Prothomalo:
2025-04-01@09:51:14 GMT

পরিবারে নেই শুধু আবু সাঈদ

Published: 30th, March 2025 GMT

পূর্ব দিকে মাটির ঘর। বারান্দা ঝাড়ু দিচ্ছেন মনোয়ারা বেগম। কাছে গেলে চেয়ার এগিয়ে দিয়ে বসতে বললেন। তাঁর চোখেমুখে বিষাদের ছায়া। সব থেকেও কী যেন নেই। বললেন, ‘এক দিন পর ঈদ। মনটা ভালো নাই। ধনসম্পদ এখন থাকি কী হবে। ছইল নাই, মনোত খুশি নাগে না।’ (ছেলে নেই, তাই মনে সুখ নেই)

মনোয়ারা বেগম শহীদ আবু সাঈদের মা। আবু সাঈদ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ১৬ জুলাই রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর ফটকের সামনে পুলিশের গুলিতে নিহত হন। তিনি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। বাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জের বাবনপুর জাফরপাড়া গ্রামে।

গতকাল শনিবার সকালে আবু সাঈদের বাড়িতে গিয়ে মনোয়ারা বেগমের সঙ্গে কথা হয়। তখন আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন ও বড় ভাই আবু হোসেন পাশের খালাশপীর বাজারে ঈদের কেনাকাটা করতে গেছেন। আবু সাঈদরা ১০ ভাই–বোন। অভাবের সংসারে আবু সাঈদই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন বলে জানালেন মনোয়ারা বেগম। ছেলেকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখছিলেন তাঁরা; কিন্তু আবু সাঈদ মারা যাওয়ায় তাঁদের স্বপ্ন ভেঙে গেছে। মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘গত কোরবানির ঈদের আবু সাঈদ বাড়িতে ছিল। বাড়ি থেকে এক বন্ধুর বিয়েতে গিয়েছিল। তার এক দিন পর বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে যায়। আর আসেনি। এরপর তার লাশ আসে।’

কথা বলতে বলতে মনোয়ারা বেগম আবু সাঈদের থাকার মাটির ঘর ও খাট দেখিয়ে দিলেন। মাটির ঘরের পশ্চিমে ইটের টিনশেড ভবন। ওই ঘরের পেছনে আবু সাঈদের কবর।

মনোয়ারা বেগমের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, আবু সাঈদ নতুন টিনশেড ঘরের নির্মাণকাজ শুরু করেছিলেন। সেখানে তাঁর থাকার কথা ছিল। এর মধ্যে আবু সাঈদ মারা গেলেন। সরকারি-বেসরকারি অনুদানে তাঁরা অসমাপ্ত ঘরের কাজ শেষ করেছেন। নতুন টিনশেড ভবনের একটি কক্ষে তাঁর মা–বাবা থাকেন।

মনোয়ারা বেগমের সঙ্গে কথা বলার একপর্যায়ে খালিশপুর বাজার থেকে বাসায় ফিরেন আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন। মকবুল হোসেন বলেন, ‘ছেলেটার কথা মনে হলে বাবা অন্তরে সয় না। ক্যাবা পড়বার দিলও। না পড়ি মূর্খ থাকিল হয় কিষান (দিনমজুর) দিয়া খাইত, তা–ও জীবত থাকিল হয়। এখন দেখতিছি তা নোয়ায়। উয়ার একটা উদ্দেশ্যে ছিল, দ্যাশকে পাল্টাবার। আমার ছেলে উপলক্ষ, আল্লার তরফ থাকি স্বৈরাচার বাধ্য হইছে পালাইতে।’

কথার এক পর্যায়ে আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেনের চোখে পানি চলে আসে। তিনি বলেন, ‘ছেলেটার পড়ালেখার খরচ জোগাতে পারিনি। সে প্রাইভেট পড়িয়ে লেখাপড়ার খরচ চালাত। ঈদের সময় মা–বাবার জন্য অবশ্যই কিছু আনত। এগুলো ভাবলে কষ্ট লাগে। সবকিছু খালি খালি মনে হয়।’

শহীদ বীর আবু সাঈদের দুই হাত প্রসারিত বুক টান করে দাঁড়ানোর অকুতোভয় দৃশ্যটি বীরত্বের প্রতীক হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: মকব ল হ স ন স ঈদ র ব ব গম র মন য় র

এছাড়াও পড়ুন:

মেসির দেহরক্ষীকে নিষেধাজ্ঞা

দিনের প্রায় ২৪ ঘণ্টাই লিওনেল মেসির নিরাপক্ষা নিশ্চিত করেন দেহরক্ষী ইয়াসিন চুকো। মেসির পরিবারকে নিরাপদে রাখতে পালাক্রমে নিরাপত্তা দিয়ে থাকে ইয়াসিনের ৫০ সদস্যের একটি দল।

কিন্তু যেখানে মেসির সবচেয়ে বেশি নিরাপত্তাহীনতায় ভোগার সম্ভাবনা বেশি, সেই মাঠেই দেহরক্ষী ইয়াসিনকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। স্প্যানিশ ক্রীড়া দৈনিক মার্কা ও ফুটবল বিষয়ক ওয়েবসাইট গোল ডট কম এই তথ্য জানিয়েছে।

ইয়াসিনকে মাঠে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় এখন থেকে তিনি আর ইন্টার মায়ামির ম্যাচ চলাকালীন সাইডলাইনে থাকতে পারবেন না। এই নিষেধাজ্ঞা মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) পাশাপাশি কনকাকাফ চ্যাম্পিয়নস কাপেও বলবৎ থাকবে। তবে ইয়াসিন ইন্টার মায়ামির ড্রেসিং রুম ও মিক্সড জোনে মেসির পাশে থাকতে পারবেন।

মাঠে মেসিকে এভাবেই রক্ষা করেন দেহরক্ষী ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ