‘জংলি’ নিয়ে স্টার সিনেপ্লেক্সের উদাসীনতা, প্রতিবাদমুখর কলাকুশলীরা
Published: 30th, March 2025 GMT
ঈদের সিনেমা ‘জংলি’র বেলায় স্টার সিনেপ্লেক্সের উদাসীনতার অভিযোগ এনেছেন সিনেমাটির প্রযোজক ও কলাকুশলীরা। তাদের দাবি, ঈদে মুক্তির অপেক্ষায় থাকা ছয়টি সিনেমার মধ্যে প্রচারণা ও আলোচনায় সর্বাধিক এগিয়ে থাকলেও স্টার সিনেপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ শো বণ্টনের ক্ষেত্রে জংলির ক্ষেত্রে উদাসীনতা দেখিয়েছেন। তাই বরবাদের পর দাগির সঙ্গে সমান সমান শো পাওয়ার কথা থাকলেও তারা অপেক্ষাকৃত কম আলোচনায় থাকা সিনেমা চক্করের চেয়েও কম শো দিয়েছে। এতে করে তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন।
সিনেমাটির চিত্রনাট্যকার মেহেদি হাসান মুন এক স্ট্যাটাসে জানিয়েছেন, 'একটা নতুন প্রযোজক টিমকে ক্ষমতা দেখিয়ে পিষে ফেলতে চাইছেন। একটা সিনেমা দর্শক দেখার আগেই কোন সুযোগ না দেয়ার জন্য। ধন্যবাদ মাননীয় উপদেষ্টা। আমরা শুধু মার্কেটিংই করেছি, হাইপই ক্রিয়েট করেছি, ক্ষমতা দেখাতে পারিনাই। কারণ, এই ক্ষমতা আমরাই আপনাদের হাতে তুলে দিয়েছি। একদম উচিত শিক্ষা দিয়ে দিয়েছেন আমাদের। ধন্যবাদ।'
সিনেমাটির সহ-প্রযোজক মুক্তার ইবনে রফিক ফেসবুকে দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়ে জানিয়েছেন, 'প্রচারণায় এই ঈদের বাকি সব সিনেমার চাইতে এগিয়ে ছিল জংলি। এটা আমার কথা না, এটা যারা সিনেমা নিয়ে খোঁজ-খবর রাখেন, তাদের প্রত্যেকের কথা। যদি ডাটাসহ প্রমাণ দেখাতে হয়, দেখাতে পারব। একেকটা জমজমাট ম্যাটেরিয়াল, একেকটা প্রমোশনাল কন্টেন্টের কারণে জংলিকে বলা হচ্ছিল এবারের ঈদের ডার্কহর্স। এবার সবার আগে সিনেপ্লেক্সের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল জংলি। সেখানে খোদ সিনেপ্লেক্সেই এমন পলিটিক্সের শিকার হতে হলো জংলিকে? কয়েকদিন আগে একটা পডকাস্টে বলেছিলাম, এদেশের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে মাফিয়াদের দাপটে টেকা ভীষণ কঠিন। আমাদের মতো তরুণরা সব ধরণের সিন্ডিকেটের ঊর্ধ্বে গিয়ে নিজেরা একটা সিনেমা বানিয়ে ঈদে মুক্তি দিতে চাইছে, এটা সম্ভবত একটা ক্রিমিনাল অ্যাক্ট হয়ে গেছে। নাহলে কেন এই ইনজাস্টিস? কেন এই পলিটিক্স?'
তিনি অভিযোগ আনেন, 'জংলি শো পেয়েছে চক্করের চেয়েও কম! বরবাদ-দাগি পেয়েছে ৩৪টি শো, চক্কর ২১টি, জংলি ১৬টি! আই মিন হোয়াট? এটাও সম্ভব? উইথ অল ডিউ রেসপেক্ট, চক্করের হাইপ কি জংলির চেয়েও বেশি? এটা কেমন ভাইব্রাদার প্যাকেজ? অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, জংলির মতো সিনেমা সীমান্ত স্কয়ার ও সনির মতো জায়গায় কোনো শো পায়নি! কীভাবে সম্ভব এটা! যেখানে সীমান্ত স্কয়ারের বাইরে সিনেপ্লেক্স থেকেই জংলির অনেক বড় বিলবোর্ড লাগানো হয়েছে। তার মানে শো তো বরাদ্দ ছিলই। এই শোগুলো কে নিয়ে গেল? যে কয়টা শো অনুগ্রহ করে দেওয়া হয়েছে, সেগুলোর টাইমিংগুলোতেও তো মশকরা। সকাল ১০টা ৫০ এর শো দুইটা, ১১টার শো একটা- ইউজুয়ালি যে শোগুলোতে অকুপেন্সি কম থাকে। ১৬টা শোয়ের ভেতর ৪টা শো-ই দেওয়া হয়েছে ভিআইপি/প্রিমিয়াম হলে, যেখানে টিকিটের দাম বাকি হলগুলোর তুলনায় বেশি। এমন ইনজাস্টিস না করে এর চেয়ে আমাদের সিনেমা সিনেপ্লেক্সে রিলিজই দিতেন না৷'
তাদের প্রতিবাদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে নির্মাতা জাহিদ প্রিতমও ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, 'হল কম পাইসে প্রবলেম নাই। দর্শকের চাহিদাই ইনশাআল্লাহ হল বাড়াবে জংলির! কালকে জংলি দেখব সবার আগে.
জংলি সিনেমার প্রযোজক টাইগার মিডিয়ার কর্ণধার জাহিদ হাসান অভি বলেন, 'এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। কেনো এমনটি ঘটল তা আমার ধারণার বাইরে।'
জংলি সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন এম রাহিম। এতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন সিয়াম আহমেদ। তার সঙ্গে আছেন বুবলী ও দীঘি। সিনেমায় চারটি গান করেছেন প্রিন্স মাহমুদ। সিনেমাটি ঈদের সিনেমা হিসেবে বেশ আলোচনায় ছিল। দুর্দান্ত প্রমোশনের পাশাপাশি পোস্টার-টিজার ও ট্রেলার প্রকাশ করে দারুণ প্রশংসিত হয়ে আসছিল জংলি টিম।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স য় ম আহম দ ব বল
এছাড়াও পড়ুন:
ইবলিস জিন না ফেরেশতা
মানুষ সৃষ্টির আগে আল্লাহর সৃষ্টিতে ছিল ফেরেশতা ও জিন। ইবলিস আগুনের তৈরি। থাকত ফেরেশতাদের সঙ্গে। একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর ইবাদত-বন্দেগি করত। ফলে ইবলিস জিন নাকি ফেরেশতা—এ নিয়ে অনেকেই দ্বিধায় পড়ে যান। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আমি যখন ফেরেশতাদের বললাম, আদমকে সিজদা করো; তখন ইবলিস ছাড়া সবাই সেজদা করল। সে অমান্য করল ও অহংকার করল । তাই সে অবিশ্বাসীদের অন্তর্ভুক্ত হলো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ৩৪)
ইবলিসকে সেজদা করতে বলার কারণ
ইবলিসকে কেন ফেরেশতাদের সঙ্গে সেজদা করতে আদেশ করা হলো, সে কি ফেরেশতা? আল্লাহতায়ালা আদমকে সৃষ্টির আগেই ফেরেশতাদের আদেশ দিয়ে রেখেছিলেন।
আল্লাহ বলেন, ‘সুতরাং আমি যখন আদমের সৃষ্টি সম্পন্ন করব এবং তার মধ্যে রুহ ফুঁকে দেব, তখন তোমরা তার সামনে সেজদায় পড়ে যেও’ (সুরা সাদ, আয়াত: ৭২)। তখন ইবলিস সেই মজলিশেই উপস্থিত ছিল। তাই ইবলিস ফেরেশতা না হলেও সে ওই আদেশের অন্তর্ভুক্ত হবে।
আরও পড়ুনএকদল জিন পবিত্র কোরআন শুনে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন২০ নভেম্বর ২০২৩ইবলিস জিন হওয়ার প্রমাণ
ইমাম রাজি (রহ.) বলেন, ইবলিস জিনদের একজন, তার মৌলিক উপাদান আগুন। এ জন্য তিনি তিনটি দলিল উপস্থাপন করেছেন।
এক. ইবলিসের সৃষ্টি আগুন থেকে। কোরআনে এসেছে, ইবলিস বলেছে, ‘তুমি আমাকে আগুন দিয়ে সৃষ্টি করেছ আর তাকে (আদমকে) সৃষ্টি করেছ কাদা মাটি দিয়ে।’ (সুরা আরাফ, আয়াত: ১২)
দুই. ইবলিসের ছেলেমেয়ে আছে, সে বংশবিস্তার করে। ফেরেশতারা এর থেকে মুক্ত। তাদের স্ত্রী-সন্তান নেই। তাদের মধ্যে নেই নারী-পুরুষের বিভাজনও। অথচ আল্লাহ ইবলিস সম্পর্কে বলেছেন, ‘তবে কি তোমরা আমার পরিবর্তে ওকে ও ওর বংশধরকে অভিভাবকরূপে গ্রহণ করছ?’ (সুরা কাহফ, আয়াত: ৫০)
তিন. ফেরেশতারা আল্লাহর সব আদেশ মেনে চলে। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘আল্লাহ তাদের (ফেরেশতাদের) যা আদেশ করেন তা অমান্য করে না এবং যা আদেশ করা হয় তা-ই করে।’ (সুরা তাহরিম, আয়াত: ৬) আল্লাহ কোরআনে অধিকাংশ স্থানে ইবলিসকে ‘শয়তান’ বলে সম্বোধন করেছেন। শয়তান শব্দটি দিয়ে কট্টরভাবে অবাধ্য হওয়াকে বোঝায়। (আত-তাফসিরুল কাবির, ফখরুদ্দিন রাজি, ২/৪২৯-৩০)
আরও পড়ুনসুরা আর রাহমানে জিন ও মানবজাতি উভয়কে উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে১০ নভেম্বর ২০২৩তা ছাড়া ‘আল্লাহতায়ালা জিনকে সৃষ্টি করেছেন ধোঁয়াহীন আগুন থেকে’ (সুরা রহমান, আয়াত: ১৫), আর ফেরেশতাদের সৃষ্টি করা হয়েছে নুর বা আলো থেকে (মুসলিম, হাদিস: ২,৯৯৬)।
ইবলিস কোন শ্রেণির জিন
ইবনে আব্দিল বার (রহ.) বলেছেন, জিনদের বিভিন্ন শ্রেণি রয়েছে, ১. সাধারণ জিনদের বলা হয় জিন্নি। ২. যেসব জিন মানুষের সঙ্গে বাসাবাড়িতে অবস্থান করে, তাদের বলা হয় আমির। ৩. যেসব জিন বাচ্চাদের সামনে আবির্ভূত হয়, তারা আরওয়াহ। এটি রুহ শব্দের বহু বচন। ৪. যেসব জিন খারাপ হয়ে যায় এবং মানুষের ক্ষতি করতে চায়, তারা শয়তান। ৫. যেসব শয়তানের দুষ্কৃতি খুব বেড়ে যায়, তাদের বলে মারিদ। ৬. যারা শক্তিশালী ও দুশ্চরিত্র হয়ে ওঠে, তাদের বলা হয় ইফরিত। (আত-তামহিদ, ইবনে আবদিল বার, ১১/১১৭-১১৮)
আরও পড়ুনইবলিসের কাহিনি১২ মে ২০২৪