ইফতারের পর শরীরটা বিছানায় এলিয়ে দিয়ে মাত্রই ফোন স্ক্রল করতে শুরু করেছি। হুট করে একটা খবরের ফটোকার্ডে চোখ আটকে গেল। তাতে বড় হরফে লেখা ‘সালামি চেয়ে বারবার বিরক্ত করায় জুনিয়রকে পেটালেন সিনিয়র!’ দেখে মনটা খারাপ হয়ে যাচ্ছিল। এ কেমন নিষ্ঠুরতা! কিন্তু একটু পরই বুঝলাম, ফটোকার্ডটি ভুয়া। কেউ হয়তো মজা করার জন্য বানিয়েছে। ক্যাম্পাসের সিনিয়র-জুনিয়রদের মধ্যে সালামি নিয়ে এমন আরও নানা রঙ্গ-রসিকতাই হয়। কয়েকটা মজার ঘটনা কুড়িয়ে এনেছি আপনাদের জন্য।

শিগগিরই বিয়ে হবে, যদি দেন সালামি

যাঁদের বিয়ে হচ্ছে না বা যাঁরা বিয়ের বয়স হলেও বাড়িতে বলতে পারছেন না, তাঁরা মন খুলে (পড়ুন ‘হাত খুলে’) সালামি দিন এবার। কেননা, আশিক নামের একজন ফেসবুকে লিখেছেন, ‘গত বছর এক ভাই আমাকে সালামি দিয়েছিল, এই বছর সে বউ নিয়ে ঘুরছে। দেখেন যা ভালো মনে করেন!’ তো, আশিক ভাইয়ের সঙ্গে সুর মিলিয়ে বলতে চাই, দেখেন যা ভালো মনে করেন.

..

‘সালামি না দিলে বন্ধু…’

কোক স্টুডিও বাংলা সিজন টু-তে প্রকাশিত হয়েছিল ‘কথা কইয়ো না’ শিরোনামের একটি গান। ২০২৩ সালে প্রকাশিত গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছিলেন আরফান মৃধা ও আলেয়া বেগম। তখন থেকেই জনপ্রিয় গানটি অনেকের মুখে মুখে ফেরে। রোশনি নামের একজন এই গানেরই ‘দেখা না দিলে বন্ধু, কথা কইয়ো না’ অংশ জুড়ে দিয়ে একটি মজার ভিডিও বানিয়েছেন। ভিডিওতে গানের সঙ্গে ভেসে ওঠে লেখা—‘ঈদের সালামি না দিলে বন্ধু কথা কইয়ো না।’

উচ্চতা বেশি হলে সালামি পাওয়া যাবে

ফেসবুকে মিজানুর রহমান নামের এক শিক্ষার্থী পোস্ট করেছেন, ‘যাঁদের উচ্চতা আমার থেকে বেশি শুধু তাঁদেরই সালামি দেব।’ ঈদের সময় জুনিয়রদের পক্ষ থেকে বেশ ‘চাপ’ আসে সালামি দেওয়ার জন্য। সেই চাপে পড়ে সিনিয়রদের ভুগতেও হয় বেশ। মিজানুরের মতো চাইলে আপনিও এভাবে শর্ত জুড়ে দিতে পারেন।

হয় সালামি, নয় বয়কট!

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শিহাব ফেসবুকে সিনিয়রদের রীতিমতো হুমকিই দিয়ে বসেছেন। মজা করে তিনি লিখেছেন, ‘যেসব সিনিয়ররা এ বছর ঈদে আমাকে সালামি দেবেন না, তারা এই পোস্টে রিঅ্যাক্ট দেন। চিনে রাখি আপনাদের। পরে বয়কট করতে সুবিধা হবে।’ সর্বশেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, শিহাবের সিনিয়ররা এই পোস্ট দেখার পর মহা দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছেন। তাঁদের উদ্দেশ্যে বলি, বয়কটের শিকার না হতে চাইলে সালামি দেওয়াই হয়তো ভালো!

ফোন নম্বর বলে দেবে আপনি কত সালামি পাবেন

আরেক শিক্ষার্থী জয়নাল উদ্দিন সালামি দেওয়ার নতুন এক ফর্মুলা আবিষ্কার করেছেন। লিখেছেন, ‘ফোন নম্বরের লাস্ট দুই অঙ্কের যোগফল দিয়ে আপনার ঈদ সালামি নির্ধারণ করা হবে। কে কত পাবেন?’ অভিনব এই ফর্মুলা আবিষ্কারের জন্য জয়নালকে কোনো পুরস্কার দেওয়া যা কি না, সে চিন্তা আপনাদের ওপরে ছেড়ে দিলাম।

শুধু ছবি থাকলেই মিলবে সালামি

সালামি চাইলেই হবে না, থাকতে হবে ছবি—এমন শর্ত জুড়ে দিয়েছেন এক শিক্ষার্থী। ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, ‘যাঁদের সঙ্গে আমার ছবি আছে, সেসব জুনিয়ররাই সালামি চাইবেন।’

প্রতিবছর দুই ঈদের আগে সালামি নিয়ে ফেসবুক পাড়ায় এমন মজার মজার পোস্ট দেখা যায়। সালামি না দিলে ‘সিনিয়রদের বয়কট করতে চাওয়া’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সামসুল আলমের কাছে তার ফেসবুক পোস্ট সম্পর্কে জানতে চাইলাম। তিনি হেসে বললেন, ‘মজা করেই পোস্টটি দিয়েছি। সালামি পাওয়া জুনিয়রদের অধিকার। বৈষম্যহীন সমাজে আমাদের এই অধিকার হরণ হতে পারে না!’ সামসুল আলমের জুনিয়ররাও একই দাবি করে বসলে তাঁর বক্তব্য কী হবে, তা অবশ্য জানা হয়নি।

আরও পড়ুনবিবিএ নিয়ে ৬ ভুল ধারণা০৪ আগস্ট ২০২২

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন ম র এক ন য়রদ র ফ সব ক র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

রিয়ামণির মতো স্মার্ট মেয়ে কী কারণে হিরো আলমকে বিয়ে করেছিল

কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিরো আলমের বাবার মৃত্যুর পর স্ত্রী রিয়া মনিকে বয়কটের ঘোষণা দেন। এরপর থেকেই বিষয়টি নিয়ে নেটিজেনরা নানা আলোচনা সমালোচনা করছেন। এই বিষয় নিয়ে ফেসবুকে এক পোস্টে তসলিমা নাসরিন স্ত্রীর সঙ্গে হিরো আলমের ভুল বোঝাবুঝিকে ‘পুরুষতান্ত্রিকতা’ অ্যাখ্যা দিয়ে কটাক্ষ করেছেন।

রাইজিংবিডির পাঠকদের জন্য তসলিমা নাসরিনের পোস্টটি হুবহু পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।

“মাঝে মাঝে ভাবি রিয়ামণির মতো স্মার্ট মেয়ে কী কারণে হিরো আলমের মতো একটা লোককে বিয়ে করেছিল! হিরো আলমের টাকা আছে বলে? ভেবেছিলাম অন্য কোনও গুণ না থাকলেও একটি গুণ হিরো আলমের হয়তো আছে, মেয়েদের হয়তো ব্যক্তি হিসেবে সম্মান করে সে। প্রচুর মানুষের সঙ্গে মিশেছে সে, তার নাম হয়েছে, তার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। হয়তো জীবন সম্পর্কে ধারণা এখন আগের চেয়ে স্পষ্ট হয়েছে, হয়তো যতটা উদার ছিল, সংবেদনশীল ছিল, তার চেয়ে আরও বেশি হয়েছে।”

আরো পড়ুন:

হিরো আলমকে মারধর, ৫ আসামি পেলেন জামিন

আদালত চত্বরে মারধর: থানায় অভিযোগ দি‌লেন হি‌রো আলম

“কিন্তু দেখলাম আমি ভুল ভেবেছিলাম। রিয়ামণির বিরুদ্ধে যেভাবে সে নোংরা ভাষায়  কথা বলছে, যেভাবে তাকে হেয় করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে, যেভাবে তাকে হিংস্র আক্রমণ করছে, কট্টর পুরুষতান্ত্রিক না হলে করা যায় না। রিয়ামণি যেহেতু স্বামীর অনুমতি ছাড়া ঘরের বাইরে গিয়েছে, যেহেতু স্বামীর অনুমতি ছাড়া অন্য কারও সঙ্গে ভিডিও বানিয়েছে, যেহেতু হাসপাতালে গিয়ে স্বামীর বাবার সেবাযত্ন করেনি, যেহেতু তার বাবার পাশে বসে থাকেনি রাত দিন, যেহেতু বাবার মৃত্যু হলে শিয়রে বসে অঝোরে কাঁদেনি, সেহেতু হিরো আলম জানিয়ে দিয়েছে রিয়ামণির মতো  স্ত্রী সে চায় না। এমন চরম নারীবিদ্বেষী চরিত্রকে লোকে বাহবা দেবে, তার কাছ থেকে শিখবে যে স্ত্রী মানেই চাকরানী, স্ত্রী মানেই দাসি। শিখবে,  স্ত্রীর দায়িত্ব  স্বামী এবং স্বামীর আত্মীয় স্বজনকে সেবা করা, স্বামীর অনুমতি ছাড়া ঘরের বাইরে না বেরোনো, নিজের ইচ্ছে ছুড়ে ফেলা, নিজের কাজ পণ্ড করা, নিজের জীবন বিসর্জন দেওয়া। হিরো আলম জনগণকে শেখাচ্ছে যে  স্বামী পরকীয়া করলেও স্ত্রীকে পতিব্রতা স্ত্রী হিসেবে স্বামীর আদেশ নির্দেশ পালন করতে হবে, কারণ স্বামী হলো প্রভু, আর স্ত্রী জিনিসটি দাসি শুধু নয়, ক্রীতদাসী।”

“রিয়ামণি, আমার বিশ্বাস, এই নোংরা নারীবিদ্বেষী সমাজে পাছে লোকে কিছু বলের তোয়াক্কা না করে  নিজের পরিচয় নিয়ে, নিজের যোগ্যতায় মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।”

তসলিমা নাসরিনের ফেসবুক পোস্ট

এর আগে বাবার মৃত্যুর সময় পাশে না থাকার অভিযোগ তুলে স্ত্রী রিয়ামণির সঙ্গে সংসার না করার ঘোষণা দেন হিরো আলম। তার অভিযোগ, মুমূর্ষু বাবাকে নিয়ে তিনি হাসপাতালে প্রায় এক মাস অবস্থান করলেও স্ত্রী রিয়ামণি বাবাকে দেখতে আসেননি, বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে লাশও দেখতে আসেননি।

গত মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর একটি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলমের পালক বাবা আবদুর রাজ্জাক মারা যান। গত বুধবার বগুড়ার এরুলিয়ায় জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়। এরপর নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে স্ত্রী রিয়ামণিকে নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বয়কটের ঘোষণা দেন। এ নিয়ে রিয়ামণি গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হিরো আলমকে পাল্টা দোষারোপ করায় বৃহস্পতিবার দুপুরে বগুড়ার নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলনে স্ত্রী রিয়ামণির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তোলেন হিরো আলম।

ঢাকা/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নারায়ণগঞ্জে হেফাজতের কার্যক্রম বয়কটের ডাক একাংশের
  • রিয়ামণির মতো স্মার্ট মেয়ে কী কারণে হিরো আলমকে বিয়ে করেছিল
  • দুর্নীতিবাজদের সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে: দুদক চেয়ারম্যান