ঈদুল ফিতরের দিন নির্ধারণে আজ বৈঠকে বসবে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি। আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় (বাদ মাগরিব) বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় সভাপতিত্ব করবেন জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভাপতি ও ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন।
সন্ধ্যায় দেশের আকাশে পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেলে সোমবার ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। এদিন বাংলাদেশের কোথাও চাঁদ দেখা না গেলে ঈদ উদযাপিত হবে আগামী মঙ্গলবার।
সভায় ১৪৪৬ হিজরি সনের শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখার সংবাদ পর্যালোচনা করে ঈদুল ফিতর উদযাপনের তারিখ নির্ধারণ করা হবে। একমাস রোজা শেষে শাওয়াল মাসের ১ তারিখে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়।
বাংলাদেশের আকাশে কোথাও পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা গেলে তা ০২-২২৩৩৮১৭২৫, ০২-৪১০৫০৯১২, ০২-৪১০৫০৯১৬ ও ০২-৪১০৫০৯১৭ টেলিফোন নম্বরে ফোন করে এবং ০২-২২৩৩৮৩৩৯৭ ও ০২-৯৫৫৫৯৫১ নম্বরে ফ্যাক্স করে বা সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসক (ডিসি) বা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে (ইউএনও) জানানোর জন্য অনুরোধ জানিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
এদিকে চাঁদ দেখা যাওয়ায় আজ সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে। সৌদির সঙ্গে মিল রেখে দেশের ২০ জেলায়ও উদযাপিত হচ্ছে ঈদ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: উদয প ত
এছাড়াও পড়ুন:
বিশ্ববাজারে সোনার দামের নতুন রেকর্ড
বিশ্ববাজারে সোনার দাম সর্বকালীন রেকর্ড গড়েছে। আজ সকালে প্রতি আউন্স সোনার দাম ৩ হাজার ১৪৮ ডলারে উঠেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পারস্পরিক শুল্ক আরোপের ঘোষণার আগে নিরাপদ বিনিয়োগ মাধ্যম হিসেবে সোনার দাম বেড়েছে বলে দ্য গার্ডিয়ানের সংবাদে বলা হয়েছে।
আগামীকাল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পারস্পরিক শুল্ক আরোপ করবেন; অর্থাৎ প্রতিটি দেশের জন্য পৃথকভাবে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেবেন। দিনটিকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ‘স্বাধীনতা দিবস’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। কিন্তু যেসব দেশের পণ্যে তিনি এই শুল্ক আরোপ করবেন, সেই সব দেশের জন্য তা রীতিমতো আতঙ্কের দিন। শুল্ক আরোপ নিয়ে অনিশ্চয়তার জেরে গতকাল ইউরোপ ও এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের শেয়ারবাজারেও অস্থিরতা তৈরি হয়। বিনিয়োগকারীরা বিপুল পরিমাণ শেয়ার ছেড়ে দিয়েছেন।
শুল্ক আরোপের জেরে বিশ্ববাণিজ্য ও অর্থনীতিতে যে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে, তার জেরে সোনার দাম নতুন উচ্চতায় উঠেছে। বিষয়টি হলো, সোনার দামের সঙ্গে বিশ্ব অর্থনীতির সম্পর্ক গভীর। বিশ্ব অর্থনীতি এখন কেমন আছে, এর উত্তর একটাই—অনিশ্চয়তা। ট্রাম্পের জমানায় শিগিগরই এই অনিশ্চয়তা থেকে মুক্তি নেই, এ কথা বোঝার জন্য রকেট বিজ্ঞানী হওয়ার প্রয়োজন নেই। সেই সঙ্গে ঝুঁকি থাকবে বলেই বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। অনিশ্চয়তা অর্থনীতির জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর। কিন্তু অনিশ্চয়তার সময়টাই প্রকৃত অর্থে সোনার স্বর্ণসময়। যত বেশি অনিশ্চয়তা, তত বেশি সোনা বিক্রি। যত বেশি মূল্যস্ফীতি, তত বেশি সোনার মূল্যবৃদ্ধি। ঐতিহাসিকভাবেও দেখা গেছে, উচ্চ মূল্যস্ফীতির সময়েই সোনার দাম সবচেয়ে বেশি বাড়ে।
কোভিডের শেষ পর্যায়ে যখন রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হয়, তখনো হঠাৎ করে সোনার দাম বাড়তে শুরু করে। অতীতেও দেখা গেছে, অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হলেই সোনার দাম বাড়ে।
সম্প্রতি ফক্স নিউজের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, এ রকম ঘন ঘন বাণিজ্যনীতি বদলের ফলে মার্কিন অর্থনীতিতে কি ‘মন্দা’ আসতে পারে? ‘ঢাক ঢাক গুড় গুড়’ না করে স্বভাবসিদ্ধ ভাষায় ট্রাম্প জানিয়ে দেন, ‘আমি এসব বিষয় নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করা পছন্দ করি না। বিষয়টি হলো, মার্কিন অর্থনীতি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। আমরা যা শুরু করেছি, তার প্রভাব সুদূরপ্রসারী। আমরা বিশ্বের সব প্রান্ত থেকে দেশে সম্পদ ফিরিয়ে আনছি। এটা অনেক বড় ব্যাপার। এই প্রক্রিয়ায় নানা পর্যায় আছে; সেগুলো পেরোতে কিছুটা সময় লাগবে। যদিও আমার মনে হয়, শেষমেশ আমাদের জন্য সব ভালোই হবে।’
অর্থাৎ ডোনাল্ড ট্রাম্পের খ্যাপাটে বাণিজ্যনীতি যে অব্যাহত থাকবে, তা পরিষ্কার।
সোনার চাহিদাও তৈরি হয় দুইভাবে, যেমন গয়নার চাহিদা ও সোনায় বিনিয়োগ বৃদ্ধি। গয়না হিসেবে সোনার বেশি প্রচলন চীন ও ভারতে। পশ্চিমা দেশগুলোয়ও গয়নার ভালো চাহিদা আছে। আন্তর্জাতিক গোল্ড কাউন্সিলের হিসাবে, সরবরাহকৃত মোট সোনার ৪৭ শতাংশই ব্যবহার করা হয় গয়নায়। এ ছাড়া বিভিন্ন দেশে সোনায় বিনিয়োগ করার জন্য বন্ডসহ নানা ধরনের আর্থিক সম্পদ আছে। কয়েক বছর ধরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোও ভবিষ্যতের জন্য সোনার মজুত বাড়াচ্ছে। হিসাব অনুযায়ী, মোট সরবরাহের ২১ শতাংশই বিনিয়োগের মাধ্যম হিসেবে সোনার ব্যবহার হয়ে থাকে।
এদিকে বিশ্ববাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশের বাজারেও সোনার দাম এখন ইতিহাসের সর্বোচ্চ পর্যায়ে। ঈদের আগে সোনার দাম আরেক দফা বাড়ানো হয়েছে। এই দফায় ভরিপ্রতি দাম বাড়ানো হয়েছে ১ হাজার ৭৭৩ টাকা। এতে ভালো মানের ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম উঠেছে ১ লাখ ৫৮ হাজার টাকা।
বিশ্বে সোনাকেই সবচেয়ে স্থিতিশীল ও নির্ভরযোগ্য পণ্য হিসেবে ধরা হয়। বলা হয়, একমাত্র সোনার দরেই সাধারণত বড় ধরনের অস্থিতিশীলতা দেখা যায় না। সোনা কিনে রাখলে লোকসানের ভয় নেই বলা যায়। এ কারণেই সোনার প্রতি সবার এত আকর্ষণ। ৫০ বছর আগে কেউ সোনা কিনে রাখলেও তা ভালো বিনিয়োগ হিসেবেই বিবেচিত। শেয়ারবাজার, ডলার বা অন্য কিছু এই নিশ্চয়তা দেয় না।