এক্স সত্যিই কি বিক্রি করে দিয়েছেন ইলন মাস্ক
Published: 30th, March 2025 GMT
মার্কিন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্ক আলোচিত মাইক্রোব্লগিং সাইট এক্স বিক্রির ঘোষণা দিয়েছেন। এক্সের পূর্বনাম ছিল টুইটার। টুইটার কিনে নিয়ে ইলন মাস্ক এক্স নামকরণ করেন। ইলন খুদে ব্লগ লেখার ওয়েবসাইট এক্সকে বিক্রির ঘোষণা নিয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছেন। যে এক্স নিয়ে তার এত প্রভাব, তা কেন বিক্রি করছেন তা নিয়ে ইন্টারনেট দুনিয়া চমকে যায়। বাস্তবতা হচ্ছে ইলন মাস্ক এক্স বিক্রি করলেও তা আসলে ইলন নিজের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কোম্পানি এক্সএআইয়ের কাছেই বিক্রি করেছেন ইলন। এবার বিক্রির সময় প্রায় ৩ হাজার ৩০০ কোটি ডলারের অল-স্টক চুক্তিতে বিক্রি করেছেন ইলন মাস্ক।
এক্স ও এক্সএআই দুটি কোম্পানিই ইলন মাস্কের ব্যক্তিগত মালিকানাধীন। মাস্ক এক্সের একটি পোস্টে লিখেছেন, এই পদক্ষেপ এক্সএআইয়ের উন্নত এআই ক্ষমতা ও দক্ষতার সঙ্গে এক্সকে যুক্ত করে বিশাল সম্ভাবনা উন্মোচন করবে। এই চুক্তি অনুসারে এক্সএআইয়ের মূল্য আট হাজার কোটি ডলার ও এক্সের মূল্য ৩ হাজার ৩০০ কোটি ডলার নির্ধারণ করে।
টেসলা ও স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্ক এখন মার্কিন রাজনীতিতে বেশ আলোচিত। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপদেষ্টা হিসেবে কর্মরত মাস্ক ২০২২ সালে ৪ হাজার ৪০০ কোটি ডলারে টুইটার সাইটটি কিনেছিলেন। তখন কর্মীদের ছাঁটাই করা থেকে শুরু করে ঘৃণ্য বক্তব্য, ভুল তথ্য ও ব্যবহারকারী যাচাইকরণের নীতি পরিবর্তন করে আলোচনায় আসেন ইলন। পরবর্তী সময়ে টুইটারের নাম পরিবর্তন করে এক্স রাখেন। তার এক বছর পর এক্সএআই চালু করেন। মাস্ক এক্সের বিষয়ে লিখেছেন, ‘এক্সএআই ও এক্সের ভবিষ্যৎ একে অপরের সঙ্গে জড়িত। ডেটা, মডেল, কম্পিউট করার শক্তি থেকে শুরু করে তথ্য বিতরণ ও কর্মীদের একত্র করার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে পদক্ষেপ নিচ্ছি। এই সম্পর্ক এক্সএআইয়ের উন্নত এআই ক্ষমতা ও দক্ষতার সঙ্গে এক্সের বিশাল সম্ভাবনা উন্মোচন করবে। সত্য অনুসন্ধান ও জ্ঞানে অগ্রগতি আমাদের মূল মিশন। তার দিকে খেয়াল রেখে সম্মিলিতভাবে দুই কোম্পানি কোটি কোটি মানুষকে আরও স্মার্ট ও অর্থবহ অভিজ্ঞতা প্রদান করবে।’
নতুন এই পদক্ষেপ এক্স ব্যবহারকারীদের জন্য কোনো পরিবর্তন আনবে কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়। এক্সএআই ইতিমধ্যে তার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মডেলকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য এক্স ব্যবহারকারীদের পোস্ট থেকে ডেটা ব্যবহার করছে। এক্স ব্যবহারকারীরা এক্সএআইয়ের এআই চ্যাটবট গ্রোক বেশ কয়েক মাস ধরে ব্যবহার করছেন।
সূত্র: রয়টার্স
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম স ক এক স ইলন ম স ক ব যবহ র ট ইট র এক স ব এক স র ন ইলন
এছাড়াও পড়ুন:
সিলেটের নিখোঁজ ছয় শ্রমিকের লোকেশন টেকনাফ: পুলিশ
কক্সবাজার জেলায় কাজের সন্ধানে এসে সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার এক গ্রামের ছয়জন শ্রমিক নিখোঁজ হয়েছেন। তারা পেশায় সবাই রাজমিস্ত্রী। সাত দিন ধরে নিখোঁজ থাকা শ্রমিকরা সবাই গত ১৫ এপ্রিল কাজের উদ্দেশ্যে জকিগঞ্জ উপজেলার খলাছড়া ইউনিয়নের পশ্চিম লোহারমহল গ্রাম থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশ্য বের হয়েছিলেন।
পুলিশ বলছে, তাদের সবার ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। সর্বশেষ নিখোঁজদের মধ্যে দুজনের মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং করে তাদের অবস্থান টেকনাফের রাজারছড়া এলাকা পাওয়া যাচ্ছে। এদিকে টেকনাফের রাজারছড়া মানবপাচার ও অপহরণকারীদের মূল আস্তানা। তাই সন্দেহ করা হচ্ছে নিখোঁজদের মানবপাচার ও অপহরণকারী চক্রের ফাঁদে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল ইসলাম মুন্না বলেন, কক্সবাজারের কাজের উদ্দেশ্যে বের হওয়া আমার এলাকার ছয় যুবক নিখোঁজ রয়েছেন। তারা এর আগেও চট্রগ্রাম-কক্সবাজারের কাজ করতে গিয়েছিলেন। আমরা পরিবারকে সহায়তা করছি। তাদের লোকেশন টেকনাফের রাজারছড়া গ্রামে পাওয়া যাচ্ছে। তাই সেখানকার থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে।
টেকনাফ মডেল ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছি। আমরাও তাদের লোকেশন রাজারছড়া এলাকা পাচ্ছি। বিষয়টি খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। কেননা এসব এলাকায় অপহরণ ও মানবপাচার চক্রের আনাগোনা বেশি।
নিখোঁজ ৬ জন হলেন, জকিগঞ্জ উপজেলার খলাছড়া ইউনিয়নের পশ্চিম লোহারমহল গ্রামের ফারুক আহমদের ছেলে মারুফ আহমদ (১৮), আজির উদ্দিনের ছেলে শাহিন আহমদ (২১), মৃত লুকুছ মিয়ার ছেলে রশিদ আহমদ (২০), সফর উদ্দিনের ছেলে খালেদ হাসান (১৯) ও মৃত সরবদির ছেলে আব্দুল জলিল (৫৫) ও মৃত দুরাই মিয়ার ছেলে এমাদ উদ্দিন (২২)।
নিখোঁজ পরিবারের ভাষ্যমতে, গত ১৫ এপ্রিল বিকেলে সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার খলাছড়া ইউনিয়নের পশ্চিম লোহারমহল গ্রামের ৫ তরুণসহ ছয় জন কাজের উদ্দেশ্যে কক্সবাজারের উদ্দেশে রওয়ানা দেন। ১৬ এপ্রিল কক্সবাজার পৌঁছার পর পরিবারের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু এরপর থেকে তাদের মোবাইল বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। এঘটনায় নিখোঁজদের পরিবারে চরম দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে। নিখোঁজ সবাই রাজমিস্ত্রীর কাজ করেন।
নিখোঁজ রশিদের ভাই আব্দুল বাছিত বলেন, রশিদ কয়েক বছর থেকে চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজারের এক ঠিকাদারের অধীনে কাজ করতো। বিভিন্ন সময়ে বাড়িতে আসা যাওয়া ছিল। এবার কক্সবাজার যাওয়ার পর থেকে রশিদসহ সঙ্গে থাকা সবার মোবাইল ফোন বন্ধ দেখাচ্ছে। তাদের লোকেশন টেকনাফের রাজারছড়া পাওয়া যাচ্ছে। আমরা খুব চিন্তিত কারণ টেকনাফ অপহরণ এবং মানবপাচারপ্রবণ এলাকা।
জকিগঞ্জ উপজেলার চৌকিদার ফয়সাল আহমেদ বলেন, আমার এলাকার ছয় শ্রমিক প্রায় সময় কক্সবাজারের কাজ করতে যায় বাবুল নামে এক ঠিকাদারের অধীনে। বাবুল ঠিকাদারের কাজ না থাকায় টেকনাফের এক পরিচিত ছেলে সাথে টেকনাফে কাজ করতে বের হন। তখন থেকে তাদের ফোন বন্ধ রয়েছে।
টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য জিয়াউর রহমান বলেন, বিষয়টি আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জেনেছি। আমিও চেষ্টা করছি তাদের খোঁজ খবর নেওয়ার জন্য। তাদের লোকেশন যে এলাকায় পাওয়া যাচ্ছে সেটি ভয়ংকর এলাকা। কেননা এর আগেও থ্রি মার্ডার সেখানে (রাজারছড়া) হয়েছিল।