দক্ষিণ চট্টগ্রামের শতাধিক গ্রামে ঈদ উদযাপন
Published: 30th, March 2025 GMT
সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে আজ রোববার দক্ষিণ চট্টগ্রামের মির্জাখীল দরবার শরীফের অনুসারী শতাধিক গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ পবিত্র ঈদুল ফিতরের উদযাপন করছেন। সকাল ১০টায় মির্জাখীল দরবার শরীফের মাঠে অনুষ্ঠিত ঈদ জামাতের ইমামতি করেন দরবারের বড় শাহজাদা ড. মাওলানা মোহাম্মদ মকছুদুর রহমান। জামাতে আনুমানিক এক হাজারের বেশি মুসল্লি একসঙ্গে ঈদের নামাজ ও মোনাজাত আদায় করেছেন।
এদিকে নামাজ শুরুর আগে দরবারের পক্ষ হতে দরবার শরীফে আসা মুসল্লিদের নাস্তা পরিবেশন করা হয়।
দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকানিয়া, চন্দনাইশ, লোহাগাড়া, বাঁশখালী, বোয়ালখালী, আনোয়ারা, পটিয়া, কর্ণফুলী উপজেলার মির্জাখীল দরবার শরীফের আকিদার মুসলমানেরা এই ঈদ উদযাপন করছেন।
প্রায় আড়াই শতাধিক বছর ধরে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে রোজা রাখা ও ঈদ উদযাপন করে আসছেন সাতকানিয়া উপজেলার মির্জাখীল দরবার শরীফের অনুসারীরা।
মির্জাখীল দরবার শরীফের মেঝ শাহজাদা মোহাম্মদ মছুদুর রহমান বলেন, ‘প্রায় আড়াইশ বছর আগে সাতকানিয়া উপজেলার মির্জাখীল গ্রামে হযরত মাওলানা মোখলেছুর রহমান (রহ.
তিনি জানান, মির্জাখীল এলাকা ছাড়াও উপজেলার গারাংগিয়া, সোনাকানিয়া, ছোটহাতিয়া, আছারতলি, সাইরতলি, এওচিয়া, খাগরিয়া, ছদাহা, গাটিয়াডাঙ্গা; লোহাগাড়া উপজেলার কলাউজান, বড়হাতিয়া, পুটিবিলা, চরম্বা ও চুনতি; বাঁশখালী উপজেলার জালিয়াপাড়া, ছনুয়া, মক্ষিরচর, চাম্বল, শেখেরখীল, ডেংরা, তৈলারদ্বীপ ও কালিপুর পটিয়া উপজেলার হাইদগাঁও, বাহুলী, ভেল্লাপাড়াসহ শতাধিক গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ আজ রোববার ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন। এছাড়া চট্টগ্রামের হাটহাজারী, সন্দ্বীপ, ফটিকছড়ি, বান্দরবানের লামা, আলীকদম, নাইক্ষ্যংছড়ি, কক্সবাজার সদর, টেকনাফ, মহেশখালী, কুতুবদিয়ার বেশ কয়েকটি গ্রামে মির্জাখীল দরবার শরিফের অনুসারী রয়েছেন; তারাও আজ ঈদ উদযাপন করছেন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বান্দরবানে সাংগ্রাই উৎসবের সমাপ্তি
বান্দরবানের রাজার মাঠে ‘মৈতা রিলং পোয়ে’ বা মৈত্রী পানি বর্ষণ উৎসবের মধ্য দিয়ে মারমা জনগোষ্ঠীর প্রধান ও প্রাচীনতম উৎসব সাংগ্রাইয়ের আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয়েছে।
গত ১২ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া এ উৎসব চলে টানা সাত দিন। উৎসবজুড়ে ছিল বর্ণাঢ্য আয়োজন, নানান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ঐতিহ্যবাহী ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং সামাজিক সম্প্রীতির বহুমাত্রিক বার্তা। মারমা সম্প্রদায়ের এই ঐতিহ্যবাহী উৎসবটি শুধু আনন্দ ও উদযাপনের নয়, বরং এটি পারস্পরিক সৌহার্দ্য, ভ্রাতৃত্ব ও সংস্কৃতির মিলনের এক অনন্য নিদর্শন।
শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) মৈত্রী পানি বর্ষণ উৎসবের শেষ দিনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা। প্রধান অতিথি মৈত্রী পানি বর্ষণ উৎসবে পানি ছিটিয়ে উদ্বোধন করেন।
এসময় বান্দরবান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক থানজামা লুসাই, জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি, পুলিশ সুপার শহিদুল্লাহ কাওছার ও অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
মারমা তরুণ-তরুণীরা বলেন, “মারমা জনগোষ্ঠীর প্রধান উৎসব সাংগ্রাইয়ের মাধ্যমে পুরাতন বছরের গ্লানি দূর করে নতুন বছরের আগমন উদযাপন করা হয়। উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ আয়োজিত রাজার মাঠে মৈতা রিলং পোয়ে বা মৈত্রী পানি বর্ষণ যেখানে পানি ছিটিয়ে শুভেচ্ছা ও সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দেন সবাই। সাংগ্রাই উৎসব শুধু আনন্দের নয়, বরং সামাজিক বন্ধন, ধর্মীয় মূল্যবোধ এবং ঐতিহ্য রক্ষার প্রতীক। উৎসবের এই আয়োজনে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে পড়ে পুরো পার্বত্য অঞ্চলে।”
সাংগ্রাই উৎসব উদযাপন পরিষদের সদস্যরা বলেন, “সাংগ্রাই উৎসবের বিভিন্ন দিনে ছিল মারমা ঐতিহ্যবাহী নৃত্য-সঙ্গীত, বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, তরুণ-তরুণীদের পানি খেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। উৎসবের শেষ দিন ছিল সবচেয়ে রঙিন ও প্রাণবন্ত। রাজার মাঠে হাজারো মানুষের অংশগ্রহণে এক আনন্দঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। এতে অংশগ্রহণ করেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনিক কর্মকর্তাসহ স্থানীয় ও বিদেশি পর্যটকরাও।”
ঢাকা/চাইমং/এস