পৃথিবী আসলে কি সুপারনোভা কবরস্থান
Published: 30th, March 2025 GMT
বিজ্ঞানীরা সমুদ্রের তলদেশে একটি বিশাল কিলোনোভার খোঁজ পেয়েছেন। এই কিলোনোভার বয়স প্রায় ১০ লাখ বছরের পুরোনো বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। কিলোনোভা ঘটে যখন, বাইনারি নিউট্রন নক্ষত্র একে অপরের কাছাকাছি এসে সর্পিল আকারে সংঘর্ষের মুখে পতিত হয়। এসব নক্ষত্র থেকে মহাকাশে প্রচুর ভারী উপাদানমুক্ত হয়। আমাদের চন্দ্রপৃষ্ঠে কিলোনোভার অনেক নমুনা দেখা যায়।
সুপারম্যাসিভ নক্ষত্রের শেষ সময়কার অবস্থায় সুপারনোভা তৈরি হয়। তখন মহাকাশে প্রচুর ভারী উপাদানমুক্ত হওয়ার কারণে তার কিছু অংশ পৃথিবীতে চলে আসে। যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ইলিনয় আরবানা-চ্যাম্পেইনের জ্যোতির্বিজ্ঞানী ব্রায়ান ফিল্ডস ও তার দল গভীর সমুদ্র থেকে তেজস্ক্রিয় প্লুটোনিয়াম আইসোটোপের চিহ্ন আবিষ্কার করেছেন। এই চিহ্ন আসলে একটি কিলোনোভার অংশ বিশেষ বলে জানা গেছে। দুটি নিউট্রন তারার সংঘর্ষ থেকে আসা এই উপাদানের বয়স অনেক। প্রায় ১০ লাখ বছর পুরোনো বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। তখন এমন কোনো বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছিল বলে মনে করা হচ্ছে।
বিজ্ঞানী ব্রায়ান ফিল্ডস এ বছরের আমেরিকান ফিজিক্যাল সোসাইটি গ্লোবাল ফিজিকস সামিটের এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেন। আমরা একটি সুপারনোভা কবরস্থানে বাস করি বলে তিনি জানিয়েছেন। তিনি কয়েক দশক ধরে পৃথিবী ও চাঁদ উভয়ের মহাজাগতিক ধ্বংসাবশেষ বিশ্লেষণ করার কাজ করছেন। বিজ্ঞানীরা এর আগে ৩০ লাখ ও ৪ লাখ বছর আগের সুপারনোভার বর্জ্য খুঁজে পেয়েছিলেন। সেখান থেকে প্লুটোনিয়াম আবিষ্কৃত হয়।
যেসব তারার জীবন সুপারনোভা বিস্ফোরণে শেষ হয়, সেখান থেকে সব হাইড্রোজেন নিঃশেষ হয় হিলিয়ামের সঙ্গে। যখন তাদের হিলিয়াম ফুরিয়ে যায়, তখন লোহায় পরিণত না পৌঁছানো পর্যন্ত ভারী উপাদানে মিশ্রিত হতে থাকে। সেই সময় নিউট্রন নক্ষত্র কোনো একটি বাইনারি সিস্টেমে একে অপরকে প্রদক্ষিণ করলে পরস্পর ঘূর্ণমান অবস্থায় থাকে। এরপর তা আরও ভারী পদার্থ আকারে ছড়িয়ে পড়ে। এভাবে পৃথিবী সোনা, প্লাটিনাম, থোরিয়াম ও অন্যান্য ভারী উপাদান এসেছিল। সেই একই প্রক্রিয়ায় প্লুটোনিয়াম সাগরের তলদেশে জমা পড়েছে।
সূত্র: পপুলার মেকানিকস
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপ দ ন
এছাড়াও পড়ুন:
নেতার নামের খেলার মাঠ গ্রাম বদলে দিল স্থানীয়রা
আওয়ামী লীগ নেতা ইব্রাহিমের নামে নামকরণ করা খেলার মাঠ ও তাঁর পূর্বপুরুষের গ্রামের নামে নামকরণ করা ভাতকুড়া চালা গ্রামের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। সম্প্রতি এলাকাবাসী ওই দুটি নাম পরিবর্তন করে আগের নাম বহাল রেখে নামফলক সেঁটে দেন। ইব্রাহিম সখীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য।
জানা গেছে, গ্রামটির প্রকৃত নাম বহুরিয়া চতলবাইদ। গ্রামটির আয়তন বড় হওয়ায় ওই অংশটির নাম চতলবাইদ মধ্যপাড়া হিসেবে পরিচিত। আওয়ামী লীগ নেতা ইব্রাহিম তাঁর পূর্বপুরুষের গ্রামের নামে ওই অংশটির নামকরণ করেন ‘ভাতকুড়া চালা’। এ নিয়ে গ্রামবাসী সংক্ষুব্ধ হলেও ওই সময় ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়নি। রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হওয়ায় চতলবাইদ গ্রামবাসী ভাতকুড়া চালা নামটি বাতিল করে চতলবাইদ মধ্যপাড়া নাম বহাল করেছেন।
আওয়ামী লীগ নেতা ইব্রাহিমের নামে নামকরণ করা খেলার মাঠটির আগের নাম ছিল মঙ্গল খাঁর মাঠ। স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার সুবাদে একক প্রভাব খাটিয়ে ইব্রাহিম ওই খেলার মাঠটি তাঁর নিজ নামে ‘ইব্রাহিমের মাঠ’ হিসেবে নামকরণ করেন। সম্প্রতি এলাকাবাসী ইব্রাহিমের মাঠের নাম পরিবর্তন করে মঙ্গল খাঁর মাঠ পুনর্বহাল করেছেন। সপ্তাহ খানেক আগে ওই দুটি নাম খোদাই করা ইট-পাথরের ফলকে লিখে মাঠঘেঁষা পাকা সড়কের পাশে সেঁটে দিয়েছেন এলাকাবাসী।
টাঙ্গাইল বন বিভাগের হতেয়া রেঞ্জের বহুরিয়া চতলবাইদ মৌজার সংরক্ষিত বনের ২৮৩১ নম্বর দাগের একই জমিতে ওয়াক্ত নামাজের জন্য নির্মিত পাকা ভবনটিতে ইব্রাহিম তাঁর বাবা হাজি হাতেম আলীর নামে সাইনবোর্ড সেঁটে দিয়ে সামাজিক মসজিদে রূপান্তর করেন। এলাকাবাসী সভা করে ওই মসজিদের দেয়ালে সেঁটে দেওয়া হাজি হাতেম আলী নামটি পরিবর্তন করে চতলবাইদ মধ্যপাড়া নামকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ ছাড়া বনের একই দাগের জমিতে ইব্রাহিম তাঁর বাবা হাজি হাতেম আলী নামে ঈদগাহ মাঠ ও সামাজিক কবরস্থান নির্মাণের পরিকল্পনা করেছিলেন। এলাকাবাসী ইব্রাহিমের সেই পরিকল্পনা বাতিল করে চতলবাইদ মধ্যপাড়া গ্রামটির নামেই ঈদগাহ মাঠ ও কবরস্থান নির্মাণকাজ শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা রেজাউল করিম।
চতলবাইদ গ্রামের বাসিন্দা সোমেস উদ্দিন সমকালকে বলেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ইব্রাহিমের খুবই দাপট ছিল। ইব্রাহিম শালগজারির সব বন উজাড় করে ফেলেছে। বন বিভাগও তাঁর বিরুদ্ধে এক পা এগোয়নি। শালগজারির সব টাকা ইব্রাহিমের পকেটে। কেউই তাঁর অপকর্মের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পায়নি। সমকালে সংবাদটি প্রকাশের পর থেকে গ্রামবাসী ঐক্যবদ্ধ হয়ে সম্প্রতি গ্রামের নামটি ফিরিয়ে এনেছে। মাঠের নামটিতেও পরিবর্তন আনা হয়েছে।
পলাতক আওয়ামী লীগ নেতা ইব্রাহিম মোবাইল ফোনে সমকালকে বলেন, ‘আমি রাজনৈতিক রোষানলের শিকার। আমার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মামলা থাকার সুযোগে গ্রামের কতিপয় ব্যক্তি যা-ইচ্ছে তাই করছে।’
হতেয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা এস এম আবদুর রশীদের ভাষ্য, বনের জমি উদ্ধারে উচ্ছেদ মামলা দেওয়া হয়েছে। আইন অনুযায়ী বনের জমি থেকে সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।