নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার গোয়ালপাড়া এলাকার শাহিন মিয়ার ছেলে সিয়াম মিয়া। সিয়ামের বাবা শুধু কাগজে কলমে থাকলেও বাস্তবে তার কোন অস্তিত্ব নেই।

সিয়ামের যখন যখন জন্ম হয় তখন বাবা শাহিন মিয়া তাকে ও তার মা মায়শারা বেগমকে ফেলে অন্যত্র চলে যায়। তারপর থেকে শাহিন ছেলে ও স্ত্রীর কোন খোঁজ খবর নেয়নি। কিছুদিন পর সিয়ামের মায়েরও বিয়ে হয়ে যায় অন্যত্র।

এরপর থেকেই শাহীন বড় হয় তার নানা নানীর কাছে। নানা নানীর অভাবের সংসারে পেরোনো হয়নি প্রাথমিকের গন্ডি। নানা নানীর বয়স হয়ে যাওয়ায় তাদের পক্ষে সংসারের খরচ চালানো সম্ভব হয় না। সংসারের হাল ধরেন সিয়াম।

তাইতো কয়েক মাস আগে জীবিকার জন্য স্থানীয় একটি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে একটি ইজিবাইক কেনেন সিয়াম। ইজিবাইক চালিয়ে এনজিওর ঋণের কিস্তি দিয়ে তাদের তিনজনের সংসার ভালই চলছিল। কথায় আছে অভাগা যেদিকে চায় সাগর শুকিয়ে যায়।

একমাস যেতে না যেতেই ইজিবাইকটি দূর্ঘটনায় পুরোপুরি বিকল হয়ে যায়। একদিকে এনজিও’র ঋণের টাকা আরএকদিকে সংসারের খরচ চালাতে দিশেহারা যখন সিয়াম ও তার নানা নানী।

তখনই অসহায় সিয়ামের এই দূর্দশা জানতে পেরে পাশে দাড়িয়েছেন আনছর আলী নামে স্থানীয় এক সমাজসেবক। সিয়ামকে নতুন একটি ইজিবাইক কিনে নিয়ে পূনরায় তার কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন তিনি। 

ইজিবাইক পেয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে সিয়াম মিয়া বলেন, এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ইজিবাইকটি কিনেছিলাম। এক্সিডেন্ট করে আমার ইজিবাইকটি নষ্ট হয়ে যায়। আমিও অনেক ব্যাথা পেয়েছি। কিস্তির টাকা কিভাবে পরিশোধ করবো সেটা নিয়ে খুব চিন্তায় ছিলাম। তাছাড়া সামনে ঈদ। এখনো কিছুই কিনিনি।

আনছর আলী কাকা আমার বিষয়টি জানতে পেরে তাৎক্ষনিক আমাকে একটি নতুন ইজিবাইক কিনে দিয়েছেন। অটো দিয়ে আমি এখন ঋণের টাকাও পরিশাধ করতে পারবো ও সংসার চালানো যাবে। 

সিয়ামের নানা সিদ্দিক মিয়া বলেন, আমার নাতীডারে আমরা অনেক কষ্ট কইরা মানুষ করছি। কয়দিন আগে নাতীডায় এক্সিডেন্ট কইরা অটো ভাইঙ্গা গেছে। কিস্তির টাকাও দিতে পারতাছিল না। তহন আনছর আলী বাপজানে আমার নাতিরে একটা অটো কিন্না দিছে। আল্লাহ তারে আরো বড় করুক। 

আনছর আলী বলেন, আমি যখন শুনেছি সিয়াম ছেলেটি অসহায়। তাৎক্ষনিক তার কর্মসংস্থ্যানের জন্য নতুন একটি ইজিবাইক কিনে দিয়েছি। যাতে সারা বছর এটা দিয়ে সে সংসার চালাতে পারে আর কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে পারে। 

 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: র পগঞ জ ন র য়ণগঞ জ এনজ ও

এছাড়াও পড়ুন:

অর্থ আত্মসাতের মামলায় ফাঁসলেন মহেশ বাবু

ভারতের দক্ষিণী সিনেমার সুপারস্টার মহেশ বাবু। এবার অর্থ আত্মসাতের মামলায় তাঁকে তলব করেছে ভারতের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। আগামী ২৭ এপ্রিল জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাজির হতে বলা হয়েছে তাঁকে।

ভারতীয় একাধিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হায়দরাবাদের রিয়েল এস্টেট সংস্থা সাই সূর্য ডেভেলপারস এবং সুরানা গ্রুপের বিরুদ্ধে ওঠা অর্থ আত্মসাতের মামলায় ডাকা হয়েছে মহেশকে। এ দুই প্রতিষ্ঠান থেকে জমি কিনে নিঃস্ব হয়েছেন অনেকে। কোম্পানি দুটির বিজ্ঞাপনের মুখ হয়ে মামলায় নাম উঠেছে মহেশের।  

তদন্তে যে তথ্য উঠে এসেছে, সেই অনুযায়ী, সাই সুরিয়া ডেভেলপারস মহেশবাবুকে প্রায় ৬ কোটি টাকা দিয়েছিল। এর মধ্যে ব্যাংকের মাধ্যমে সাড়ে ৩ কোটি টাকা দেওয়া হয়। বাকি আড়াই কোটি দেওয়া হয় নগদে। তদন্তকারীদের সন্দেহ, মহেশ বাবুকে যে নগদ টাকা দেওয়া হয়েছিল, তা রিয়েল এস্টেট জালিয়াতি সংক্রান্ত অপরাধের অংশ।

তদন্তে নেমে গেল ১৬ এপ্রিল হায়দরাবাদ, সেকেন্দ্রাবাদের চারটি জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালায় ইডি। ২০০২ সালের আর্থিক তছরুপ আইনে এ মামলার তদন্ত চলছে।

মহেশবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁকে দেখে বহু মানুষ সম্পত্তি কিনতে উৎসাহিত হয়ে পড়েন। আর তাতেই প্রতারণা, জালিয়াতির শিকার হতে হয় তাদের। অভিনেতা সরাসরি দুর্নীতি না করলেও নগদে তিনি যে টাকা নিয়েছেন, সে পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে ইডির। যেখানে ১০০ কোটি টাকার লেনদেনে অনিয়ম চোখে পড়েছে।  

ওই রিয়েল এস্টেট প্রজেক্টের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হিসেবে যেহেতু প্রচারের মুখ ছিলেন মহেশবাবু, তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চান তদন্তকারীরা।  

সম্পর্কিত নিবন্ধ