খুলনায় সন্ত্রাসীদের আস্তানায় পুলিশ, নৌবাহিনীর সদস্যরা যৌথ অভিযান চালিয়েছে।

রবিববার (৩০ মার্চ) মধ্যরাতে নগরীর আরামবাগ এলাকার একটি বাড়ি ঘেরাও করে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় সন্ত্রাসীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে। 

এ ঘটনায় পুলিশ ও যৌথ বাহিনীর কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ঘটনাস্থল থেকে ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এসময় কয়েকটি অস্ত্র ও গুলি এবং মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে। বাড়িটিতে কালা লাভলুসহ সন্ত্রাসীরা গোপন মিটিং করছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সোনাডাঙ্গা জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) আজম খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ জানায়, শনিবার মধ্য রাতে নগরীর সোনাডাঙ্গার আরামবাগ এলাকায় সন্ত্রাসীরা অবস্থান নিয়ে বৈঠক করছে- এমন খবর পেয়ে কেএমপি ও যৌথ বাহিনী অভিযান পরিচালনা করে। যৌথ বাহিনীর টিম আরামবাগ এলাকায় পৌঁছালে স্থানীয় আ.

রহমান নামক জনৈক ব্যক্তির বাড়ি থেকে সন্ত্রাসীরা পুলিশ ও যৌথবাহিনীর ওপর অতর্কিত গুলি বর্ষণ করে।

এসময় অভিযান পরিচালনা টিমও আত্মরক্ষার জন্য পাল্টা গুলি চালায়। একপর্যায়ে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে আহত অবস্থায় ১১ জন সন্ত্রাসীকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় গ্রেপ্তার করা হয়। 

গ্রেপ্তারকৃত সন্ত্রাসীরা হলো- নগরীর মিস্ত্রিপাড়ার আব্দুল হান্নান শেখের ছেলে শেখ পলাশ (৩৩), বটিয়াঘাটার সুরখালি গ্রামের মো. আহমদ খার ছেলে মো. আরিফুল (২৭), নগরীর গোবর চাকার সাত্তার মিয়ার ছেলে কালা লাভলু ওরফে রুবেল ইসলাম (৩৫), রুপসার বাগমারার ইজাজ শেখের ছেলে ফজলে রাব্বি রাজন (২৬), মুসলমান পাড়া ক্রস রোড এলাকার মৃত শরীফ মো. আলমগীর হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ লিয়ন শরীফ (৩৩); 

বাগমারা মেইন রোড এলাকার মাসুদ আলম জয়নালের ছেলে ইমরানুজ্জামান (৩৩), নিরালার মো. আলমগীর হোসেনের ছেলে ইমরান (৩৫), পশ্চিম বানিয়া খামারের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে রিপন (৩৮), বানরগাতীর আব্দুর রহমান গাজীর ছেলে সৈকত রহমান (২৭), একই এলাকার আশরাফ আলী সরদারের ছেলে মো. মহিদুল ইসলাম (৩৫) ও রমিজুল হাওলাদারের ছেলে মো. গোলাম রব্বানী (২৬)। 

ঘটনাস্থল থেকে ৩টি পিস্তল, ১টি একনলা শর্ট গান, ১টি কাটা বন্ধুক, ১টি চাইনিজ কুড়াল, ১টি চাপাতি, সটগানের কয়েক রাউন্ড গুলি এবং সন্ত্রাসীদের ব্যবহৃত ৭টি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। 

গ্রেপ্তারকৃতদের চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অভিযান পরিচালনা টিমের কয়েকজন পুলিশ ও নৌ বাহিনীর সদস্য আহত হন। আহত পুলিশ সদস্যদের খুলনা পুলিশ হাসপাতালে এবং আহত নৌবাহিনীর সদস্যদের খুলনা নেভি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

কেএমপির এডিসি (মিডিয়া) মো. আহসান হাবিব জানান, খুলনা মহানগরীর সোনাডাঙ্গা থানা এলাকায় সন্ত্রাসীদের সাথে বন্দুকযুদ্ধ ও অস্ত্র গোলাবারুদসহ সন্ত্রাসী গ্রেপ্তারের ঘটনায় আজ ৩০ মার্চ দুপুর ২টায় খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ সদর দপ্তরের সম্মেলন কক্ষে প্রেস ব্রিফিং করা হবে। সেখানে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হবে।

ঢাকা/নুরুজ্জামান/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এল ক র সদস য নগর র

এছাড়াও পড়ুন:

ইতালির কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে যাওয়ার পর নিখোঁজ, ছেলেকে ফিরে পেতে মায়ের আকুতি

ইতালি নিয়ে যাওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে যাওয়া ছেলেকে ফিরে পাওয়ার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যরা। রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগী রবিনের মা রহিমা বেগম বলেন, ২০২৩ সালের ১০ আগস্ট সকাল ১১টার দিকে আমার আত্মীয় সাধনা বেগম সাধুনী আমাদের বাসায় বেড়াতে আসেন। নানা আলোচনা হয় তার সঙ্গে। আলোচনার একপর্যায়ে তিনি আমাদের ছোট ছেলে মো. রবিনকে ইতালি পাঠানোর প্রস্তাব করেন। আমরা পরিচিত লোক না থাকা, টাকা পয়সা না থাকা ইত্যাদি বলে প্রস্তাবটি গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানাই। তখনই সাধনা বেগম বলেন, তার নিজের ছেলেকে মো. মনির হোসেন নামে এক ব্যক্তি ইতালি পাঠিয়েছেন। আমরা বলি মনিরকে তো আমরা চিনি না। তখন তিনি সঙ্গে সঙ্গে মনির ও তার স্ত্রী দিনা ইসলামকে ফোন করে কথা বলেন। এর এক সপ্তাহ পরে মো. মনির তা স্ত্রী দিনা ইসলাম আমাদের বাসায় আসেন। তখন মনিরের সঙ্গে আমার ছেলেকে ইতালি ফ্লাইটে পাঠাতে হলে ১৪ লাখ টাকার মৌখিক চুক্তি হয়।

তিনি আরও বলেন, কিছুদিন পর অল্প টাকা সংগ্রহের কথা জানালে ২০২৩ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টার সময় দালাল মনির ও তার স্ত্রী দিনা ইসলামসহ কয়েকজন আমাদের আদাবরের বাসায় আসেন। এসময় আমাদের ছেলে রবিনের পাসপোর্ট ও নগদ ৫ লাখ টাকা নেয় তারা। তখন দিনা ও সাধনা বলেন, দালাল মনির রবিনকে সঙ্গে করে নিয়ে ইতালি কর্মস্থলে যাবে। রবিনকে চাকরিতে যোগদান করিয়ে আবার যখন ঢাকায় ফিরবে তখন বাকি ৯ লাখ টাকা দিলেই হবে। এর এক সপ্তাহ পর ইতালি নিয়ে যাওয়ার কথা বলে রবিনকে নিয়ে দালাল মনির শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের উদ্দেশে যায়।

এসময় রবিনের বাবা বলেন, কিছু দিন পর খবর পেলাম ইতালি না নিয়ে লিবিয়ায় নিয়ে অন্ধকার ঘরে আটকে রাখে ছেলেকে। আটকাবস্থায় আমাদের সন্তানকে ভয়ানক শারীরিক ও মানষিক নির্যাতন চালায়। নির্যাতন চলাকালীন সময়ই তারা ফোনে রবিনকে আমাদের সঙ্গে কথা বলায় টাকা পাঠানোর জন্য। রবিন নির্যাতনের যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে আমাদের জনায়- তোমরা দ্রুত টাকা না পাঠালে ওরা আমাকে মেরে ফেলবে!

তিনি বলেন, একথা জানার পর আমরা মনির ও সাধনাকে বলি তোমরা আমার সন্তানকে দেশে ফিরিয়ে আনো। তাতে আমাদের সন্তানের ওপর নির্যাতনের মাত্রা আরো বেড়ে যায়! সন্তানের জীবনের কথা চিন্তা করে তখন আমরা নিরুপায় হয়ে বিভিন্ন তারিখে মনিরের বাবা কালাম হাওলাদার, মনিরের স্ত্রী দিনা ইসলাম, সাধনার মেয়ে রেখা আক্তার ও মনিরের বোন সিমার ভিন্ন ভিন্ন ব্যাংক একাউন্টে ১১ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেই। যার মানি রিসিট আছে। এছাড়াও পরবর্তীতে নগদে আরও টাকাসহ মোট ১৮ লাখ টাকা নেয় তারা।

এত টাকা দেওয়ার পরও গত বছরের মার্চ মাস থেকে আমরা আর ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি। আমাদের ধারণা- এই মানব পাচারকারীরা আমাদের আদরের ধন রবিনকে নির্যাতন করে মেরে ফেলেছে। এমতাবস্থায় আমরা সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কাছে ভিক্ষা চাই, আমাদের সন্তানকে ফিরে পেতে তারা যেন একটা উদ্যোগ গ্রহণ করে।

রবিনের বাবা আরও বলেন, প্রায় এক বছর ধর ছেলের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ নেই। ছেলের সন্ধানে সংশ্লিষ্ট এম্বাসি এবং দপ্তরে যোগাযোগ করলে কোনো সহায়তা পাইনি। আমি আমার ছেলেকে ফেরত চাই।

সংবাদ সম্মেলনে রবিনের পরিবারের সদস্য ছাড়াও তার স্কুল শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘শয়তানের নিঃশ্বাসে’ খোয়া গেলো ব্যবসায়ীর লাখ টাকা 
  • রিকশায় ছাত্রলীগ নেতাকে পায়ের নিচে ফেলে নির্যাতনের অভিযোগ
  • কৃষিতে ড্রোন পদ্ধতি চালু করতে চীনের সহযোগিতা চাইলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা
  • ইতালির কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে যাওয়ার পর নিখোঁজ, ছেলেকে ফিরে পেতে মায়ের আকুতি
  • শিঙাড়া খাওয়া নিয়ে সংঘর্ষ, নিহত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী 
  • সিদ্ধিরগঞ্জে সরকারি জমি দখল নিয়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া
  • রূপগঞ্জে যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় সিএনজি চালক নিহত, আহত ২
  • হবিগঞ্জে বিএনপি নেতাকে কুপিয়ে জখম
  • চীন মালিকানাধীন ব্যাটারি কারখানায় ডাকাতি, কোটি টাকার মালামাল লুট
  • শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্রের অব্যবস্থাপনা দেখে অসন্তোষ প্রকাশ দুই উপদেষ্টার