মিয়ানমারে ভূমিকম্পে দুই কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে: জাতিসংঘ
Published: 30th, March 2025 GMT
মিয়ানমারের জাতিসংঘের আবাসিক এবং মানবিক সমন্বয়কারী মার্কোলুইগি করসি বলেছেন, ভূমিকম্পে প্রায় দুই কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এটি বেশ বড় একটি এলাকা যা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই এলাকায় প্রায় ২ কোটি মানুষ বসবাস করেন। এই মুহূর্তে হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে। খবর-বিবিসি
মিয়ানমারে শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর হতাহতদের উদ্ধার ও চিকিৎসা সেবা এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে ১,৬০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হওয়ার পর ৪০ ঘণ্টারও বেশি সময় হয়ে গেছে। তবে উদ্ধার তৎপরতা চালাতে গিয়ে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে দেশটির সরকারকে।
চিকিৎসা সরঞ্জামের তীব্র অভাব দেখা দিয়েছে বলে জানা গেছে। জাতিসংঘ বলছে, চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাব ব্যাহত করছে ত্রাণ তৎপরতা। এসব সীমাবদ্ধতার মধ্যে উদ্ধারকারীরা যখন জীবিতদের সন্ধান করছেন তখন জাতিসংঘ জানিয়েছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে চিকিৎসা সরঞ্জামের তীব্র অভাব ত্রাণ প্রচেষ্টা ব্যাহত করছে। খবর-বিবিসি
ভূমিকম্পে রাস্তাঘাট এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার মতো গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এর সঙ্গে সামরিক সরকার, বিদ্রোহী গোষ্ঠী এবং সশস্ত্র যোদ্ধাদের মধ্যে চলা গৃহযুদ্ধের ফলে এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্ধারে কাজ করা সাহায্য সংস্থাগুলোর পক্ষে কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এদিকে বিবিসি বার্মিজ জানিয়েছে, আবারও একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প হতে পারে এই আশঙ্কায় অনেক মানুষ রাতে খোলা আকাশের নিচে ঘুমিয়েছে। দুর্যোগ মোকাবিলা করার জন্য মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকার আন্তর্জাতিক সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে। তবে বিরোধী ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট জোর দিয়ে বলছে, যেকোনো সহায়তা যেন স্বাধীনভাবে ও স্থানীয় নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়।
মিয়ানমারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহর মান্দালয়ের ঐতিহাসিক অনেক ভবন এই ভূমিকম্পে মাটিতে মিশে গেছে। উদ্ধারকর্মীরা খালি হাতে ধ্বংসস্তুূপ ঘেঁটে দেখছেন।
উদ্ধারকাজে যুক্ত একজন জানিয়েছেন, পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে গিয়ে অসহায় বোধ করছেন তারা। ধ্বংসস্তূপে আটকা পড়া মানুষের আর্তচিৎকার ভেসে আসছে। খালি হাতেই ধ্বংসস্তূপ সরাচ্ছিলেন তিনি।
মান্দালয়ের আরেক বাসিন্দা জানিয়েছেন, একটা হোটেল ভেঙে পড়েছে যার নিচে আটকে রয়েছেন অনেকে। পেশায় শিক্ষিকা ওই নারী বলছিলেন, আমি মায়েদের কান্নার আওয়াজ পাচ্ছিলাম। তাদের সন্তানেরা ভেঙে পড়া ওই হোটেলের স্তূপের নিচে আটকে রয়েছে। এই দৃশ্য দেখা যায় না। এই ভূমিকম্প বিপর্যয় ডেকে এনেছে। আমাদের সাহায্যের প্রয়োজন। মিয়ানমারের বাসিন্দাদের অনেকের মধ্যেই আতঙ্কের ছাপ রয়েছে এখনও।
২০২১ সাল থেকে মিয়ানমার শাসন করা সামরিক জান্তা দেশটির সাগাইং, মান্দালয়, মাগওয়ে, বাগো, ইস্টার শান রাজ্য এবং নেপিডো অঞ্চলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। দেশটির দুই বড় শহর, মান্দালয় ও ইয়াংগুনের বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা এখনও বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মাধবপুরে ঈদ ঘিরে পুলিশের তৎপরতা
হবিগঞ্জের মাধবপুরে ঈদে চুরি, ছিনতাই ও বিভিন্ন অপরাধ ঠেকাতে পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে। সিলেট বিভাগের প্রবেশদ্বার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে অপরাধ ঠেকাতে নির্মাণ করা হয়েছে দুটি অস্থায়ী ওয়াচ টাওয়ার। এর ফলে মাধবপুর বাস টার্মিনাল, হাট বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় অপরাধ নিয়ন্ত্রণে এসেছে। আগে ঈদকে সামনে রেখে মাধবপুর বাজারে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতো। কিন্তু বাজারে ওয়াচ টাওয়ার দিয়ে নজরদারির কারণে বাজার এখন অপরাধ মুক্ত।
মাধবপুর বাজার কমিটির ব্যবসায়ী নেতা এমরান খান জানান, প্রতিবছর ঈদকে সামনে রেখে একটি অপরাধী চক্রকে খুব তৎপর দেখা যেত। বাজারে জিনিসপত্র কিনতে আসা লোকজনের টাকা পয়সা স্বর্ণালংকার চুরি ছিনতাই হয়ে যেত। নারীরা এসব অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল। কিন্তু এবার পুলিশ এসব অপরাধ রোধে আগাম প্রস্তুতি নেওয়ার কারণে কোনো অপরাধ ঘটেনি। বাজারে ব্যবসায়ী নেতারাও পুলিশকে সহযোগীতা করছে।
ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন জানান, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে নিরাপত্তা জোরদারের লক্ষ্যে জগদীশপুর মুক্তিযোদ্ধা চত্বর ও মাধবপুর উপজেলা সদরে দুটি ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ করা হয়েছে। ওয়াচ টাওয়ার বসানোর কারণে পুলিশ পরিস্থিতি সহজে নিয়ন্ত্রণে নিতে পেরেছে।
মাধবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ইতোমধ্যে ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন বিপণিবিতান, হাট বাজার, সড়কের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। নিরাপত্তা জোরদারের লক্ষ্যে স্পর্শকাতর স্থান, সড়ক, স্থাপনা, বিপণিবিতান, বাসস্ট্যান্ড, পুলিশ নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা ভাল রাখতে ৪টি ফাঁড়িসহ থানা পুলিশের সব সদস্য তাদের দায়িত্ব পালন করছে। কোনো পুলিশ ঈদে বাড়িতে যাবে না।
হবিগঞ্জ পুলিশ সুপার এ এন এম সাজেদুর রহমান জানান, ঈদকে সামনে রেখে হবিগঞ্জের আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ এলাকাভিত্তিক বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। মাধবপুরে ওয়াচ টাওয়ার থেকে সবার গতিবিধি অনুসরণ করা সহজ। কেউ অপরাধ করার চিন্তা করলে তাকে অপরাধ করার আগেই ধরা যাবে। এছাড়া ঈদে বিভিন্ন জেলা থেকে লোকজন হবিগঞ্জের চা বাগানসহ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে ভিড় করেন। এ সময় যাতে কোন ধরনের অঘটন না ঘটে পুলিশ সে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।