পটুয়াখালীতে ২২ গ্রামের ২৫ হাজার মানুষের ঈদ উদযাপন
Published: 30th, March 2025 GMT
সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে পটুয়াখালীর ২২ গ্রামের ২৫ হাজার মানুষ উদযাপন করেছেন আগাম ঈদ।
রবিবার (৩০ মার্চ) সকাল পৌনে নয়টায় কলাপাড়ার ধানখালী ইউনিয়নের উত্তর নিশানবাড়িয়া জাহাগিরিয়া শাহ্সূফি মমতাজিয়া দরবার শরীফ মাঠে ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড়া জেলার সদর উপজেলার ৪ গ্রামে, কলাপাড়ার ৮ গ্রামে, রাঙ্গাবালির ২ গ্রামে, গলাচিপার ৩ গ্রামে, দুমকির ২ গ্রামে ও বাউফল উপজেলার ৩ গ্রামে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঈদ উপলক্ষে এসব গ্রামে সকাল থেকে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। অতিথিদের মিষ্টান্ন সহ বিভিন্ন পিঠাপুলে দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়েছে।
স্থানীয়ভাবে এরা চট্টগ্রামের এলাহাবাদ সুফিয়া ও চানটুপির অনুসারী হিসেবে পরিচিত। প্রায় ১০০ বছর ধরে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে আগাম ঈদ পালন করে আসছেন তারা।
নিশানবাড়িয়া এলাকার বাসিন্দা ছমেদ আলী বলেন, “আমরা আসলে পৃথিবীর যে কোন স্থানে চাঁদ দেখার সঙ্গে সঙ্গে ঈদ পালন করে আসছি। এবারও পালন করেছি। নামাজের পরে বিশেষ মোনাজাতে সবাই সবার জন্য দোয়া করেছি।”
পটুয়াখালীর বদরপুর দরবার শরীফে নামাজ আদায় করতে আসা ফরিদ হোসেন বলেন, “ইউরোপ আমেরিকাসহ পৃথিবীর যে কোন দেশে চাঁদ দেখা গেলেই আমরা ঈদ পালন করি। এবছরও পালন করেছি। আমরা দিনটি উৎসবের মধ্য দিয়ে পালন করছি।”
উত্তর নিশানবাড়িয়া জাহাগিরিয়া শাহ্সূফি মমতাজিয়া দরবার শরীফের পরিচালক নিজাম বিশ্বাস বলেন, “প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও সৌদির সঙ্গে মিল রেখে ঈদের নামাজ আদায় করেছি৷ এর আগে আমাদের গতকাল রাত দশটার দিকে চট্রগ্রামের দরবার শরীফ থেকে জানানোর পর ঈদ উদযাপনের প্রস্তুতি নিয়েছি। নামাজ শেষে দেশ ও উম্মাহর শান্তি কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়েছে। নামাজে আমাদের তরিকতের হাজারো মানুষ অংশগ্রহণ করেছে।”
ঢাকা/ইমরান/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বান্দরবানে সাংগ্রাই উৎসবের সমাপ্তি
বান্দরবানের রাজার মাঠে ‘মৈতা রিলং পোয়ে’ বা মৈত্রী পানি বর্ষণ উৎসবের মধ্য দিয়ে মারমা জনগোষ্ঠীর প্রধান ও প্রাচীনতম উৎসব সাংগ্রাইয়ের আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয়েছে।
গত ১২ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া এ উৎসব চলে টানা সাত দিন। উৎসবজুড়ে ছিল বর্ণাঢ্য আয়োজন, নানান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ঐতিহ্যবাহী ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং সামাজিক সম্প্রীতির বহুমাত্রিক বার্তা। মারমা সম্প্রদায়ের এই ঐতিহ্যবাহী উৎসবটি শুধু আনন্দ ও উদযাপনের নয়, বরং এটি পারস্পরিক সৌহার্দ্য, ভ্রাতৃত্ব ও সংস্কৃতির মিলনের এক অনন্য নিদর্শন।
শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) মৈত্রী পানি বর্ষণ উৎসবের শেষ দিনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা। প্রধান অতিথি মৈত্রী পানি বর্ষণ উৎসবে পানি ছিটিয়ে উদ্বোধন করেন।
এসময় বান্দরবান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক থানজামা লুসাই, জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি, পুলিশ সুপার শহিদুল্লাহ কাওছার ও অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
মারমা তরুণ-তরুণীরা বলেন, “মারমা জনগোষ্ঠীর প্রধান উৎসব সাংগ্রাইয়ের মাধ্যমে পুরাতন বছরের গ্লানি দূর করে নতুন বছরের আগমন উদযাপন করা হয়। উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ আয়োজিত রাজার মাঠে মৈতা রিলং পোয়ে বা মৈত্রী পানি বর্ষণ যেখানে পানি ছিটিয়ে শুভেচ্ছা ও সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দেন সবাই। সাংগ্রাই উৎসব শুধু আনন্দের নয়, বরং সামাজিক বন্ধন, ধর্মীয় মূল্যবোধ এবং ঐতিহ্য রক্ষার প্রতীক। উৎসবের এই আয়োজনে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে পড়ে পুরো পার্বত্য অঞ্চলে।”
সাংগ্রাই উৎসব উদযাপন পরিষদের সদস্যরা বলেন, “সাংগ্রাই উৎসবের বিভিন্ন দিনে ছিল মারমা ঐতিহ্যবাহী নৃত্য-সঙ্গীত, বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, তরুণ-তরুণীদের পানি খেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। উৎসবের শেষ দিন ছিল সবচেয়ে রঙিন ও প্রাণবন্ত। রাজার মাঠে হাজারো মানুষের অংশগ্রহণে এক আনন্দঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। এতে অংশগ্রহণ করেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনিক কর্মকর্তাসহ স্থানীয় ও বিদেশি পর্যটকরাও।”
ঢাকা/চাইমং/এস