শিশুদের ঈদযাত্রা ঝুঁকিমুক্ত রাখতে যা করতে হবে
Published: 30th, March 2025 GMT
পবিত্র ঈদুল ফিতর সমাগত। শিকড়ের টানে মানুষ শহর ছেড়ে গ্রামে প্রিয়জনের কাছে ছুটছে। শিশু, বয়স্ক ও রোগীদের পক্ষে লম্বা যাত্রাপথের ধকল সহ্য করা কঠিন। আসুন জেনে নিই কী কী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিলে আমাদের এই ঈদযাত্রা নিরাপদ আর নির্বিঘ্ন হবে।
পরিধেয় পোশাকহালকা আরামদায়ক, সহজে বাতাস চলাচল করতে পারে এমন পোশাক পরিধান করুন। যাত্রার সময় নরম জুতা বা কেডস পরা ভালো।
একেবারে নতুন জুতা পরিয়ে রওনা দেওয়া যাবে না। এতে পায়ে ফোসকা পড়তে পারে। সঙ্গে হাতব্যাগে আরেক সেট জামা রাখা উচিত, যাতে বমি হলে বা নোংরা হলে পাল্টানো যায়।
খাবার নিয়ে সতর্কতাঘরে তৈরি খাবার ও পানির বোতল সঙ্গে রাখুন। কিছুক্ষণ পরপর বিশুদ্ধ পানি পান করতে উৎসাহিত করুন। এই সময়ে খাবার ও পানিবাহিত রোগ প্রতিরোধে সচেষ্ট থাকতে হবে। বাইরের খাবার, ফলের জুস, চিপস, চকলেট ইত্যাদি বাচ্চাদের খেতে দেবেন না।
প্রয়োজনীয় ওষুধকিছু কিছু প্রয়োজনীয় ওষুধ যেমন প্যারাসিটামল, ডায়রিয়ার খাওয়ার স্যালাইন, সাধারণ সর্দি-কাশির জন্য অ্যান্টিহিস্টামিন, পেটব্যথা, গ্যাসের জন্য ওমিপ্রাজল বা অ্যান্টাসিড ইত্যাদি সঙ্গে রাখুন। এ ছাড়া তুলা, গজ, ব্যান্ডেজ, অ্যান্টিসেপটিক মলম সঙ্গে রাখুন।
মোবাইল ফোনে চিকিৎসকের ফোন নম্বর ঠিকানা সংগ্রহে রাখুন। শিশুদের বিভিন্ন মেয়াদি অসুখ যেমন বাতরোগ, অ্যাজমা বা অ্যালার্জি রোগে ভুগছে, তার জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ নিতে একদম ভুলবেন না।
যানবাহনের সতর্কতাখেয়াল রাখুন যেন শিশু জানালা দিয়ে মাথা বা হাত বের করে না রাখে। অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে বাস, ট্রেন, লঞ্চে উঠতে চেষ্টা করবেন না। ট্রেনের ছাদে ভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকুন। শিশুরা জানালার পাশে বসলে অতিরিক্ত বাতাসের কারণে ভ্রমণের ঠিক পরেই আক্রান্ত হয় সর্দি-জ্বর অথবা সাধারণ কাশিতে।
মোশন সিকনেসঅনেক শিশু বাসে বা যানবাহনে উঠলে বমি ভাবে আক্রান্ত হয় বা বমি করে, সঙ্গে মাথা ঘোরাও থাকতে পারে। একে বলে মোশন সিকনেস। অটোসিল অথবা স্টিমিটিল জাতীয় ওষুধ ভ্রমণের আধা ঘণ্টা আগে খাওয়ালে এই অসুবিধা থেকে আরাম পাওয়া যায়। এ ছাড়া বাস ট্রেনে চলাচলের সময় শিশুদের চোখ বন্ধ করে রাখলে অথবা ঘুমিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও এই অসুবিধা টের পাওয়া যায় না।
বিপদ-আপদজরুরি প্রয়োজনে পরিচিত চিকিৎসক ও পুলিশের ফোন নম্বর সঙ্গে রাখুন। অসুস্থ অথবা কোনো বিপদে পড়লে যেকোনো সময় চিকিৎসকের পরামর্শ ও বিপদের সময় পুলিশের সাহায্য নিতে পারবেন।
পুলিশের সাহায্য নিতে যেকোনো জায়গা থেকে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করবেন। অজ্ঞান পার্টি থেকে সাবধান থাকবেন। যাত্রাপথে অপরিচিত কেউ খাবার বা পানি দিলে খাবেন না। শিশুকেও এ বিষয়ে বলে রাখুন। যাত্রাপথে মলম পার্টি ও ছিনতাইকারীর আনাগোনা থেকে সতর্ক থাকুন। গ্রামে বেড়াতে গেলে আশপাশে পুকুর থাকলে শিশুকে চোখে চোখে রাখুন। কখনোই একা ছাড়বেন না।
অধ্যাপক ডা.
ইমনুল ইসলাম ইমন: শিশু বিভাগ, বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
৩৫০-৪০০ করে জিম্বাবুয়েকে ৩০০ রানের টার্গেট দিতে চায় বাংলাদেশ
ব্যাটিং ব্যর্থতায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম দিন ডুবেছিল বাংলাদেশ। বোলিংটাও হয়নি মনোঃপুত। তবে দ্বিতীয় দিন বোলারাই উদ্ধার করেছে বাংলাদেশকে।
সোমবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় দিনের লড়াই শেষে দুই দলের কাউকেই এগিয়ে রাখার সুযোগ নেই। বাংলাদেশের করা ১৯১ রানের জবাবে ২৭৩ রান করে জিম্বাবুয়ে। ৮২ রানের লিড পায় তারা। জবাব দিতে নেমে ১ উইকেটে ৫৭ রান তুলেছে স্বাগতিকরা। হাতে ৯ উইকেট রেখে বাংলাদেশ কতদূর যাবে সেটাই দেখার। তবে ম্যাচের ভবিষ্যৎ নিজেদের পক্ষে আনতে দ্বিতীয় ইনিংসে ভালো ব্যাটিংয়ের বিকল্প নেই।
কত রান হলে জিম্বাবুয়েকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেওয়া যাবে? প্রশ্ন করা হয়েছিল, ৫ উইকেট পাওয়া মেহেদী হাসান মিরাজকে। দলের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসে মিরাজ জানালেন, অন্তত ৩০০ রানের টার্গেট জিম্বাবুয়েকে দিতে চান তারা। এজন্য স্কোরবোর্ডে ৩৫০-৪০০ রান লাগবেই। সেই লক্ষ্যেই ব্যাটসম্যানরা ব্যাটিং করবেন বলে জানালেন।
তার ভাষ্য, ‘‘এখন যে উইকেট আছে, আমার কাছে মনে হয় যদি ভালো ব্যাটিং করতে পারি, যদি ৩৫০–৪০০ রান করতে পারি, এটা আমাদের দলের জন্য অনেক ভালো হবে। টেস্ট ক্রিকেটে যদি ৩০০ রান লক্ষ্য দেওয়া হয়, প্রতিপক্ষের জন্য অনেক কঠিন। কারণ উইকেটে অনেক পরিবর্তন আসবে। আমাদের ওই দায়িত্ব নিয়ে ব্যাটিং করতে হবে।’’
সিলেটের উইকেটে এখন পর্যন্ত পেসাররা বেশি সুবিধা পাচ্ছেন। স্পিনারদের সাফল্যের পাল্লা ভারী হলেও যতটুকু সুবিধা পেসাররাই পাচ্ছেন। নতুন বলে বল বেশ ভালো মুভমেন্ট পাচ্ছে। স্পিনাররা তেমন টার্ন পাচ্ছেন না। মিরাজও জানালেন, স্পিনাররা ছিলেন সাপোর্টিং রোলে। পেসাররাই তৈরি করেছেন আসল চাপ।
আজ দিনের শুরুতে নাহিদ রানা গতির ঝড় তুলে ৩ উইকেট নেন। হাসান মাহমুদ পান ১ উইকেট। দ্বিতীয় সেশনে খালেদের পকেটে যায় ১ উইকেট। বাকি ৫ উইকেট পান মিরাজ। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় জিম্বাবুয়েকে বেশিদূর যেতে দেয়নি বাংলাদেশ।
বোলারদের পারফরম্যান্সে খুশি মিরাজ, ‘‘আমাদের বোলাররা খুব ভালো বল করেছি। গতকাল আমরা বোলাররা খুব ভালো করতে পারিনি। হয়তো আমাদের আরো ভালো করা উচিৎ ছিল। পেস বোলাররা খুব ভালো বল করেছে। হাসান, নাহিদ রানা এবং… খালেদ, তিনজন… খুবই ভালো বল করেছে। আমাদের স্পিনারদের ভূমিকা ছিল আমরা যেন সাপোর্ট করতে পারি। টেস্ট ম্যাচে প্রথম ইনিংসে নতুন বলে পেসারদের ভূমিকাটা গুরুত্বপূর্ণ। তারা সেই জিনিসটা মেইনটেইন করতে পেরেছে। এবং… আমার কাছে মনে হয়, তারা যেভাবে বল করেছে এটা আমাদের দলের জন্য অনেক সাহায্য করেছে ওদেরকে অলআউট করতে।’’
ম্যাচ এখন নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আছে বলে মনে করছেন মিরাজ, ‘‘এখন পর্যন্ত আমাদের নিয়ন্ত্রণেই আছে আমি মনে করি। আমাদের ১ উইকেট গিয়েছে। ব্যাটসম্যান আছে। আমরা যদি ভালো একটা স্কোর দিতে পারি তাদেরকে। চার নম্বর দিন ওদের জন্য অনেক কঠিন হবে এই উইকেটে।’’
তৃতীয় দিনের সকালের সেশনটাকেই মূল চ্যালেঞ্জ হিসেবে ধরছেন মিরাজ, ‘‘প্রথমে আমাদের লিড পার করতে হবে। আমাদের লক্ষ্য থাকবে লিডটা যেন ক্রস করতে পারি। তারপর আমাদের ব্যাটসম্যানরা যেন দায়িত্ব নিয়ে বড় একটা স্কোর করতে পারি।’’
সিলেট/ইয়াসিন