ভারী যন্ত্রের অভাবে মিয়ানমারে খালি হাতে উদ্ধার অভিযান
Published: 30th, March 2025 GMT
মিয়ানমারে শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর দুই দিন পেরিয়ে গেছে। ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে জীবিত ব্যক্তিদের বের করে আনতে দিনরাত এক করে কাজ করছেন উদ্ধারকর্মীরা।
কিন্তু বেশির ভাগ উদ্ধারকর্মীকে খালি হাতে ধ্বংসস্তূপ সরাতে হচ্ছে। ভারী যন্ত্রপাতির অভাবে উদ্ধারকাজ ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এত বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করার মতো সক্ষমতা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ মিয়ানমারের নেই।
গত শুক্রবার ৭ দশমিক ৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে মিয়ানমারে বহু ভবন ও স্থাপনা ধসে পড়েছে। ভূমিকম্পের কেন্দ্র ছিল মিয়ানমারের সাগাইং অঞ্চল, দেশটির এক সময়ের রাজধানী মান্দালয়ের কাছে। প্রাচীন এই শহরে প্রায় ১৫ লাখ মানুষ বসবাস করেন। সেখানে অনেক ঐতিহাসিক মন্দির ও প্রাসাদ রয়েছে।
মান্দালয়ে ভূমিকম্পের পর বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের একজন ২৫ বছরের হতেত মিন। তিনি রয়টার্সকে বলেন, ‘সেখানে অনেক ধ্বংসস্তূপ পড়ে আছে। কোনো উদ্ধারকারী দল আমাদের এখানে আসেনি।’
হতেত আরও বলেন, তাঁর স্বজনদের কয়েকজন একটি ধসে পড়া ভবনের নিচে চাপা পড়ে আছেন। তিনি খালি হাতে ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে তাঁদের বের করে আনার চেষ্টা করছেন।
মান্দালয়ের শহরতলি আমারাপুরা। সেখান থেকে একজন উদ্ধারকর্মী জানিয়েছেন, তিনি একটি ভবনের ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে নিচে চাপা পড়া ১৪০ বৌদ্ধভিক্ষুর কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন।
ওই উদ্ধারকর্মী বলেন, ‘আমরা তাদের সাহায্য করতে পারছি না। কারণ, ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে নেওয়ার মতো লোকবল ও যন্ত্রপাতি আমাদের নেই। কিন্তু আমরা আশা ছাড়ছি না। আমরা কাজ বন্ধ করব না।’
চীন, ভারত, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ডসহ মিয়ানমারের প্রতিবেশী বিভিন্ন দেশ ভূমিকম্প দুর্গতদের উদ্ধারের সেখানে উদ্ধারকারী দল পাঠিয়েছে।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী বলেছে, ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৬০০–এর বেশি মানুষ মারা গেছেন। আহত হয়েছেন প্রায় ৩ হাজার ৪০০ জন। নিখোঁজ প্রায় ১৪০ জন। হতাহতের এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুনভূমিকম্প বিধ্বস্ত মিয়ানমারে ত্রাণ ও উদ্ধারকারী দল নিয়ে ছুটছে প্রতিবেশী দেশগুলো৪ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ভ ম কম প
এছাড়াও পড়ুন:
নোয়াখালীতে ১২০ মিলিমিটার বৃষ্টি
নোয়াখালীতে চব্বিশ ঘণ্টায় ১২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এতে জেলা শহরে জলাবদ্ধতার পাশাপাশি বিভিন্ন উপজেলায় ধানের ফসলী জমিতে পানি জমে গেছে।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) রাত থেকে আজ (রবিবার) সকাল পর্যন্ত একটানা ভারি বৃষ্টিপাত হয়। এতে বোরো ধানের ফসলী জমিতে পানি জমে গেছে। যার কারণে পাকা ধান কাটা, মাড়াই দেওয়া ও ঘরে তোলা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষক।
ভারি বর্ষণে জেলা শহর মাইজদীতে বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা সমস্যা। পৌরসভার ড্রেনগুলোর মুখ এবং খালের মুখে ময়লা আবর্জনা জমে পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।
জাহাঙ্গীর নামে একজন ব্যবসায়ী বলেন, “প্রতি বছরই বৃষ্টিতে শহরে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। বৃষ্টির মৌসুম শুরুর আগে কতৃপক্ষ যদি শহরের ড্রেন- নালা পরিষ্কার করে তাহলে জলাবদ্ধতা হয়না। কিন্তু আমরা পৌরসভা কর্তৃপক্ষের নিরবতাই লক্ষ্য করছি।”
জিহাদ নামে আরেকজন ব্যবসায়ী বলেন, “এখন থেকেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও দপ্তরগুলো যৌথ উদ্যোগ না নিলে গতবারের মত বন্যার কবলে পড়বে নোয়াখালী জেলা শহর। আমরা ব্যবসায়ীরা আবারো সংকটে পড়ে যাব।”
সিরাজ মিয়া নামে একজন কৃষক বলেন, “ধান কাটা প্রায় শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে। এমন সময় গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে ধান তোলা নিয়ে সংশয়ে আছি। জমিতে পানি জমে গেছে। শ্রমিকও পাচ্ছিনা। ফলে লোকসানে পড়তে হবে।”
মনসুর নামে আরেকজন বলেন, “কাটা শেষে ধান স্তুপ করে রেখেছিলাম। কিন্তু হঠাৎ বৃষ্টিতে সমস্যার মধ্যে পড়লাম। এখন কড়া রোদে শুকাতে হবে। যদি আবার বৃষ্টি হয় তাহলে ধান ঘরে তোলা নিয়ে বিপাকে পড়তে হবে।”
জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, আজ (রবিবার) সকাল ৯টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় নোয়াখালীতে ১২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
ঢাকা/সুজন/টিপু