মোংলায় আরেকটি অর্থনৈতিক অঞ্চল করতে চায় চীন
Published: 30th, March 2025 GMT
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরে ৭৫০ মিলিয়নের মতো ঋণের কথা আমরা বলছি। এর মধ্যে অর্ধেক চট্টগ্রামের চীনা শিল্পাঞ্চল উন্নয়নের জন্য। অন্যদিকে মোংলা বন্দরে আমাদের একটি আধুনিকীকরণের প্রকল্প চলছে। যেহেতু চীন মোংলা বন্দর আধুনিকীকরণের কাজ করছে, এটার পাশপাশি ওখানেও একটা অর্থনৈতিক অঞ্চল করার চিন্তাভাবনা করছে। তারা আমাদের প্রস্তাব দিয়েছে, আমরা রাজি থাকলে সেখানে দ্বিতীয় ইকোনমিক জোন নিয়ে তারা কাজ করবে এবং সেখানে বিনিয়োগ করবেন।
আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টা ড.
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, ‘চীনের ২ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলারের একটি প্রতিশ্রুতির কথা আমরা বলছি। এই অর্থ আগের সব বড় বড় অংকের থেকে একটি বড় কারণে ভিন্ন। কারণ, আগে যে বড় অংকের অর্থ নিশ্চিত করে আসা হয়েছে সেগুলো ছিল ঋণ। ঋণের একটা ইতিবাচক দিক হলো, নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে টাকা চলে আসে, নেতিবাচক হলো, এই টাকা আমাদের ফেরত দিতে হয়। সুতরাং আমাদের অর্থনীতিতে এই টাকা ঢোকে এবং সুদসহ বের হয়ে যায়। সেই জায়গায় যদি বিনিয়োগ আসে, সেটি আমাদের অর্থনীতিতে প্রবেশ করে যায়। এই টাকা কখনও এই দেশ থেকে যাবে না। এই বিনিয়োগের ফলে যে পরিমাণ কর্মসংস্থান হবে সেটা ঋণ থেকে কখনই হয় না।’
আশিক চৌধুরী বলেন, ‘এবার এই ২ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার থেকে ১ বিলিয়নের বেশি বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি। এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ৩০টি চীনা কোম্পানি। এটি মূলত চট্টগ্রামের আনোয়ারাতে চীনা শিল্প ও অর্থনৈতিক অঞ্চলের ওপর নির্ভর করে। প্রায় ৮০০ একর জমির ওপর এই শিল্পাঞ্চল তৈরির কাজ চলছে। এই জোনের কাজ অনেক আগেই শুরু হয়েছিল কিন্তু ২০২২ সালের পর এটা নিয়ে আর কোনও অগ্রগতি হয়নি। গত তিন মাসে আমরা এখানে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছি এবং অনেকগুলো বড় বড় সিদ্ধান্ত সরকার নিয়েছে। তাদের সঙ্গে একটা নেগসিয়েশনে এসেছে, যে কারণে বিনিয়গকারিরা এখন খুবই কনফিডেন্ট অনুভব করছেন যে এই বছরের কোনও এক সময় আমরা নির্মাণ কাজ শুরু করবো। জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে, এখন আমরা নির্মাণকাজে যাবো। সেটার ওপর নির্ভর করেই কিন্তু চীনা কোম্পানি আমাদের এখানে আসার চিন্তা করছে।’
এবারের চীন সফরে স্বাস্থ্য সেবা একটা বড় বিষয় ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘১২ শতাংশের মতো এসেছে অনুদান, যা প্রায় ২৫০ মিলিয়ন ডলারের মতো। এর মধ্যে ১৫০ মিলিয়ন ডলার কারিগরি সহায়তার জন্য এবং ১০০ মিলিয়ন হাসপাতাল তৈরির জন্য। চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ থেকে শুরু করে বাংলাদেশে অত্যাধুনিক হাসপাতাল তৈরি করা এবং বাংলাদেশের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার জন্য যে যাত্রা ভারত-থাইল্যান্ডের দিকে হয়, আমরা চেষ্টা করছি, যাতে চীন থেকে সেই সাপোর্ট পাওয়া যায়।’
আশিক চৌধুরী বলেন, ‘চীনা অর্থনৈতিক অঞ্চলের বিষয়টি কিন্তু আমাদের জন্য বড় প্রভাব রেখেছে। আমরা অনেকদিন ধরে চীনের বিনিয়োগের কথা বলছি। চীনা বিনিয়োগের যে গুরুত্ব সেটা আমরা আবারও গিয়ে অনুধাবন করেছি। আমরা এই সুযোগ আসলে খুব কম গ্রহণ করেছি। চীনা বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশ সম্পর্কে ধারণা এখনও আছে কিন্তু খুব স্বল্প পরিসরে আছে। আমাদের আরও বেশি হারে চীনে যেতে হবে। চীন এমন একটি মহাদেশ, যেখান থেকে আমাদের সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ আসা সম্ভব। লাস্ট আগস্ট থেকে এই মার্চ পর্যন্ত ৩৪টি চীনা কোম্পানি বিনিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছে বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ-বেপজাতে। এখানে আর্থিক প্রতিশ্রুতি প্রায় ১৬০ মিলিয়ন ডলারের মতো।’
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সুনামগঞ্জে ফেসবুক পোস্ট নিয়ে সংঘর্ষ, গুলিবদ্ধসহ আহত ৪০
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার আশারকান্দি ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া নিয়ে বিরোধে দুই পক্ষের সংঘর্ষে পাঁচজন গুলিবিদ্ধসহ ৪০ জন আহত হয়েছে। আহতদের সিলেট ও স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, জামালপুর গ্রামের লেবু মিয়া ও রাজ উদ্দিনের পক্ষের লোকজনের মধ্যে জমি দিয়ে বিরোধ চলছিল। কয়েক দিন আগে স্থানীয়রা বিষয়টি সমাধান করে দেন। ঈদের দিন সোমবার লেবু মিয়ার পক্ষের একজন প্রতিপক্ষের লোককে নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেন। এ নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এর জের ধরে উভয়পক্ষের লোকজন সকাল ১১টার দিকে লাঠিসোঁটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে গোলগুলির ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে পাঁচজন গুলিবদ্ধসহ ৪০ জন আহত হন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য ফজলুর রহমান। তিনি বলেন, ফেসবুকে পোস্ট দেওয়াকে কেন্দ্র করে উভয়পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে এলাকায় সালিশে অংশ নেওয়া ব্যক্তিসহ কমপক্ষে ৪০ জন আহত হয়েছেন। আহতরা সিলেট ও জগন্নাথপুরে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বিষয়টি সামাজিকভাবে সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. তামজিদ হোসেন বলেন, আহতের মধ্যে পাঁচজনকে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। তাদের শরীরে গুলি কিনা রিপোর্ট পাওয়ার পর জানা যাবে।
জগন্নাথপুর থানার ওসি ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মাহফুজ ইমতিয়াজ ভূঁইয়া বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। এখন পরিস্থিতি শান্ত।