রূপগঞ্জে রিয়াজ বাহিনীর ছোড়া গুলিতে পথচারী নিহত
Published: 30th, March 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে দাবিকৃত চাঁদার টাকা না পেয়ে যুবদল নেতা শফিকুল ইসলামের বাড়িতে শুটার রিয়াজ ও তার বাহিনীর হামলার সময় ছোড়া গুলিতে আহত পথচারী জাফর আলী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেছেন।
শনিবার (২৯ মার্চ) রাতে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে শনিবার সন্ধ্যার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২৯ দিন চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। নিহত জাফর আলীর পূর্ণ নাম ঠিকানা পাওয়া যায়নি।
যুবদল নেতা শফিকুল ইসলাম শফিক জানান, রূপগঞ্জের চিহ্নিত সন্ত্রাসী শুটার রিয়াজ দীর্ঘদিন ধরে তার কাছে একটি গাড়ি কেনার জন্য ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। দাবি করা চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে গত ১ মার্চ শনিবার রাত ৯টার দিকে রিয়াজের নেতৃত্বে ১৫-২০ জন সন্ত্রাসী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তারাব পৌরসভার কর্ণগোপ এলাকায় শফিকুলের বাড়ি লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলিবর্ষণ করতে থাকে। এসময় শফিকের বাড়ির সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় জাফর আলী নামে এক পথচারীগুলিবিদ্ধ হন।
পরে আহত জাফর আলীকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় শফিকুল ইসলাম শফিক বাদী হয়ে রিয়াজসহ তার বাহিনীর সদস্যদের আসামী করে মামলা দায়ের করেন। ২৯ দিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় শনিবার সন্ধ্যার দিকে জাফর আলীর মৃত্যু হয়।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, রূপগঞ্জের সাধারণ মানুষের জন্য শুটার রিয়াজ এক আতঙ্কের নাম। রিয়াজ চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে এমন কোন অপকর্ম নেই যে সে না করে। এসকল অপরাধ নিয়ন্ত্রণের জন্য রিয়াজের রয়েছে নিজস্ব বাহিনী।
আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন তাকে শেল্টার দিত আওয়ামী লীগের স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাকর্মীরা। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বিএনপির স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী নেতার শেল্টারে রিয়াজ ও তার বাহিনীর সদস্যরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকাবাসী জানায়, রিয়াজের নেতৃত্বে তার সন্ত্রাসী দল এলাকার বালু ভরাট ও মাটি কাটার ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ ও ট্রাক প্রতি নির্ধারিত হারে চাঁদা নিয়ে থাকে। চাঁদা না দিলে ত্রাস সৃষ্টির জন্য হামলা, আক্রমণ ও আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার করে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে।
নারায়ণগঞ্জ এলাকায় অবৈধভাবে জমি দখলের জন্য দল নিয়ে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িত। এছাড়া বাড়ি বা বিল্ডিং করার সময় চাঁদা না দিলে গুলি করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। ভুলতা এলাকায় বাসেও ডাকাতির ঘটনা ঘটিয়েছে তারা।
তাছাড়াও সে উঠতি বয়সের ছেলেদের কাছে অস্ত্র সরবরাহ করার মাধ্যমে তাদেরকে সন্ত্রাসী কার্যকলাপে সম্পৃক্ত করেছে। এসব অপকর্মের কারণে আগেও তার দলের লোকজন গ্রেপ্তার হয়েছে। পরে জামিনে ছাড়া পেয়ে ফের একই ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। এ চক্রের ১০ থেকে ১৫ জন সদস্য রয়েছে।
জানা গেছে, শুটার রিয়াজ অপরাধ জগতে জড়িয়ে পড়ে তারই বড় ভাই আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী শওকতের হাত ধরে। তখন সে অষ্টম শ্রেণিতে পড়তো। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে শওকত নিহত হয়। এছাড়া তার আরেক ভাই মোহাম্মদ আলীও সন্ত্রাসী। পারিবারিকভাবেই সন্ত্রাসী গ্রুপ হিসেবে পরিচিত তারা।
রিয়াজের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় নেই। বিভিন্ন অপকর্মের জন্য সে ভাড়ায় বিভিন্ন জায়গায় কাজ করে। অস্ত্র কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে রিয়াজের বিরুদ্ধে। হত্যাচেষ্টা, মাদকসহ দেড় ডজনের ও বেশি মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী বলেন, “কর্ণগোপ এলাকায় গুলিবর্ষণের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ জাফর আলী চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু বরণ করেন। এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের হবে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলমান রয়েছে।”
ঢাকা/অনিক/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অবস থ য র পগঞ জ র জন য এল ক য
এছাড়াও পড়ুন:
ফতুল্লায় শ্রমিকলীগ নেতা পলাশের সমন্ধি সন্ত্রাসী, ভুমিদস্যু আমির গ্রেপ্তার
ফতুল্লার আলীগঞ্জের শ্রমিকলীগ নেতা কাউছার আহমেদ পলাশের সমন্ধি সন্ত্রাসী ভুমিদস্যু আমির হোসেনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর লুটপাটের অভিযোগে শুক্রবার রাতে ফতুল্লার আলীগঞ্জ এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এলাকাবাসী জানান, আওয়ামীলীগ সরকার আমলে পাগলা আলীগঞ্জ নন্দলালপুর পিলকুনি এলাকায় কেউ জমি ক্রয় বিক্রয় করলে আমির হোসেনকে চাঁদা দিতে হত। তার দাবীকৃত চাঁদা না দিলে জমির সামনে যেতে দিতেন না আমির হোসেন।
জমিতে ওয়ারিস দাবি করে সাইনবোর্ড লাগিয়ে চাঁদাবাজি করতেন তিনি। সাধারন লোকজনদের সে ভয়ভীতি দেখিয়ে মারাত্মক হয়রানী করতেন।
এ ধরনের অপকর্ম করতেন শ্রমিকলীগ নেতা পলাশের প্রভাব খাটিয়ে। এখনো সে অপকর্ম অব্যাহত রেখেছেন। স্থানীয়রা আমির হোসেনকে কারাবন্দি রাখার দাবী জানিয়েছেন।
এবিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন জানান, সাহাবুদ্দিন নামে এক ব্যবসায়ীর নির্মানাধীন বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আমির হোসেনকে গ্রেফতার করে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।