ঢাকা থেকে ঈদ উদযাপনে ঘরমুখো মানুষের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগের মধ্যে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টার উদ্যোগ সে অর্থে কাজে আসছে না। ঈদযাত্রার শেষ সময়েও ইচ্ছামতো ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ আসছে ঢাকার বিভিন্ন বাস কাউন্টার থেকে।
রবিবার (৩০ মার্চ) রাজধানীর গুলিস্তানে ফুলবাড়িয়া বাস কাউন্টারে গিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে কথা বললে তাদের বেশিরভাগই বাড়তি ভাড়া আদায়ের শিকার হওয়ার তথ্য দেন।
রাইজিংবিডি ডটকমকে তারা বলেন, প্রশাসনের পক্ষে মোবাইল কোর্ট থাকলে সরকার নির্ধারিত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে, আর তারা চলে গেলেই দেখা যাচ্ছে ভিন্ন চিত্র। বাড়তি ভাড়া আদায় চলছেই।
আরো পড়ুন:
খোলা ট্রাক-পিকআপে ছুটছে ঘরমুখো মানুষ
পদ্মা সেতুতে সোয়া ৪ কোটি টাকা টোল আদায়, যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক
সৌদি আরবে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন হয়েছে রবিবার (৩০ মার্চ)। চাঁদ দেখা সাক্ষেপে বাংলাদেশে ৩১ মার্চ ঈদ হতে পারে। সেই হিসাব ধরে এখনো যারা ঢাকা ছাড়তে পারেনি নানা কারণে, রবিবার তারা বাড়ি ফিরছেন। এদিনও বাস কাউন্টারগুলোতে দেখা যায় ভিড়।
ঈদযাত্রায় বাড়তি ভাড়া আদায় করা বা যাত্রীদের বাধ্য করে তাদের কাছ টাকা নেওয়ার গল্প নতুন নয়। এবার কিছু পরিবর্তন দেখা গেলেও গড় চিত্র আগের মতোই। ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া দূরপাল্লার সব বাস কাউন্টারে সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করার অভিযোগ রয়েছে।
গুলিস্তানের ফুলবাড়িয়া বাস কাউন্টারে ঈদযাত্রার যাত্রীদের কাছ থেকে নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে ২০০ থেকে ৩০০টাকা বাড়তি আদায় করার খবর রয়েছে।
সেখানে কথা হয় আব্দুল মতিন মিয়া নামে একজন যাত্রীর সঙ্গে। তার গন্তব্য বরিশাল। রাইজিংবিডি ডটকমকে তিনি বলেন, আনন্দ পরিবহনের বাসের টিকিট কাটতে গেলে ৫০০ টাকার ভাড়া তার কাছে ৮০০ টাকা চাওয়া হয়।
তিনি বলেন, “ফুলবাড়িয়া থেকে বাসে করে বরিশালের ভাড়া ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। সেখানে ভাড়া নিচ্ছে ৮০০ টাকা। এটা তো এক প্রকার দিন-দুপুরে ডাকাতির মতো ঘটনা। যেখানে যে যেমন পারছে, সে সেভাবেই অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে। পরিবারের টানে আমাদের যাওয়া লাগবে। তাই বাধ্য হয়েই আমাদের এই বাড়তি ভাড়া দিতে হচ্ছে।”
আব্দুল মতিন মিয়ার বলছিলেন, ১৫ মিনিট আগেই ভাড়া নেওয়া হচ্ছিল নির্ধারত ৫০০ টাকা করে। কারণ, তখন মোবাইল কোর্ট (ভ্রাম্যমাণ আদালত) ছিল। তারা চলে যেতেই ভাড়া হয়ে গেল ৮০০ টাকা।
“আমার কাছেও ৮০০ টাকা চেয়েছে। মায়ের সাথে ঈদ করতে হবে, তাই অতিরিক্ত টাকা দিয়ে টিকিট কেটে বাড়ি যাচ্ছি,” বলেন তিনি।
ফুলবাড়িয়া বাস কাউন্টারে কথা হয় শুভ নামে আরেক যাত্রীর সঙ্গে। তিনি মাদারীপুর যাবেন। রাইজিংবিডি ডটকমকে তিনি বলেন, “স্বাভাবিক সময়ে গুলিস্তান থেকে মাদারীপুর বাসের ভাড়া ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা। কিন্তু ঈদ উপলক্ষে ভাড়া নিচ্ছে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা। আমাদের বাড়ি যাওয়া লাগবে। কী করবো ভাই? অতিরিক্ত ভাড়া না দিয়ে কোনো উপায় নেই।”
ফুলবাড়িয়া পুলিশ কন্ট্রোল রুম এলাকায় দায়িত্বরত ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উপ-পরিদর্শক মো.
ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. সাইফুল আলম বিপুল বলেন, “গুলিস্তান থেকে বরিশাল, মাদারীপুর, ফরিদপুর, খুলনাসহ বেশ কিছু রুটে প্রায় ৬০০ গাড়ি চলছে। ঈদের সময় গাড়িগুলো যাত্রী নিয়ে গিয়ে খালি আসে। এজন্য গত বছরের যে ভাড়া আমরা ঈদে নিয়েছিলাম। এ বছরও সেই ভাড়া আমরা নিতে বলেছি।
“যাত্রীদের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত টাকা কোনোভাবেই আদায় করা যাবে না। শ্রমিকদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া আদায়ের কিছু অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বাসের শ্রমিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/এএএম/রাসেল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক পর বহন ঈদ ৮০০ ট ক
এছাড়াও পড়ুন:
প্রশাসন চলে গেলেই বাড়তি ভাড়া
ঢাকা থেকে ঈদ উদযাপনে ঘরমুখো মানুষের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগের মধ্যে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টার উদ্যোগ সে অর্থে কাজে আসছে না। ঈদযাত্রার শেষ সময়েও ইচ্ছামতো ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ আসছে ঢাকার বিভিন্ন বাস কাউন্টার থেকে।
রবিবার (৩০ মার্চ) রাজধানীর গুলিস্তানে ফুলবাড়িয়া বাস কাউন্টারে গিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে কথা বললে তাদের বেশিরভাগই বাড়তি ভাড়া আদায়ের শিকার হওয়ার তথ্য দেন।
রাইজিংবিডি ডটকমকে তারা বলেন, প্রশাসনের পক্ষে মোবাইল কোর্ট থাকলে সরকার নির্ধারিত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে, আর তারা চলে গেলেই দেখা যাচ্ছে ভিন্ন চিত্র। বাড়তি ভাড়া আদায় চলছেই।
আরো পড়ুন:
খোলা ট্রাক-পিকআপে ছুটছে ঘরমুখো মানুষ
পদ্মা সেতুতে সোয়া ৪ কোটি টাকা টোল আদায়, যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক
সৌদি আরবে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন হয়েছে রবিবার (৩০ মার্চ)। চাঁদ দেখা সাক্ষেপে বাংলাদেশে ৩১ মার্চ ঈদ হতে পারে। সেই হিসাব ধরে এখনো যারা ঢাকা ছাড়তে পারেনি নানা কারণে, রবিবার তারা বাড়ি ফিরছেন। এদিনও বাস কাউন্টারগুলোতে দেখা যায় ভিড়।
ঈদযাত্রায় বাড়তি ভাড়া আদায় করা বা যাত্রীদের বাধ্য করে তাদের কাছ টাকা নেওয়ার গল্প নতুন নয়। এবার কিছু পরিবর্তন দেখা গেলেও গড় চিত্র আগের মতোই। ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া দূরপাল্লার সব বাস কাউন্টারে সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করার অভিযোগ রয়েছে।
গুলিস্তানের ফুলবাড়িয়া বাস কাউন্টারে ঈদযাত্রার যাত্রীদের কাছ থেকে নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে ২০০ থেকে ৩০০টাকা বাড়তি আদায় করার খবর রয়েছে।
সেখানে কথা হয় আব্দুল মতিন মিয়া নামে একজন যাত্রীর সঙ্গে। তার গন্তব্য বরিশাল। রাইজিংবিডি ডটকমকে তিনি বলেন, আনন্দ পরিবহনের বাসের টিকিট কাটতে গেলে ৫০০ টাকার ভাড়া তার কাছে ৮০০ টাকা চাওয়া হয়।
তিনি বলেন, “ফুলবাড়িয়া থেকে বাসে করে বরিশালের ভাড়া ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। সেখানে ভাড়া নিচ্ছে ৮০০ টাকা। এটা তো এক প্রকার দিন-দুপুরে ডাকাতির মতো ঘটনা। যেখানে যে যেমন পারছে, সে সেভাবেই অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে। পরিবারের টানে আমাদের যাওয়া লাগবে। তাই বাধ্য হয়েই আমাদের এই বাড়তি ভাড়া দিতে হচ্ছে।”
আব্দুল মতিন মিয়ার বলছিলেন, ১৫ মিনিট আগেই ভাড়া নেওয়া হচ্ছিল নির্ধারত ৫০০ টাকা করে। কারণ, তখন মোবাইল কোর্ট (ভ্রাম্যমাণ আদালত) ছিল। তারা চলে যেতেই ভাড়া হয়ে গেল ৮০০ টাকা।
“আমার কাছেও ৮০০ টাকা চেয়েছে। মায়ের সাথে ঈদ করতে হবে, তাই অতিরিক্ত টাকা দিয়ে টিকিট কেটে বাড়ি যাচ্ছি,” বলেন তিনি।
ফুলবাড়িয়া বাস কাউন্টারে কথা হয় শুভ নামে আরেক যাত্রীর সঙ্গে। তিনি মাদারীপুর যাবেন। রাইজিংবিডি ডটকমকে তিনি বলেন, “স্বাভাবিক সময়ে গুলিস্তান থেকে মাদারীপুর বাসের ভাড়া ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা। কিন্তু ঈদ উপলক্ষে ভাড়া নিচ্ছে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা। আমাদের বাড়ি যাওয়া লাগবে। কী করবো ভাই? অতিরিক্ত ভাড়া না দিয়ে কোনো উপায় নেই।”
ফুলবাড়িয়া পুলিশ কন্ট্রোল রুম এলাকায় দায়িত্বরত ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উপ-পরিদর্শক মো. বুলবুল বলেন, গত ঈদের সময় বাসের যে ভাড়া ছিল, এবার সেই তালিকা অনুযায়ী ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। পরিবহনগুলো যাতে বাড়তি ভাড়া আদায় করতে না পারে, সেজন্য মনিটরং করা হচ্ছে। কেউ অভিযোগ করলে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. সাইফুল আলম বিপুল বলেন, “গুলিস্তান থেকে বরিশাল, মাদারীপুর, ফরিদপুর, খুলনাসহ বেশ কিছু রুটে প্রায় ৬০০ গাড়ি চলছে। ঈদের সময় গাড়িগুলো যাত্রী নিয়ে গিয়ে খালি আসে। এজন্য গত বছরের যে ভাড়া আমরা ঈদে নিয়েছিলাম। এ বছরও সেই ভাড়া আমরা নিতে বলেছি।
“যাত্রীদের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত টাকা কোনোভাবেই আদায় করা যাবে না। শ্রমিকদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া আদায়ের কিছু অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বাসের শ্রমিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/এএএম/রাসেল