মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেনে বৃদ্ধ যাত্রীকে মারধর, বিক্ষোভের মুখে কর্মচারীকে বহিষ্কার
Published: 30th, March 2025 GMT
চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেনে বৃদ্ধ এক যাত্রীকে মারধরের জেরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা রেলস্টেশন অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয় লোকজন। রোববার বিকেল চারটায় স্থানীয় লোকজন কসবা রেলস্টেশনে জড়ো হলে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও সেনাসদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। পরে অভিযুক্ত রেলওয়ের কর্মচারীকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।
ভুক্তভোগী যাত্রীর নাম ফুল মিয়া। তাঁর বাড়ি কসবার সায়েদাবাদ এলাকায়। তিনি চট্টগ্রাম থেকে মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেনে কসবায় আসছিলেন। পথে ট্রেনে তাঁকে মারধর করেন ট্রেনের পাওয়ার কার অপারেটর কাউসার মিয়া। পরে তাঁকে বরখাস্ত করা হয়।
স্থানীয় লোকজন, উপজেলা প্রশাসন ও কসবা রেলস্টেশন সূত্রে জানা গেছে, ফুল মিয়া দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চট্টগ্রাম রেলস্টেশন থেকে মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেনে কসবায় আসছিলেন। তিনি কসবা পর্যন্ত আসনবিহীন টিকিট কেটে ট্রেনের পাওয়ার কার বগিতে ওঠেন। বেলা আড়াইটার দিকে ট্রেন চট্টগ্রাম-ঢাকা রেলপথের ফেনী রেলস্টেশনে পৌঁছালে পাওয়ার কার অপারেটর কাউসার মিয়া তাঁর (ফুল মিয়া) কাছে এসে টিকিট আছে কি না জানতে চান। আসনবিহীন টিকিট থাকার কথা বললে কাউসার তাঁর কাছে ২০০ টাকা চান। টিকিট আছে টাকা কেন দেবেন বললে খেপে গিয়ে তাঁকে মারধর শুরু করেন তিনি। এরপর বৃদ্ধ ফুল মিয়ার কাছে ঘটনা শুনে মুঠোফোনে ভিডিও করে ফেসবুকে পোস্ট করেন ট্রেনে থাকা কসবার আরেক যাত্রী। স্থানীয় লোকজন ট্রেনের উপকূল ট্রেনের একটি ফেসবুক পেজেও সেই ভিডিও পোস্ট করেন। মুহূর্তের মধ্যেই ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ে।
বেলা সাড়ে তিনটার পর থেকে কসবার স্থানীয় লোকজন, শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক নেতা-কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ কসবা রেলস্টেশনে জড়ো হন। বিকেল চারটার দিকে ট্রেন অবরোধসহ অভিযুক্ত ট্রেনের কর্মচারীর শাস্তি দাবিতে তাঁরা ট্রেনের জন্য অপেক্ষা শুরু করেন। তখন ট্রেনের চালক কসবার আগের স্টেশন মন্দবাগে ট্রেন দাঁড় করিয়ে রাখেন। ঘণ্টাখানেক অপেক্ষার পর বৃদ্ধ যাত্রীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কাউসারকে আটক করেন ট্রেনের নিরাপত্তাকর্মীরা।
খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.
একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ট্রেনের ভেতরে পুলিশের দুই সদস্য কাউসারকে আটক করেছেন। তখন কাউসারের হাতে হাতকড়া পরানো। স্থানীয় লোকজন তাঁকে ফুল মিয়ার কাছে ক্ষমা চাইতে বললে তিনি ফুল মিয়ার কাছে ক্ষমা চান।
ইউএনও মো. ছামিউল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ট্রেনের এক কর্মচারী কসবার বৃদ্ধ এক যাত্রীর সঙ্গে খারাপ আচরণসহ মারধর করেন। এ–সংক্রান্ত একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় জনতা, শিক্ষার্থী ও রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরা একত্র হয়ে কসবা রেলস্টেশনে জড়ো হন। এটিকে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা উল্লেখ করে স্থানীয় লোকজনকে শান্ত করা হয়। পাশাপাশি ট্রেনের ওই কর্মচারীকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
কসবা রেলস্টেশনের মাস্টার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ওই কর্মচারীকে চাকরি থেকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। স্থানীয় জনতা যখন স্টেশনে জড়ো হন, ট্রেন তখন কসবার আগের রেলস্টেশন মন্দবাগে অবস্থান করছিল।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স থ ন য় ল কজন ন কসব ম রধর কসব র
এছাড়াও পড়ুন:
বান্দরবান থেকে বিশ্বমঞ্চে সম্রাট বড়ুয়া
বিশ্বখ্যাত টেক জায়ান্ট গুগল আয়োজিত অ্যানুয়াল প্রোডাক্ট সামিট তথা গুগলের বিল্ডিং ফর এভরিওয়ান সামিট, ২০২৫-এ আমন্ত্রণ পেয়েছেন বাংলাদেশি তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ সম্রাট বড়ুয়া। সারাবিশ্ব থেকে প্রায় ১০ হাজার তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ এ সামিটে অংশ নিতে আবেদন করেছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র ৫০ জনকে নির্বাচন করেছেন গুগলের কর্মকর্তারা। তাদের মধ্যে অন্যতম পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবানের তরুণ সম্রাট বড়ুয়া। আগামী ১০ থেকে ১১ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের সিলিকন ভ্যালিতে গুগলের সদর দপ্তরে হবে গুগলের এ সামিট। এতে সম্রাটকে ফুল স্পন্সরশিপসহ আমন্ত্রণ জানিয়েছে গুগল।
গুগল আয়োজিত সিলিকন ভ্যালির এ ফ্ল্যাগশিপ সামিটে থাকবে প্রযুক্তিবিষয়ক মাস্টারক্লাস, ওয়ার্কশপ, এনগেজিং সেশনে অংশ নেওয়াসহ বিশ্বের বাঘা বাঘা টেক জায়ান্টদের সঙ্গে নেটওয়ার্কিংয়ের সুযোগ। বিশ্বের শীর্ষ প্রযুক্তিবিদ, গুগলের কর্মকর্তা, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার এবং সিলিকন ভ্যালির আইটি লিডাররা ভবিষ্যৎ প্রযুক্তির উদ্ভাবন নিয়ে এই ৫০ জনের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। এছাড়াও গুগলের আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স জায়ান্ট জেমিনি, পিক্সেলসহ নতুন প্রোডাক্ট এবং সার্ভিসগুলোর ডেমো প্রদর্শন ও এগুলোর উন্নয়নবিষয়ক সেশনেও অংশ নেবেন তারা।
সম্রাট বড়ুয়া বর্তমানে সফটওয়্যার ডেভেলপার হিসেবে কাজ করছেন আমেরিকার বিশ্বখ্যাত সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান ডেলয়েটে, যেখানে বিশ্বমানের প্রযুক্তির সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা তাকে গুগলের এ সামিটের জন্য যোগ্য প্রার্থী করে তুলেছে।
এটি শুধু সম্রাটের ব্যক্তিগত সাফল্য নয়, বরং বাংলাদেশের প্রযুক্তিগত দক্ষতা ও সম্ভাবনার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি।
গ্রামীণফোন-প্রথম আলো আয়োজিত ‘আই জিনিয়াস’ প্রতিযোগিতার বিজয়ী সম্রাট বড়ুয়া জাতীয় পর্যায়ের সফল বিতার্কিক। তিনি এটিএন বাংলার নাট্যযুদ্ধ প্রতিযোগিতায় প্রশংসিত অভিনেতা ছিলেন।
সম্রাট বড়ুয়া বলেছেন, “এই অর্জন শুধু আমার জন্য নয়, বরং বাংলাদেশের জেন-জি এবং মিলেনিয়ালদের জন্যও ইন্সপায়ারিং ঘটনা। কঠোর পরিশ্রম, ধৈর্য এবং সৃজনশীলতা থাকলে যে গুগলের মতো টেক জায়ান্টের মঞ্চে যাওয়া যায়, তা আমার সঙ্গে না ঘটলে আমি বিশ্বাস করতাম না।”
বাংলাদেশ যখন প্রযুক্তি উন্নয়ন ও উদ্যোক্তা সৃষ্টির মাঠ তৈরিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তখন সম্রাট বড়ুয়ার এই সাফল্য দেশের শিক্ষার্থী এবং পেশাদারদের জন্য অনুপ্রেরণা। তার এই যাত্রা বৈশ্বিক প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান সুযোগগুলোর উজ্জ্বল উদাহরণ।
আগামী ৯ এপ্রিল সিলিকন ভ্যালির পথে রওনা দেবেন সম্রাট বড়ুয়া। এ গৌরব আমাদের, বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের।
ঢাকা/সনি/রফিক