মাইক্রোসফট ওয়ার্ড এখন বিশ্বের অন্যতম বহুল ব্যবহৃত ওয়ার্ড প্রসেসিং সফটওয়্যার। সাধারণ টেক্সট এডিটর থেকে যাত্রা শুরু করে এমএস ওয়ার্ড এখন একটি শক্তিশালী ডকুমেন্ট তৈরির সরঞ্জাম। এমএস ওয়ার্ডের ইতিহাস ঘাঁটলে কয়েক দশক পর্যন্ত তথ্য জানা যায়। মাইক্রোসফট ওয়ার্ডের আগে ওয়ার্ড প্রসেসিং হিসেবে আইবিএম সিলেকট্রিক টাইপরাইটার (১৯৬১), ওয়ার্ডস্টার (১৯৭৮) ও ওয়ার্ডপারফেক্ট (১৯৮০) ডিজিটাল ওয়ার্ড প্রসেসরের জনপ্রিয়তা ছিল। এসব প্রোগ্রাম টাইপরাইটার ব্যবহার না করে ব্যক্তিগত কম্পিউটারে লেখা তৈরি, সম্পাদনা ও ফরম্যাট করার সুযোগ ছিল।
পরবর্তী সময়ে আশির দশকের শুরুতে বিভিন্ন সফটওয়্যার কোম্পানি ব্যবহারকারী-বান্ধব ওয়ার্ড প্রসেসর তৈরি শুরু করে। মাইক্রোসফট তখন আবির্ভূত হয়। তত দিনে মাইক্রোসফট আইবিএম কম্পিউটারের জন্য এমএস-ডস তৈরি করেছিল।

মাইক্রোসফট ওয়ার্ড প্রথম তৈরি করেন চার্লস সিমোনি ও রিচার্ড ব্রডি। তাঁরা জেরক্স পিএআরসির দুই সাবেক প্রোগ্রামার। সেই সময় তাঁরা মাইক্রোসফটের একটি জেরক্স প্রকল্পে কাজ করেছিলেন। ব্রাভোকে বলা হয় ডব্লিউওয়াইএসআইডব্লিউওয়াইজি ধরনের ওয়ার্ড প্রসেসর।

ডব্লিউওয়াইএসআইডব্লিউওয়াইজি মানে হোয়াট ইউ সি ইজ হোয়াট ইউ গেট।
১৯৮৩ সালে মাইক্রোসফট জেনিক্স ও এমএস-ডসের জন্য মাল্টি-টুল ওয়ার্ড প্রকাশ করে। পরে তাঁর নাম পরিবর্তন করে মাইক্রোসফট ওয়ার্ড রাখা হয়। এর মাধ্যমে টেক্সট ফরম্যাটিং, স্পেলিং চেক ও মাউস ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া হয়। এসব বৈশিষ্ট্য ছিল সেই সময়ে নতুনত্ব। এসব বৈশিষ্ট্যের কারণে মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ওয়ার্ডস্টার ও ওয়ার্ডপারফেক্টের মতো সফটওয়্যারের বিপরীতে এগিয়ে যায়। মাইক্রোসফট ওয়ার্ড প্রথম সরাসরি স্ক্রিনে বোল্ড ও ইটালিক টেক্সট দেখার সুযোগ দেয়।

মাইক্রোসফট ওয়ার্ডের প্রাথমিক সংস্করণ কিছু জনপ্রিয়তা অর্জন করলেও ওয়ার্ডপারফেক্টের সঙ্গে পেরে উঠছিল না। ১৯৮৯ সালে মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ফর উইন্ডোজ ১.

০ প্রকাশ করে। এই সংস্করণ নতুন ব্যবহারকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের উত্থানের সঙ্গে মাইক্রোসফট ওয়ার্ড গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেস (জিইউআই) সুবিধা গ্রহণ করে এগিয়ে যায়।

১৯৯০ দশকের মাঝামাঝি সময়ে মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ওয়ার্ডপারফেক্টকে ছাড়িয়ে যেতে শুরু করে। মাইক্রোসফটের ওয়ার্ডকে মাইক্রোসফট অফিসের সঙ্গে বান্ডিল হিসেবে প্রকাশ করে মাইক্রোসফট। এক্সেল ও পাওয়ারপয়েন্টের সঙ্গে একত্রে প্রকাশ হয়। পরবর্তী সময়ে ওয়ার্ড ৬.০ (১৯৯৩) ও ওয়ার্ড ৯৭ (১৯৯৭) বাজারে প্রভাব তৈরি করে। অটোকারেকশন, অ্যানিমেটেড সহকারী ক্লিপির মতো জনপ্রিয় বৈশিষ্ট্য দেখা যায় তখন।

পরবর্তী সময়ে মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ২০০৩, ২০০৭ ও পরবর্তী সংস্করণের প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে আরও বাজার বিস্তৃত হয়। মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ২০০৭ রিবন ইউআই প্রবর্তন করে ওয়ার্ডের ইন্টারফেসকে পরিমার্জন করা হয়। ২০০৭ সালে ডট ডকএক্স ফাইল ফরম্যাট প্রকাশ করা হয়। ২০১০ দশকের পরে মাইক্রোসফট ক্লাউডে এমএস ওয়ার্ড ব্যবহার শুরু হয়।

সূত্র: মাইক্রোসফট

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ড প রস স ব যবহ র পরবর ত

এছাড়াও পড়ুন:

সংঘর্ষ ও খুনের পর মিরসরাই বিএনপির তিন কমিটির কার্যক্রম স্থগিত

সংঘর্ষ ও খুনের পর চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলা বিএনপির সদ্য ঘোষিত তিনটি কমিটির কার্যক্রম সাময়িক স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খন্দকার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সম্প্রতি মিরসরাই উপজেলা, মিরসরাই পৌরসভা ও বারিয়ারহাট পৌরসভার তিনটি আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। অনুমোদিত বিএনপির কমিটি প্রকাশ হওয়ার পর দুর্ভাগ্যজনকভাবে বিশেষ একটি পক্ষ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে এলাকায় জনগণকে ভীতসন্ত্রস্ত করে তোলে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক বন্ধ করে অস্থিরতা সৃষ্টি করে। তাদের এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে একজন নিরীহ মানুষ হত্যার শিকার হন এবং ১৫ জন গুরুতরভাবে জখম অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। সাম্প্রতিক উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মিরসরাইয়ের জনগণের পাশে থাকার লক্ষ্যে অনুমোদিত তিন কমিটির কার্যক্রম সাময়িক স্থগিত করা হলো।

কমিটির কার্যক্রম স্থগিতের বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খন্দকার প্রথম আলোকে বলেন, কমিটির বিষয়ে পরবর্তী করণীয় বসে ঠিক করা হবে। কমিটি গঠনের পর হত্যাসহ নানা নৈরাজ্যে জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

১৮ মার্চ মিরসরাই উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। এরপর ২৪ মার্চ চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খন্দকার স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে মিরসরাই উপজেলা, মিরসরাই পৌরসভা ও বারিয়ারহাট বিএনপির নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়।

নতুন ঘোষিত বিএনপির উপজেলা আহ্বায়ক কমিটিতে আবদুল আওয়াল চৌধুরীকে আহ্বায়ক ও আজিজুর রহমান চৌধুরীকে সদস্যসচিব মনোনীত করা হয়। ঘোষিত এই কমিটির বিরোধিতা করে ২৫ মার্চ দুপুরে মিরসরাই উপজেলা সদরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক বন্ধ করে ঝাড়ুমিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে মিরসরাই উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিনের অনুসারীরা। সেই ঝাড়ুমিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে নতুন আহ্বায়ক কমিটিকে প্রতিহত করার ঘোষণা দেওয়া হয়।

বিএনপির দুই পক্ষের এমন উত্তেজনা শুরু হলে ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে ফুল দিতে এলে দুই পক্ষের মধ্যে সহিংসতার শঙ্কায় ২৬ মার্চ সকালে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার জন্য মিরসরাই উপজেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে উপজেলা প্রশাসন। সেদিন বেলা ১১টায় মিছিল গণজমায়েত করে প্রশাসনের দেওয়া ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে শহীদ মিনারে এসে ফুল দিয়ে যান মিরসরাই উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল আমিনের অনুসারীরা। এরপর উপজেলার বারিয়ারহাট পৌরসভা বিএনপির আহ্বায়ক মইনুদ্দিন লিটনের বাড়ির সামনে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় মোহাম্মদ জাবেদ নামের এক যুবক নিহত হন। সংঘর্ষের সেই ঘটনায় বিএনপির আরও অন্তত ১৩ নেতা-কর্মী গুরুতর আহত হন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আইপিএলে বাউন্ডারি বড় করার পরামর্শ গাভাস্কারের
  • ইসরায়েলের নতুন নিরাপত্তাপ্রধান হিসেবে সাবেক নৌ কমান্ডারকে বেছে নিলেন নেতানিয়াহু
  • নেইমারের সঙ্গে বিতর্কে জড়ানো জেসুসই কি হচ্ছেন ব্রাজিলের কোচ
  • দেশজুড়ে ঈদের দিন আবহাওয়ার পূর্বাভাস যা বলছে
  • তাহলে কে হচ্ছেন ব্রাজিলের কোচ
  • সংঘর্ষ ও খুনের পর মিরসরাই বিএনপির তিন কমিটির কার্যক্রম স্থগিত
  • সেনাবাহিনী নিয়ে নেতিবাচক চর্চা বিপজ্জনক