ময়মনসিংহের গৌরীপুরে ট্রাকের সঙ্গে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে একই পরিবারের মা, ২ মেয়ে ও নানী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ২ জন।

রোববার সকাল ৬টা ৩০ মিনিটে গাজীপুর এলাকার প্রগতি ফিড মিলের সামনে ময়মনসিংহগামী ট্রাকের সঙ্গে গৌরীপুরগামী ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে এ ঘটনা ঘটে। 

নিহতরা হলেন, একই উপজেলার ভাংনামারী ইউনিয়নের দুব্রারচর গ্রামের  কুলসুমা বেগম (৯৫), মেয়ে মো.

মানিকের স্ত্রী দিলরুবা (৪০), দুই মেয়ে প্রীতি (০৭) ও রীতি (১৪)। 

এছাড়াও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন একই পরিবারের দুই মেয়ে মাহি (১৬) ও শ্যামলী (২০)। 

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গৌরীপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেবাশীষ কর্মকার ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডাক্তার জাকিউল ইসলাম। 

পুলিশ জানায়, সকাল সাড়ে ৬টায় গৌরীপুর থেকে ময়মনসিংহগামী একটি ট্রাকের সঙ্গে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। অটোরিকশার চালক প্রতিবন্ধী ছিলেন। 

নিহত দিলরুবার মামা কামরুল হাসান আকন্দ জানান, দিলরুবা-মানিক দম্পতি গ্রামের বাড়ি গৌরীপুর উপজেলার ভাংনামারী ইউনিয়নে। পড়ালেখা ও কর্মসূত্রে তারা ময়মনসিংহ নগরীর নাটক ঘরের এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন। ঈদের ছুটিতে তারা ময়মনসিংহের বাসা থেকে অটোরিকশা যোগে গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। পরে তাদের অটোরিকশাটি ময়মনসিংহগামী ট্রাকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই ৩ জনের মৃত্যু হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর মৃত্যু হয় দিলরুবার। একই পরিবারের আহত ২ জনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তারা চিকিৎসাধীন রয়েছেন। 

নিহত দিলরুবার ভাই আয়তুল ইসলাম বলেন, একটি দুর্ঘটনায় আমাদের পুরো পরিবারটি ধ্বংস হয়ে গেল। ঈদের আনন্দে তারা বাড়ি যাচ্ছিল, আমাদের পরিবারে আর কোনদিন ঈদের আনন্দ আসবে না। 

পুলিশ আরও জানায়, এ ঘটনায় ট্রাকচালক দ্রুত পালিয়ে যায়। আমরা হাসপাতালে খোঁজ খবর রাখছি। পরবর্তীতে আইনি কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সড়ক দ র ঘটন ন হত পর ব র

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশ থেকে চট্টগ্রামকে বিচ্ছিন্ন করার হুমকি ত্রিপুরার মহারাজার

ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের মহারাজা ও টিপরা মোথা নেতা প্রদ্যোৎ মাণিক্য বাংলাদেশ থেকে চট্টগ্রামকে বিচ্ছিন্ন করার হুমকি দিয়েছেন। মঙ্গলবার এনডিটিভি অনলাইন ও হিন্দুস্তান টাইমস এ তথ্য জানিয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দুটির দাবি, সম্প্রতি চীন সফরের সময় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস নাকি বলেছিলেন, “উত্তর-পূর্বে ভারতের সাতটি রাজ্য স্থলবেষ্টিত অঞ্চল। তাদের সমুদ্রে পৌঁছনোর কোনো উপায় নেই। এই অঞ্চলে আমরাই সমুদ্রের দেখভাল করি। এটি একটি বিশাল সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করে। এটি চীনা অর্থনীতির একটি সম্প্রসারণ হতে পারে।”

প্রদ্যোৎ মাণিক্য দাবি করেছেন, ১৯৪৭ সালে চট্টগ্রামের পাহাড়ি মানুষজন ভারতের সঙ্গেই থাকতে চেয়েছিলেন। তখন চট্টগ্রাম বন্দর হাতছাড়া করা ভারতের জন্যে ঠিক হয়নি।

তিনি হুমকি দিয়ে বলেছেন, “চট্টগ্রাম বন্দর ত্রিপুরা থেকে খুব একটা দূরে নয়।  বাংলাদেশের মধ্যে দিয়েই ভারতের রাস্তা করে নেওয়া উচিত।”

তিনি বলেছেন, “আমাদের আদিবাসীদের সমর্থন করে সমুদ্রে যাওয়ার পথ তৈরি করার সময় এসেছে ভারতের। একসময় চট্টগ্রাম শাসন করত এই আদিবাসীরাই। তাই আমরা আর এই অকৃতজ্ঞ শাসনের উপর নির্ভরশীল নই। ভারতের সবচেয়ে বড় ভুল ছিল ১৯৪৭ সালে বন্দরটি ছেড়ে দেওয়া। সেখানে বসবাসকারী পাহাড়ি জনগণ ভারতের অংশ হতে চাইতেন। জনাব ইউনুস মনে করতে পারেন যে, তিনি সমুদ্রের অভিভাবক, কিন্তু বাস্তবতা হল তিনি প্রায় ৮৫ বছর বয়সি একজন স্টপ-গ্যাপ নেতা। ভুলে গেলে চলবে না, তিনি যে বন্দরের কথা বলছেন তা ত্রিপুরা থেকে মাত্র কয়েক মাইল দূরে।”

চিকেনস নেক করিডরে পরিকাঠামোগত উন্নয়নের ওপর জোর না দিয়ে বাংলাদেশকে ভেঙে ফেলার পরামর্শ দিয়ে ত্রিপুরার মহারাজা বলেন, “উদ্ভাবনী ও চ্যালেঞ্জিং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের জন্য কোটি কোটি টাকা ব্যয় করার পরিবর্তে আমরা বাংলাদেশকে ভেঙে ফেলতে পারি এবং সমুদ্রে যাওয়ার জন্যে আমাদের নিজস্ব রাস্তা পেতে পারি। পার্বত্য চট্টগ্রামে সবসময় আদিবাসী উপজাতিদের বসবাস ছিল। তারা ১৯৪৭ সাল থেকে সবসময় ভারতের অংশ হতে চেয়েছিল। সেখানে লাখ লাখ ত্রিপুরী, গারো, খাসি এবং চাকমা জনগোষ্ঠী রয়েছে। তারা ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে বসবাস করছে।”

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ