ঈদযাত্রা: অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ
Published: 30th, March 2025 GMT
আজ চাঁদ দেখা গেলে আগামীকাল পালিত হবে পবিত্র ইদুল ফিতর। পরিবারের সঙ্গে ঈদ আনন্দ করতে শেষ মুহূর্তে অনেকেই ঢাকা ছাড়ছেন। অন্যান্য দিনের তুলনায় আজ ভিড় কম। যাত্রা অনেকটায় স্বস্থির। তবে এ যাত্রায় গলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে বাড়তি ভাড়া। কোনো কোনো রুটে নেওয়া হচ্ছে দ্বিগুণ ভাড়া। আবার কেউ কেউ বেশি নিচ্ছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা।
রবিবার (৩০ মার্চ) ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। এখান থেকে দক্ষিণবঙ্গের মানুষের যাতায়াত সবচেয়ে বেশি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিভিন্ন কাউন্টার এবং নন কাউন্টারের বাসগুলো সারি সারি দাঁড়িয়ে আছে। বাসের লোকজন যাত্রীর জন্য হাঁক ডাক দিচ্ছেন। কিছু সময় পর বাস ভর্তি হলে ছেড়ে যাচ্ছে।
পরিবহন শ্রমিক কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শরীয়তপুরের নড়িয়ার ২৫০ টাকার ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ৫০০ টাকা। খুলনা-গোপালগঞ্জ ৪৫০ এর ভাড়া ৮০০, কুষ্টিয়া-কুমারখালীর ৬৫০ এর ভাড়া ৮০০, বরিশালের ৪০০ এর ভাড়া ৮০০, মাওয়া শ্রীনগরের ১০০ টাকার ভাড়া ২০০, যশোরের ৬০০ এর ভাড়া ৮০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে।
পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আসার সময় গাড়ি খালি আসবে। এ কারণে একটু বাড়তি ভাড়া নিতে হচ্ছে।
নড়াইল এক্সপ্রেসের কাউন্টার ম্যানেজার আলমগীর জানান, গাড়ি যাবে যশোর। আগের ভাড়া ছিলো ৬০০ টাকা। ঈদের সময় ২০০ টাকা বেশি নিচ্ছি। আসার সময় তো যাত্রী থাকে না। খালি গাড়ি নিয়ে আসতে হয়। টোল দিতে হয় কত টাকা। আমাদের বিষয়টাও একটু দেখতে হবে।
ঢাকা-গোপালগঞ্জ-খুলনা রুটের বনফুল পরিবহনের গাড়িচালক জাহাঙ্গীর বলেন, “অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার যাত্রী কম। এক সময় যাত্রীরা দাঁড়িয়ে যেত। এখন যাত্রী কম। আর আসার সময় খালি আসে। এ কারণে ভাড়া একটু বেশি নেওয়া হচ্ছে।”
পরিবারের সঙ্গে শরীয়তপুরের নড়িয়া যাচ্ছিলেন জোবায়ের আলম। তিনি বলেন,'আগের ভাড়া ছিলো ২৫০ টাকা। আজ নিচ্ছে ৫০০ টাকা। বাড়তি ভাড়া দিয়েই যেতে হবে।” জাতীয় ভোক্তা অধিকারকে নজরদারি বাড়ানোর দাবি জানান তিনি।
এদিকে, যানজট এড়াতে তৎপর রয়েছে পুলিশ।
ঢাকা/মামুন/ইভা
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এর ভ ড় র সময়
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্রদল বাংলা ‘সিনেমার শাবানা’ নয়: ঢাবি ছাত্রদল সভাপতি
প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলামকে (পারভেজ) হত্যার প্রতিবাদ এবং অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে শাস্তির আওতায় আনার দাবিতে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। আজ সোমবার দুপুরে রাজু ভাস্কর্যের সামনে এই মানববন্ধন হয়।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী নেতা-কর্মীরা কালো ব্যানার ও কালো ব্যাজ ধারণ করে শোক প্রকাশ করেন। এ সময় তাঁদের হাতে ‘গুম–হত্যা আর খুন, মানি না মানব না’, ‘যে হাতে বই ছিল তা আজ রক্তে রাঙা, সংস্কারের নামে চলছে খুন আর দাঙ্গা’, ‘কাটতে হবে দোসর লেজ, আমরা আছি পারভেজ’সহ নানা স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।
ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখার সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন একটি সামাজিক প্ল্যাটফর্ম। যেখানে আমরা সমন্বয়ের চেষ্টা করেছি। কিন্তু কারা এ ব্যানারকে কলুষিত করতে চায়? আজ থেকে আপনাদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বলবে না, আপনাদের ছাত্র আন্দোলন বৈষম্যমুখী হয়ে পড়েছে।’
ছাত্রদল বাংলা সিনেমার শাবানা নয় উল্লেখ করে সংগঠনটির এই নেতা বলেন, ‘আড়াই ঘণ্টা একটা চলচ্চিত্রে শাবানা খুব কষ্ট-দুঃখ করে। তবে যখন তার ভালো সময় আসে, তখন তিনি ক্ষমা করে দেন। আমাদের সামনের সারির নেতৃত্ব যদি আহত বা নিহত হয়, আমরা শাবানার মতো ক্ষমা করতে পারব না। আমাদেরও রক্ত গরম হয়, আমাদেরও শরীর গরম হয়।’
শিক্ষার্থীরা একটি ট্রমার (মানসিক আঘাত) মধ্যে আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের দেয়াল থেকে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। আমরা চুপ করে ছিলাম। আমরা মনে করেছি, শিক্ষার্থীরা যেহেতু একটি ট্রমার মধ্যে আছে, আমরা যদি প্রতিক্রিয়া দেখাই, তাহলে ভুল–বোঝাবুঝি হবে। কিন্তু এখন আনাচকানাচে নামে-বেনামে মঞ্চ তৈরি হয়েছে।’
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন। ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীর নামে ‘মবোক্রেসি’ (বিশৃঙ্খল জনতার সংঘবদ্ধ কাজ) চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীর নামে মবোক্রেসি চালু করেছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের গণতন্ত্রকে কুক্ষিগত করতে চাইছে। ৫ আগস্টের পর ছাত্রদলের রক্তে ক্যাম্পাস রঞ্জিত হয়েছে। বাংলাদেশের কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আর কেউ যদি ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে চায়, তাদের হুঁশিয়ার করে দিতে চাই, ছাত্রদল কোনো গুপ্ত সংগঠন নয়।’
সাধারণ শিক্ষার্থীদের পরিচয়ে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বৈষম্যবিরোধীর ব্যানারে ছাত্রলীগের পুনর্বাসন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন নাহিদুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধীর ব্যানারে আর কোনো ছাত্রলীগকে পুনর্বাসন করা হলে আমরা আপনাদের বিরুদ্ধে কঠোর হব।’
মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মাসুম বিল্লাহ, সহসভাপতি আনিসুর রহমান খন্দকার, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন শাওন প্রমুখ।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের বিক্ষোভ ও মানববন্ধন
জাহিদুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল এবং সদস্যসচিব শামসুল আরেফিনের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসব কর্মসূচি পালন করা হয়।
বিক্ষোভ মিছিলটি সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ থেকে শুরু হয়ে শহীদ মিনারের সামনে দিয়ে বিজ্ঞান অনুষদ চত্বর ঘুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক দিয়ে বের হয়ে বাহাদুর শাহ পার্ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে ভাষাশহীদ রফিক ভবনের সামনে এসে সমবেত হয়। বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’, ‘আমার সোনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘তুমি কে, আমি কে, পারভেজ পারভেজ’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।
বিক্ষোভ মিছিল শেষে ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম মামুন বলেন, ‘আমরা দ্রুত পারভেজ হত্যার বিচারের দাবি জানাচ্ছি এবং যারা হত্যাকারী, তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। ভবিষ্যতে যাতে এ রকম হত্যাকাণ্ড আর না ঘটে, সে জন্য কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।'
প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম হত্যার বিচার দাবিতে আজ সোমবার দুপুরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের বিক্ষোভ ও মানববন্ধন