মাংসের দোকানে উপচে পড়া ভিড়, সেমাই-চিনির বিক্রি বেড়েছে
Published: 30th, March 2025 GMT
পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে শেষ মুহূর্তের কেনাকাটায় ব্যস্ত রাজধানীবাসী। বাজারগুলোতে পোলওয়ের চাল, সেমাই, চিনি, গরুর মাংস ও মুরগি কেনার ধুম পড়েছে। ঈদের আগে এসব পণ্যের চাহিদা বেশ বেড়েছে। গরুর মাংস ও মুরগির দামও বেড়েছে। গত সপ্তাহের তুলনায় বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে এসব পণ্য।
রাজধানীর বাজারগুলোতে গরু ও খাসির মাংসের দাম বেড়েছে কেজি প্রতিতে ৫০ টাকা। ব্রয়লার ও পাকিস্তানি মুরগির (সোনালী) দাম বেড়েছে ২০ থেকে ৩০ টাকা। তবে, চিনি, সেমাই, তেল ও পোলাওয়ের চালের দাম স্থিতিশীল আছে।
রবিবার (৩০ মার্চ) রাজধানীর খিলগাঁও, গোড়ান, নন্দিপাড়া, বাসাবো, মালিবাগ ও রামপুরা বাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।
বিক্রেতারা জানিয়েছেন, প্রতি ঈদেই চাহিদা বাড়ার কারণে মুরগি ও গরুর মাংসের দামে কিছুটা বাড়ে। তবে, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার মুরগি ও মাংসের দাম তুলনামূলক কম বেড়েছে। ঈদে প্রতিটি পরিবার পোলাও, রোস্ট, বিরিয়ানির জন্য মুরগি ও গরুর মাংস কেনেন। তাই, চাহিদার সঙ্গে দামও বেড়েছে।
বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগি কেজিপ্রতি খুচরা বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৪০ টাকায়। গত সপ্তাহে দাম ছিল ২১০ থেকে ২২০ টাকার মধ্যে। একইভাবে পাকিস্তানি মুরগি কেজিপ্রতি খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৩৩০ থেকে ৩৪০ টাকায়। এ মুরগি গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৩০০ থেকে ৩১০ টাকায়। দেশি মুরগি ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে।
কয়েকদিন আগেও ৭৫০ টাকা কেজিতে গরুর মাংস কিনেছেন ক্রেতারা। আজ ৮০০ টাকার নিচে গরুর মাংস বিক্রি করা হচ্ছে না। তবে, কিছু কিছু এলাকায় ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা দরে গরুর মাংস বিক্রি করতে দেখা গেছে। তবে, সেই মাংসের সঙ্গে অতিরিক্ত চর্বি ও হাড় যুক্ত করে বিক্রি করা হচ্ছে। ৫০ টাকা বেড়ে খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ২৫০ টাকা কেজি দরে।
অন্যান্য বারের চেয়ে এবারের ঈদে নিত্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল আছে। প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১২৫ টাকায়। গতবার ঈদের আগে চিনি কিনতে হয়েছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায়। সয়াবিন তেলও সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি হচ্ছে—প্রতি লিটার ১৭৫ টাকা। ভালো মানের সুগন্ধি চাল ১১৫ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত বছরের ঈদের সময়ের চেয়ে প্রায় ২০ টাকা কম দামে মিলছে সুগন্ধি চাল।
প্যাকেট সেমাই বিক্রি হচ্ছে গায়ে লেখা দামেই। খোলা মোটা সেমাই প্রতি কেজি ২০০ থেকে ২৪০ টাকা, খোলা চিকন সেমাই ১০০ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
মসলাজাতীয় পণ্যের মধ্যে পেঁয়াজের দাম এখনো কম। প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে। রসুন কেজিপ্রতি ২০০ থেকে ২২০ টাকা এবং দেশি রসুন কেজিপ্রতি ১০০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি আদা বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকায়। তবে, অস্বাভাবিক দর এলাচের। কয়েক মাস ধরেই এলাচের দাম বেশি। খুচরা ব্যবসায়ীরা মানভেদে কেজিপ্রতি এলাচ বিক্রি করছেন ৫ হাজার থেকে ৫ হাজার ৪০০ টাকা দরে। প্রতি কেজি জিরা ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, লবঙ্গ ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা এবং দারুচিনি ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
নন্দিপাড়া বাজারে হাসান গোস্ত বিতানের স্বত্বাধিকারী মো.
একই বাজারের মেসার্স হিমাদ্রী স্টোরের কর্মচারী ইমরান হোসেন বলেন, ঈদকে কেন্দ্র করে পোলাওয়ের চাল, সেমাই, চিনি ও মসলা সামগ্রী বিক্রি বেশি হচ্ছে। দু’-একটি পণ্য ছাড়াই অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম তেমন বাড়েনি।
গোরান বাজারের মুরগি ব্যবসায়ী সলিমুল্লাহ জানান, সপ্তাহের ব্যবধানে মুরগির দাম ২০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ঈদের কারণে মুরগির দাম বেড়েছে। ব্রয়লার মুরগি কেজিপ্রতি ২২০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। সোনালী মুরগি প্রতি কেজি ৩৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
দক্ষিণ গোরানে ইব্রাহিম গোস্ত দোকানে মাংস কিনতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী মীর আবু বক্কর অমি বলেন, আজকে মাংসের দোকানগুলোতে খুব চাপ। ক্রেতাদের ভিড় অনেক বেশি। ঘণ্টাখানেক দাঁড়িয়ে থেকে গরুর মাংস কিনলাম। এখানে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭০০ টাকায় কিনেছি। অন্যান্য দোকানের চেয়ে এখানে দাম একটু কম। তবে, চর্বি ও হাড়ের পরিমাণ তুলনামূলক বেশি।
ঢাকা/রফিক
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অন য ন য ম রগ র ২০ ট ক ২০ থ ক র ম রগ
এছাড়াও পড়ুন:
লালপুরে ‘আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের’ প্রতিবাদে জামায়াতের বিক্ষোভ
‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের অপতৎপরতা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের’ প্রতিবাদে নাটোরের লালপুরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জামায়াতে ইসলামী। উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামে ঈদের নামাজ শেষে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ নেতা–কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে বিএনপির একজন গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এই বিক্ষোভ করে লালপুর উপজেলা জামায়াত।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় উপজেলা জামায়াতের আয়োজনে শ্রীসুন্দরী হাইস্কুল থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি লালপুর ত্রিমোহনী চত্বর প্রদক্ষিণ শেষে রামকৃষ্ণপুর চিনিবটতলা মোড়ে গিয়ে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
আরও পড়ুনঈদের নামাজ শেষে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান, আওয়ামী লীগ-বিএনপি সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ ১২২ ঘণ্টা আগেবিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আবুল কালাম আজাদ। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন নাটোর জেলা জামায়াতের শুরা ও কর্ম পরিষদ সদস্য আব্দুল ওহাব। আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাসুদ রানা, সহকারী সেক্রেটারি হাফেজ হাফজাল হোসেন, নাটোর জেলা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জাহিদ হাসানসহ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা–কর্মীরা।
সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনী প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া চালিয়েছে এবং শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছে, কিন্তু এখনো তারা আইনের আওতায় আসেনি। বক্তারা বলেন, শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে গেলেও তার দোসররা দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। ঈদের নামাজ শেষে আওয়ামী ক্যাডার বাহিনী বিএনপি কর্মীদের ওপর গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটিয়েছে। এই ঘটনায় এখনো কেউ গ্রেপ্তার হয়নি, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।
বক্তারা প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার করতে হবে, অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করা হবে।