পটুয়াখালীর এক মোকামেই দিনে ছয় কোটি টাকার তরমুজ বিক্রি
Published: 30th, March 2025 GMT
রাস্তায় সারি করে ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। নদীর ঘাটে ভেড়ানো ট্রলার থেকে এসব ট্রাক কাভার্ড ভ্যানে তরমুজ তুলছেন শ্রমিকেরা। তরমুজ নিয়ে ব্যস্ত শ্রমিক, কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। সম্প্রতি এ দৃশ্য দেখা গেছে পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার আমখোলা ইউনিয়নের রামনাবাদ নদীর তীরের আমখোলা মোকামে। এখান থেকে প্রতিদিন দুই শ ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানে তরমুজ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, মৌসুমের এ সময় প্রতিদিন এই মোকামে প্রায় ছয় কোটি টাকার তরমুজ বিক্রি হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পটুয়াখালী জেলায় এবার তরমুজের ফলন খুব ভালো হয়েছে। এবার ফলনের পাশাপাশি কৃষক তরমুজের দামও ভালো পাচ্ছেন। এক কানি (আড়াই একর) জমিতে তরমুজ চাষ করে সব খরচ বাদ দিয়ে পাঁচ থেকে ছয় লাখ টাকা লাভ হচ্ছে। জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে কৃষকেরা তরমুজ নিয়ে আমখোলা মোকামে বিক্রি করতে আসছেন। জেলার একাধিক মোকাম থেকে প্রতিদিন তিন থেকে সাড়ে তিন শ ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানে করে তরমুজ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে।
সরেজমিনে আমখোলা মোকামে দেখা যায়, নদীপথে তরমুজ নিয়ে রামনাবাদ নদীর তীরে ভিড়ছে ট্রলার। ট্রলার থেকে ও কাভার্ড ভ্যানে তরমুজ তুলছেন শ্রমিকেরা।
ঢাকার গাজীপুর থেকে আমখোলা মোকামে তরমুজ কিনতে আসা পাইকারি ব্যবসায়ী মো.
আমখোলা মোকামের শ্রমিক সরদার মো. ইমরান বলেন, এখানে দিন–রাত প্রায় পাঁচ শ শ্রমিক তরমুজ ট্রাকে ভরার কাজ করছেন। প্রতিটি তরমুজ ট্রাকে তুলতে তাঁরা দেড় টাকা মজুরি পাচ্ছেন। ঈদ পর্যন্ত এই মোকামে ট্রলার থেকে ট্রাকে তরমুজ তুলে দেওয়ার কাজ করবেন তাঁরা।
প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতি না হওয়ায় এবার পটুয়াখালীতে তরমুজ উৎপাদন বেড়েছে। এ কারণে কৃষকেরা এবার বেশি লাভ করছেন। কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবার যেমন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়তে হয়নি, তেমনি ভাইরাসের সংক্রমণও হয়নি। তাই এবার ভালো ফলন হয়েছে।
পটুয়াখালী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এবার পটুয়াখালী জেলায় ২৮ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ করা হয়েছে। গত বছর জেলায় ২৩ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে তরমুজ আবাদ করা হয়েছিল।
গত বছরে এক কানি জমির তরমুজ বিক্রি করে সাড়ে ছয় লাখ টাকা পাওয়া গেছে। এবার তরমুজ আবাদের সময় আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এক কানি জমির তরমুজ বিক্রি করে আট লাখ টাকা পাওয়া গেছে। শিপলু হাওলাদার , কৃষক , ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়ন , রাঙ্গাবালী উপজেলারাঙ্গাবালী উপজেলার ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের কাউখালী গ্রামের কৃষক মো. মওদুদ খলিফা বলেন, এ বছর তিনি তিন কানি জমিতে তরমুজের আবাদ করেছেন। এতে প্রতি কানি জমিতে তাঁর তিন লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে। প্রতি কানির তরমুজ বিক্রি করে তিনি ১০ লাখ টাকা পেয়েছেন। এ পর্যন্ত তিনি ১৬ লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি করেছেন।
রাঙ্গাবালী উপজেলার ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়ন ইউনিয়নের কৃষক শিপলু হাওলাদার বলেন, গত বছরে এক কানি জমির তরমুজ বিক্রি করে সাড়ে ছয় লাখ টাকা পাওয়া গেছে। এবার তরমুজ আবাদের সময় আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এক কানি জমির তরমুজ বিক্রি করে আট লাখ টাকা পাওয়া গেছে।
তরমুজ তোলার শেষ সময় পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ৮ লাখ ৬৬ হাজার ৮৪৮ মেট্রিক টন তরমুজ খেত থেকে তোলা সম্ভব, যার পাইকারি বাজার মূল্য তিন হাজার কোটি টাকা।নজরুল ইসলাম, উপপরিচালক, পটুয়াখালী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরসোনার বাংলা ট্রাক–কাভার্ড ভ্যান ট্রান্সপোর্ট এজেন্সির মালিক মো. মহসিন মৃধা প্রথম আলোকে বলেন, আমখোলা এলাকায় ৫০টি ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি রয়েছে। এখান থেকে প্রতি দিন ২০০ ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানে ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় তরমুজ সরবরাহ করা হচ্ছে ।
পটুয়াখালী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, এবার জেলায় ২৮ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে তরমুজ আবাদ করা হয়েছে। গত বছর ২৩ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে তরমুজ আবাদ করা হয়েছিল। তরমুজ তোলার শেষ সময় পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ৮ লাখ ৬৬ হাজার ৮৪৮ মেট্রিক টন তরমুজ খেত থেকে তোলা সম্ভব, যার পাইকারি বাজার মূল্য তিন হাজার কোটি টাকা।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র তরম জ ব ক র ট ক র তরম জ তরম জ ক ন তরম জ ত ল ব যবস য় করছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে সুনামগঞ্জে মেডিকেল শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সোমবার সকাল থেকে কলেজের প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করছেন। এসময় রোববার তাদের ওপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লাঠিচার্জের সুষ্ঠু বিচার দাবি করে স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।
সোমবার দুপুর ১২টায় সুনামগঞ্জ-সিলেট মহাসড়কে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করেন তারা।
পর্যাপ্ত ক্লিনিক্যাল ক্লাস নিশ্চিত ও অবিলম্বে কলেজ হাসপাতাল চালুসহ বিভিন্ন দাবিতে চলমান আন্দোলনের সপ্তম দিনেও উত্তপ্ত ছিল এই মেডিকেল ক্যাম্পাস। মিছিল, স্লোগানে তারা তাদের অনিশ্চিত শিক্ষা জীবনের জন্য দায়ীদের বিচারের আওতায় আনার দাবিও জানিয়েছেন। গত ১৫ এপ্রিল মঙ্গলবার মানববন্ধন, বিক্ষোভ ও ক্লাস বর্জন কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
বুধবার সুনামগঞ্জ-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ, বৃহস্পতিবার শহরের আলফাত স্কয়ারে মানববন্ধন, বিক্ষোভ সমাবেশ এবং জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা, স্বাস্থ্যসেবা সচিব বরাবরে স্মারকলিপি দেন শিক্ষার্থীরা। শনিবার শান্তিগঞ্জ বাজারে মানববন্ধন ও জনসংযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।
রোববার সুনামগঞ্জ-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করার সময় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এসময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী লাঠিচার্জ করে সড়ক থেকে সরিয়ে দেয় তাদের।