মধ্যে কয়েক মাস বয়সী শিশুও রয়েছে।
আজ রোববার রাজধানীর আজিমপুরে ছোটমণি নিবাসে ঢুকতেই কে কার আগে হাতের মেহেদির নকশা দেখাবে, তাই নিয়ে লেগে গেল ঝগড়াঝাঁটি। ফলে কারও হাতের মেহেদিই আর ভালো করে দেখা গেল না।
ছবি তুলতে গেলেও একই সমস্যা। একজন হাত দেখায় তো আরেকজন হাত গুটিয়ে রাখে। আরেকজন গিয়ে একজনের নাকে মেহেদি লাগিয়ে দেয়। নাক লাল হয়ে গেল। আরেকজনের হাতের কনুইতে মেহেদি লাগিয়ে দিল আরেকজন।
এভাবেই হাতে মেহেদি দেওয়ার মধ্য দিয়ে ছোটমণি নিবাসের শিশুদের ঈদ উদ্যাপন শুরু হয়েছে। এরা হলো মা-বাবাহীন পরিত্যক্ত শিশু, দাবিদারহীন শিশু, উদ্ধার করা বিপন্ন শিশু ও আইনের সংস্পর্শে আসা শিশু।
জন্মের পর এক দিন বয়স থেকে ৬ বছরের বেশি সময় পর্যন্ত এই শিশুরা ছোটমণি নিবাসে বড় হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। থানা ও আদালতের মাধ্যমে শিশুদের এখানে পাঠানো হয়।
পরম মমতায় ছোট্ট শিশুকে কোলে নিয়েছেন ছোটমণি নিবাসের উপ-তত্ত্বাবধায়ক জুবলী বেগম। যিনি শিশুদের কাছে খালামণি নামে পরিচিত। ঢাকা, ৩০ মার্চ.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আর কজন
এছাড়াও পড়ুন:
ভারী যন্ত্রের অভাবে মিয়ানমারে খালি হাতে উদ্ধার অভিযান
মিয়ানমারে শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর দুই দিন পেরিয়ে গেছে। ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে জীবিত ব্যক্তিদের বের করে আনতে দিনরাত এক করে কাজ করছেন উদ্ধারকর্মীরা।
কিন্তু বেশির ভাগ উদ্ধারকর্মীকে খালি হাতে ধ্বংসস্তূপ সরাতে হচ্ছে। ভারী যন্ত্রপাতির অভাবে উদ্ধারকাজ ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এত বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করার মতো সক্ষমতা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ মিয়ানমারের নেই।
গত শুক্রবার ৭ দশমিক ৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে মিয়ানমারে বহু ভবন ও স্থাপনা ধসে পড়েছে। ভূমিকম্পের কেন্দ্র ছিল মিয়ানমারের সাগাইং অঞ্চল, দেশটির এক সময়ের রাজধানী মান্দালয়ের কাছে। প্রাচীন এই শহরে প্রায় ১৫ লাখ মানুষ বসবাস করেন। সেখানে অনেক ঐতিহাসিক মন্দির ও প্রাসাদ রয়েছে।
মান্দালয়ে ভূমিকম্পের পর বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের একজন ২৫ বছরের হতেত মিন। তিনি রয়টার্সকে বলেন, ‘সেখানে অনেক ধ্বংসস্তূপ পড়ে আছে। কোনো উদ্ধারকারী দল আমাদের এখানে আসেনি।’
হতেত আরও বলেন, তাঁর স্বজনদের কয়েকজন একটি ধসে পড়া ভবনের নিচে চাপা পড়ে আছেন। তিনি খালি হাতে ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে তাঁদের বের করে আনার চেষ্টা করছেন।
মান্দালয়ের শহরতলি আমারাপুরা। সেখান থেকে একজন উদ্ধারকর্মী জানিয়েছেন, তিনি একটি ভবনের ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে নিচে চাপা পড়া ১৪০ বৌদ্ধভিক্ষুর কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন।
ওই উদ্ধারকর্মী বলেন, ‘আমরা তাদের সাহায্য করতে পারছি না। কারণ, ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে নেওয়ার মতো লোকবল ও যন্ত্রপাতি আমাদের নেই। কিন্তু আমরা আশা ছাড়ছি না। আমরা কাজ বন্ধ করব না।’
চীন, ভারত, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ডসহ মিয়ানমারের প্রতিবেশী বিভিন্ন দেশ ভূমিকম্প দুর্গতদের উদ্ধারের সেখানে উদ্ধারকারী দল পাঠিয়েছে।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী বলেছে, ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৬০০–এর বেশি মানুষ মারা গেছেন। আহত হয়েছেন প্রায় ৩ হাজার ৪০০ জন। নিখোঁজ প্রায় ১৪০ জন। হতাহতের এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুনভূমিকম্প বিধ্বস্ত মিয়ানমারে ত্রাণ ও উদ্ধারকারী দল নিয়ে ছুটছে প্রতিবেশী দেশগুলো৪ ঘণ্টা আগে