চুরি করা টাকা দিয়ে তালাক দিচ্ছিলেন স্ত্রীকে, অতঃপর...
Published: 30th, March 2025 GMT
যার নুন আনতে পানতা ফুরায়, সেই তিনি মোহরানার আড়াই লাখ টাকা নগদে শোধ করে স্ত্রীকে তালাক দিচ্ছিলেন। তাঁর এত টাকার উৎস নিয়ে সন্দেহ হয় স্থানীয় বাসিন্দাদের। একপর্যায়ে তাঁকে মারধর করলে তিনি জানান, চুরি করা টাকা দিয়ে স্ত্রীকে তালাকের আয়োজন করছিলেন তিনি। ঘটনাটি ঘটেছে দিনাজপুরের হাকিমপুরে মংলা বাজারে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মংলা বাজারের কাপড় ও মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাক দু’সপ্তাহ আগে দোকান বন্ধ করে জুমার নামাজ পড়তে যান। এদিন তাঁর দোকানে চুরি হয়। চোরেরা ৭ লাখ টাকা চুরি করেন। এ ঘটনায় হাকিমপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন তিনি।
ঘটনার কয়েকদিন পর একই এলাকার যুবক জহুরুল তাঁর চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে মারধর শুরু করেন। তাঁর সঙ্গে আর সংসার করবেন না বলে শ্বশুরবাড়ির লোকদের চাপ দেন। তিনি পেশায় দিনমজুর। মোহরানার আড়াই লাখ টাকা পরিশোধ করবেন বলেও জানান। গত শুক্রবার স্থানীয় বাসিন্দা ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন বসে তালাকের সিদ্ধান্ত নেন।
এ সময় বাবার বাড়ি থেকে দেওয়া কাপড় ও আসবাব গোছাতে শুরু করেন তাঁর স্ত্রী মিনারা বেগম। এক পর্যায়ে ঘরের এক কোনায় লুকিয়ে রাখা মোটা অঙ্কের টাকা দেখতে পান। বিষয়টি উপস্থিত লোকজনের মধ্যে জানাজানি হলে শুরু হয় নানা জল্পনা। এ সময় তাঁকে মারধর করলে চুরির বিষয়টি স্বীকার করেন।
প্রতিবেশী তাছির উদ্দিন বাপ্পির ভাষ্য, চুরির ঘটনার পর জহুরুলের মধ্যে কিছু পরিবর্তন দেখা যায়। তিনি দিনমজুর, নিজস্ব কোনো জমি নেই। কয়েকদিন আগে শোনেন, অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর মোহরানার টাকা পরিশোধ করে তালাক দিচ্ছেন। এটি শোনার পর তিনি সন্দেহ করেছিলেন যে কয়েকদিন আগে বাজারে চুরিতে তাঁর হাত থাকতে পারে।
দোকানের অদূরেই জহুরুলের বাড়ি বলে জানান উপজেলার মংলা বাজারের ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, ‘তার বাড়িতে গিয়ে দেখি কয়েকজন তাকে বেঁধে রেখেছে। সে আমার দোকান থেকে টাকা চুরির কথা স্বীকার করেছে।’
ঘটনার পর ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা হলেন– মংলা বাজারের জহুরুল (২২), সাতকুড়ি গ্রামের শাহাজুল (৩২) এবং নওদাপাড়া বিলেরপাড়া গ্রামের ছেলে তাইজুল (৩৫)।
হাকিমপুর থানার ওসি সুজন মিয়া বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা চুরির বিষয়টি স্বীকার করেছেন। জহুরুলের কাছ থেকে ১ লাখ ২৬ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। তিনজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
৩৫০-৪০০ করে জিম্বাবুয়েকে ৩০০ রানের টার্গেট দিতে চায় বাংলাদেশ
ব্যাটিং ব্যর্থতায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম দিন ডুবেছিল বাংলাদেশ। বোলিংটাও হয়নি মনোঃপুত। তবে দ্বিতীয় দিন বোলারাই উদ্ধার করেছে বাংলাদেশকে।
সোমবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় দিনের লড়াই শেষে দুই দলের কাউকেই এগিয়ে রাখার সুযোগ নেই। বাংলাদেশের করা ১৯১ রানের জবাবে ২৭৩ রান করে জিম্বাবুয়ে। ৮২ রানের লিড পায় তারা। জবাব দিতে নেমে ১ উইকেটে ৫৭ রান তুলেছে স্বাগতিকরা। হাতে ৯ উইকেট রেখে বাংলাদেশ কতদূর যাবে সেটাই দেখার। তবে ম্যাচের ভবিষ্যৎ নিজেদের পক্ষে আনতে দ্বিতীয় ইনিংসে ভালো ব্যাটিংয়ের বিকল্প নেই।
কত রান হলে জিম্বাবুয়েকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেওয়া যাবে? প্রশ্ন করা হয়েছিল, ৫ উইকেট পাওয়া মেহেদী হাসান মিরাজকে। দলের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসে মিরাজ জানালেন, অন্তত ৩০০ রানের টার্গেট জিম্বাবুয়েকে দিতে চান তারা। এজন্য স্কোরবোর্ডে ৩৫০-৪০০ রান লাগবেই। সেই লক্ষ্যেই ব্যাটসম্যানরা ব্যাটিং করবেন বলে জানালেন।
তার ভাষ্য, ‘‘এখন যে উইকেট আছে, আমার কাছে মনে হয় যদি ভালো ব্যাটিং করতে পারি, যদি ৩৫০–৪০০ রান করতে পারি, এটা আমাদের দলের জন্য অনেক ভালো হবে। টেস্ট ক্রিকেটে যদি ৩০০ রান লক্ষ্য দেওয়া হয়, প্রতিপক্ষের জন্য অনেক কঠিন। কারণ উইকেটে অনেক পরিবর্তন আসবে। আমাদের ওই দায়িত্ব নিয়ে ব্যাটিং করতে হবে।’’
সিলেটের উইকেটে এখন পর্যন্ত পেসাররা বেশি সুবিধা পাচ্ছেন। স্পিনারদের সাফল্যের পাল্লা ভারী হলেও যতটুকু সুবিধা পেসাররাই পাচ্ছেন। নতুন বলে বল বেশ ভালো মুভমেন্ট পাচ্ছে। স্পিনাররা তেমন টার্ন পাচ্ছেন না। মিরাজও জানালেন, স্পিনাররা ছিলেন সাপোর্টিং রোলে। পেসাররাই তৈরি করেছেন আসল চাপ।
আজ দিনের শুরুতে নাহিদ রানা গতির ঝড় তুলে ৩ উইকেট নেন। হাসান মাহমুদ পান ১ উইকেট। দ্বিতীয় সেশনে খালেদের পকেটে যায় ১ উইকেট। বাকি ৫ উইকেট পান মিরাজ। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় জিম্বাবুয়েকে বেশিদূর যেতে দেয়নি বাংলাদেশ।
বোলারদের পারফরম্যান্সে খুশি মিরাজ, ‘‘আমাদের বোলাররা খুব ভালো বল করেছি। গতকাল আমরা বোলাররা খুব ভালো করতে পারিনি। হয়তো আমাদের আরো ভালো করা উচিৎ ছিল। পেস বোলাররা খুব ভালো বল করেছে। হাসান, নাহিদ রানা এবং… খালেদ, তিনজন… খুবই ভালো বল করেছে। আমাদের স্পিনারদের ভূমিকা ছিল আমরা যেন সাপোর্ট করতে পারি। টেস্ট ম্যাচে প্রথম ইনিংসে নতুন বলে পেসারদের ভূমিকাটা গুরুত্বপূর্ণ। তারা সেই জিনিসটা মেইনটেইন করতে পেরেছে। এবং… আমার কাছে মনে হয়, তারা যেভাবে বল করেছে এটা আমাদের দলের জন্য অনেক সাহায্য করেছে ওদেরকে অলআউট করতে।’’
ম্যাচ এখন নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আছে বলে মনে করছেন মিরাজ, ‘‘এখন পর্যন্ত আমাদের নিয়ন্ত্রণেই আছে আমি মনে করি। আমাদের ১ উইকেট গিয়েছে। ব্যাটসম্যান আছে। আমরা যদি ভালো একটা স্কোর দিতে পারি তাদেরকে। চার নম্বর দিন ওদের জন্য অনেক কঠিন হবে এই উইকেটে।’’
তৃতীয় দিনের সকালের সেশনটাকেই মূল চ্যালেঞ্জ হিসেবে ধরছেন মিরাজ, ‘‘প্রথমে আমাদের লিড পার করতে হবে। আমাদের লক্ষ্য থাকবে লিডটা যেন ক্রস করতে পারি। তারপর আমাদের ব্যাটসম্যানরা যেন দায়িত্ব নিয়ে বড় একটা স্কোর করতে পারি।’’
সিলেট/ইয়াসিন