ব্রাজিল কেন কোচ খুঁজে পাচ্ছে না
Published: 30th, March 2025 GMT
এক রোববারে যাঁকে মাথায় তুলে নাচা হয়, পরের রোববার তাঁকে ছুড়ে ফেলা হয়, দেওয়া হয় মৃত্যুর অভিশাপ—কোচদের ক্যারিয়ারে উত্থান-পতন নিয়ে প্রায় বলা হয় এই কথাগুলো। পৃথিবীতে একেবারেই অনিশ্চিত যত চাকরি আছে, ফুটবল কোচের চাকরি তার মধ্যে অন্যতম। একটি ম্যাচে হারলেই ভোজবাজির মতো বদলে যায় সবকিছু, তবে সবচেয়ে বড় খড়্গটা নামে কোচের ওপরই। এরপরও ফুটবল কোচের পদটা বরাবরই আকর্ষণীয়, এই পদে চাকরি করতে আগ্রহী মানুষের সংখ্যা একেবারে কম নয়।
এর পেছনে অবশ্য কারণও আছে। বিশ্বসেরা কোচদের নিয়ে যে মাতামাতি, যে উন্মাদনা, তার অংশ কে না হতে চায়! আর সেই চাওয়া থেকেই কেউ কেউ আবির্ভূত হন কার্লো আনচেলত্তি, পেপ গার্দিওলা, ইয়ুর্গেন ক্লপ কিংবা লিওনেল স্কালোনি হিসেবে। নিজেদের কাজের কারণে বিশেষ মর্যাদাও পেয়ে থাকেন তাঁরা।
এই কয়জনের বাইরেও আবার এমন অনেকেই আছেন, যাঁরা কোচিংয়ের জগতে নিজেদের জায়গা তৈরি করেছেন। তবে কোচদের নিয়ে নানামুখী আলাপের মধ্যেও বিশেষ একটি দেশের উপস্থিতি বিস্ময়করভাবে নীরব।
বলছি ব্রাজিলের কথা। আধুনিক ফুটবলে কোচিংয়ের যে বিকাশ ও বিস্তার, সেখানে ব্রাজিলিয়ানদের যেন কোনো জায়গায় নেই। যার প্রভাব নিশ্চিতভাবে পড়েছে ব্রাজিলের বর্তমান ফুটবল জগতেও। কোচ নিয়ে ব্রাজিলের যে বিপর্যস্ত অবস্থা, তার সর্বশেষ দৃষ্টান্ত ব্যর্থতা নিয়ে দরিভাল জুনিয়রের বিদায়। দরিভালের বিদায় যেন ব্রাজিলের কোচিং সংস্কৃতির যে বিপর্যস্ত অবস্থা, সেটাকে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।
আরও পড়ুনহতাশায়-ব্যর্থতায় শেষ হলো ব্রাজিলের দরিভাল-অধ্যায়, এরপর কী২৯ মার্চ ২০২৫বলা হয়, ফুটবলের যাত্রা নন্দন থেকে বন্ধনের দিকে। প্রতিনিয়ত এটি নতুন নতুন রূপ ও আকার ধারণ করে। প্রতি মৌসুমে নানা ধরনের পরিবেশ ও পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে হয় খেলাটিকে। এই ধারাবাহিকতাতেই একসময় যে ফুটবল বাঁধনহারা ছিল, তা শৃঙ্খলা ও নিয়মতান্ত্রিকতায় প্রবেশ করে। আর কাজটি করার জন্য মূল ক্রীড়নক হয়ে ওঠেন কোচ। বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন দেশের কোচরা এই কাজটি করতে পারলেও, ব্রাজিলিয়ানরা এ ক্ষেত্রে বেশ পিছিয়ে পড়েছে।
একবিংশ শতাব্দীর শুরুতে পেট্রো-ডলারের আশীর্বাদে ফুলেফেঁপে উঠতে থাকে ফুটবল–দুনিয়া, তখন সেই ঝড় থেকে বাঁচতে পারেনি ফুটবলও। মধ্যপ্রাচ্য থেকে বানের পানির মতো আসতে থাকা টাকার স্রোতে ভেসে যায় ফুটবলের অলিগলিও। এই পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হয়েছিল কোচদেরও।
আধুনিক ফুটবলে কোচিংয়ের যে বিকাশ ও বিস্তার, সেখানে ব্রাজিলিয়ানদের যেন কোনো জায়গায় নেই। যার প্রভাব নিশ্চিতভাবে পড়েছে ব্রাজিলের বর্তমান ফুটবল জগতেও।এটি শুধু ক্লাবের কোচদের মানিয়ে নেওয়া ব্যাপার ছিল না, জাতীয় দলের কোচদেরও সেই গতির সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়ে নিজেদের বদলাতে হয়েছে। বিশেষ করে, অল্প সময়ে দলকে তৈরি করার মতো কঠিন কাজও করতে হয়েছে তাদের। কিন্তু বদলের এবং চ্যালেঞ্জ নেওয়ার এই গতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে পুরোপুরিভাবে ব্যর্থ হয় ব্রাজিলিয়ান কোচরা। গত ২০ বছরে ব্রাজিলিয়ান কোচদের উত্থানের দিকে তাকালেও চিত্রটা বেশ স্পষ্ট হবে।
২০০২ সালে সর্বশেষ বিশ্বকাপ জিতেছিল ব্রাজিল। ব্রাজিলের সেই বিশ্বকাপ জয়ের নেপথ্য নায়ক ছিলেন লুইস ফিলিপ স্কলারি। তাঁর বিদায়ের পর ব্রাজিলের কোচ হয়ে আসেন কার্লোস আলবার্তো পেরেইরা। ১৯৯৪ বিশ্বকাপে ব্রাজিলকে সাফল্য এনে দেওয়া এই কোচ কিন্তু আর সফল হতে পারেননি।
ব্রাজিলের বিদায়ী কোচ দরিভাল জুনিয়র.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ভোলায় ধর্ষণের অভিযোগে থানা হাজতে আটক ব্যক্তির ‘আত্মহত্যা’
ভোলা সদর মডেল থানার হাজতে ধর্ষণের অভিযোগে আটক এক ব্যক্তি ‘আত্মহত্যা’ করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত সোয়া ১২টার দিকে থানা হাজতে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশের দাবি, হাজতে থাকা জায়নামাজ দিয়ে তিনি ‘আত্মহত্যা’ করেছেন।
ওই ব্যক্তির নাম মো. হাসান। তাঁর বাড়ি সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের একটি গ্রামে। প্রতিবেশী এক গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগে গতকাল তাঁকে আটক করে থানা–পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, মারা যাওয়া হাসান গতকাল বেলা তিনটার দিকে এক প্রতিবেশীর বাড়িতে রেফ্রিজারেটরে মাংস রাখতে যান। এ সময় তাঁর বিরুদ্ধে এক গৃহবধূকে ধর্ষণ করার অভিযোগ ওঠে। এরপর এলাকাবাসী হাসানকে ধরে পিটুনি দেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে হাসানকে আটক করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। চিকিৎসার পর রাত আটটার দিকে তাঁকে থানা-হাজতে রাখা হয়। সেখানে রাত ১২টা ১৮ মিনিটে হাজতে থাকা জায়নামাজ দিয়ে তিনি ‘আত্মহত্যা’ করেন।
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাহাদাৎ মো. হাচনাইন পারভেজ এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘থানার সিসিটিভির ফুটেজে এ রকম দৃশ্য দেখা গেছে। ধর্ষণের শিকার গৃহবধূ এখন ভোলার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।’