৬ দিন আগে ভাইয়ের বাড়িতে (মধ্যনগর গ্রামে) বেড়াতে যান বিউটি চক্রবর্তী (৫০)। তাঁর ছেলে প্রণয় চক্রবর্তী মামার বাড়িতে থেকেই পড়াশোনা করেন। তিনিই মাকে নৌকায় তুলে দেন। নৌকায় মাকে তুলে দেওয়ার সময় প্রণয় বলেছিলেন, ‘সাবধানে যাও, আমি ঈদের ছুটিতে বাড়িতে যাবো।’ আর বাড়ি ফেরা হলো না বিউটি চক্রবর্তীর, মায়ের সাথে আর দেখাও হলো না ছেলের। বাড়ির কাছাকাছি এসে নৌকাডুবিতে প্রাণ হারান বিউটি চক্রবর্তী।

শনিবার (২৯ মার্চ) সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জে যাত্রীবাহী নৌকাডুবির ঘটনায় নারী ও শিশুসহ ৪ জনের মৃত্যু হয়। উপজেলার বেহেলী ইউনিয়নের বৌলাই নদীতে এ নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। প্রাথমিকভাবে ৫ জনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধারের কথা পুলিশ জানালেও পরে একজনের জ্ঞান ফেরে।

নিহত ৪ জন হলেন নোয়াপাড়ার বিউটি চক্রবর্তী (৫০), মোহনগঞ্জের হাতনি গ্রামের কল্পনা সরকার (৪৫), কলমাকান্দা উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামের সুজিত সরকারের পাঁচ বছরের শিশু কন্যা গঙ্গা সরকার (৫) ও মোহনগঞ্জের হাতনি গ্রামের রুদ্রা সরকার (৬)।

এদিকে নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলার হাতনি গ্রামের নিরদ সরকারের ছেলে নিরব সরকারকে (১০) সিলেট ওসমানী মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে।

বিউটি চক্রবর্তী মধ্যনগরে ভাইয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন জানিয়ে তার স্বামী তাপস চক্রবর্তী বলেন, মধ্যনগরে আমার ছেলে প্রণয় চক্রবর্তী তাকে (বিউটি চক্রবর্তী) নৌকায় তুলে দেয়। রাতে হঠাৎ খবর পাই নৌকাডুবি হয়েছে। তাৎক্ষণিক ছুটে যাই, গিয়ে দেখি সব শেষ। লাশ নিয়ে বাড়ি ফিরেছি, ছেলেও খবর পেয়ে মধ্যনগর থেকে ছুটে এসেছে। রাতেই দাহ সম্পন্ন হয়েছে।

ছেলে প্রণয় চক্রবর্তী বলেন, আমিই মাকে নৌকায় তুলে দিয়েছি। এরপর আর কিছু বলতে পারলেন না প্রণয়। মা হারানোর শোকে কন্ঠরোধ হয়ে যায় তার।

নৌকার যাত্রী লিপটন তালুকদার বলেন, নৌকার মধ্যে আমি ও আমার স্ত্রী ঘুমিয়ে ছিলাম। হঠাৎ নৌকার মাঝির এক সহকারী আমাকে বলেন, ‘এই লিপটন তাড়াতাড়ি ওঠ, নৌকা ডুবে যাচ্ছে।’ ওঠে বসতে বসতে নৌকা তলিয়ে যায়। জানালা দিয়ে আমার স্ত্রীকে নিয়ে বের হয়ে রক্ষা পেয়েছি।

তিনি আরও বলেন, ৬০-৭০ জন যাত্রী ছাড়াও নৌকার মধ্যে টিন, সিমেন্ট, ধান, কাঠসহ নানা জিনিসপত্র বোঝাই ছিলো।

জামালগঞ্জ থানার ওসি মো.

সাইফুল ইসলাম জানান, ট্রলারডুবিতে চারজন মারা গেছেন। এরমধ্যে দুইজন মহিলা ও দুইজন শিশু। একজন গুরতর আহত তাকে সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার অবস্থা আশংকাজনক।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প রণয় সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

শিক্ষার্থী হত্যায় উত্তাল নেট পাড়া, ওমর সানির ক্ষোভ

রাজধানীর বনানীতে অবস্থিত প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্বর হামলায় নিহত হয়েছেন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র জাহিদুল ইসলাম পারভেজ (২৩)। ময়মনসিংহের এই তরুণ শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২৩ তম ব্যাচের ছাত্র ছিলেন।

এ ঘটনার পরপরই বিষয়টি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, শুরু হয় তীব্র জনরোষ। মানুষ বিচারের দাবিতে একযোগে সরব হয়েছেন। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেতা ওমর সানি।

ফেসবুক দেওয়া এক স্ট্যাটাসে ওমর সানি লিখেছেন, “মেয়ে দেখে কেউ হাসল, কেউ কাঁদল— এতেই কি একটা প্রাণ চলে যাবে? রাষ্ট্র মেয়ে দু’টার অ্যারেস্টের ছবি দেখান, যারা মার্ডার করেছে তাদের ছবি দেখান। প্রকাশ্যে ফাঁসির ব্যবস্থা করেন। মানুষ দেখে আবার হাসাহাসি করুক, অসুবিধা নাই। রাষ্ট্রের ওপর কনফিডেন্স আছে, অপেক্ষায় থাকলাম।”

আরো পড়ুন:

বান্ধবীকে বিয়ে করলেন নায়িকা

আড়ালে গিয়ে অরিন্দমকে গালাগাল দেয়: স্বস্তিকা

ঘটনার সূত্রপাত হয়, দুই বহিরাগত মেয়েকে দেখে হাসাহাসির জেরে। অভিযোগ উঠেছে, ওই দুই তরুণীর অভিযোগের ভিত্তিতেই বহিরাগতদের একটি দল পারভেজ ও তার বন্ধুদের ওপর হামলা চালায়। নির্মম এ ঘটনার পর আহত পারভেজকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

গত ১৯ এপ্রিল, রাতে নিহতের মামাতো ভাই হুমায়ুন কবীর বাদী হয়ে বনানী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বহিরাগতসহ আটজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং অজ্ঞাতনামা আরো ২০-৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এরই মধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ আদালতে তোলা হলে ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ছানাউল্যাহ।

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ