মিয়ানমারে গত শুক্রবারের শক্তিশালী ভূমিকম্প নতুন করে দুর্দশা বয়ে এনেছে। প্রাকৃতিক এই দুর্যোগের আগে থেকেই নানা বিপত্তিতে ছিল দেশটি। সেখানে দীর্ঘ সময় ধরে চলছে গৃহযুদ্ধ। সামরিক জান্তা ক্ষমতায় বসার পর বিশ্বের বেশির ভাগ দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন মিয়ানমার।

মিয়ানমারে ২০২১ সালে নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতায় বসে সামরিক জান্তা। এরপর থেকেই দেশটির সামরিক বাহিনীর সঙ্গে গণতন্ত্রপন্থী যোদ্ধা এবং ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর বিদ্রোহীদের রক্তক্ষয়ী সংঘাত চলছে। এতে করে দেশটির যোগাযোগ ব্যবস্থার বড় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে শুক্রবারের ভূমিকম্পে মিয়ানমারে কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তার প্রকৃত চিত্রটা পাওয়া কঠিন।

মিয়ানমারের সামরিক সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পের কারণে শনিবার পর্যন্ত দেশটিতে ১ হাজার ৬০০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞদের ধারণা, মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এমনকি প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যাটা জানতে কয়েক সপ্তাহ লেগে যেতে পারে।

চলুন দেখে নেওয়া যাক এখন পর্যন্ত মিয়ানমারের ভূমিকম্প নিয়ে কী জানা গেল—

ঐতিহাসিক এক শহরে সবচেয়ে ক্ষয়ক্ষতি

ভূমিকম্পে মিয়ানমারের ঐতিহাসিক শহর মান্দালয় শহরে ধ্বংসযজ্ঞের বিভিন্ন চিত্র শনিবার সামনে এসেছে। এই শহরে প্রায় ১৫ লাখ মানুষের বসবাস। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল থেকে মান্দালয় সবচেয়ে কাছের শহর।

বৌদ্ধ মঠ এবং মিয়ানমারের রাজবংশের সুবিশাল প্রাসাদের জন্য মান্দালয় পরিচিত। শহরটির বাসিন্দারা সিএনএনকে বলেছেন, ভূমিকম্পে শহরের ঘরবাড়ি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়, মসজিদ ও মঠ ধসে পড়েছে। ফেটে গেছে বিভিন্ন সড়ক। একজন ভূতাত্ত্বিকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবারের ভূমিকম্পের সময় ৩৩৪টি আণবিক বোমার সমান শক্তি নির্গত হয়েছে।

সাবেক আইনজীবী সিএনএনকে জানিয়েছেন, ভূমিকম্পে তাঁর স্ত্রীর পরিবারের তিন সদস্য মারা গেছেন। তিনি বলেন, ‘এখনো পর্যন্ত আমরা তাঁদের মরদেহ ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে উদ্ধার করতে পারিনি।’

ভূমিকম্পের পর থেকেই আহতদের নিয়ে হাসপাতালে ছুটছেন মান্দালয়ের বাসিন্দারা। নিখোঁজ বা ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়া প্রিয়জনের শেষ খবর কী, তা জানতে অপেক্ষা করছেন অনেকে। তাঁদের মধ্যে এক নারীর সিএনএনের কাছে তুলে ধরেছেন, তাঁর পরিবারের এক সদস্যের ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ার কথা।

৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পের সময় মান্দালয়ের ওই নারী তাঁর শিশু সন্তানের জন্য দুধ বানাচ্ছিলেন। পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, ‘ভূমিকম্পটি খুবই শক্তিশালী ছিল। দ্রুত সবকিছু ঘটে যায়।’ এতে ওই নারীর বাড়ির একটি দেয়ালের অংশ ভেঙে তাঁর দাদির ওপর পড়ে। তাঁর দুই পা ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে।

ভূমিকম্পের পর মান্দালয় শহরের রাস্তায় বেরিয়ে আসেন বাসিন্দারা.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র র ভ ম কম প ভ ম কম প র

এছাড়াও পড়ুন:

মিয়ানমারের ভূমিকম্পে ‘৩৩৪ আণবিক বোমার’ শক্তি: ‘আমাদের উদ্ধারে কেউ আসেনি’

মিয়ানমারে গত শুক্রবারের শক্তিশালী ভূমিকম্প নতুন করে দুর্দশা বয়ে এনেছে। প্রাকৃতিক এই দুর্যোগের আগে থেকেই নানা বিপত্তিতে ছিল দেশটি। সেখানে দীর্ঘ সময় ধরে চলছে গৃহযুদ্ধ। সামরিক জান্তা ক্ষমতায় বসার পর বিশ্বের বেশির ভাগ দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন মিয়ানমার।

মিয়ানমারে ২০২১ সালে নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতায় বসে সামরিক জান্তা। এরপর থেকেই দেশটির সামরিক বাহিনীর সঙ্গে গণতন্ত্রপন্থী যোদ্ধা এবং ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর বিদ্রোহীদের রক্তক্ষয়ী সংঘাত চলছে। এতে করে দেশটির যোগাযোগ ব্যবস্থার বড় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে শুক্রবারের ভূমিকম্পে মিয়ানমারে কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তার প্রকৃত চিত্রটা পাওয়া কঠিন।

মিয়ানমারের সামরিক সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পের কারণে শনিবার পর্যন্ত দেশটিতে ১ হাজার ৬০০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞদের ধারণা, মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এমনকি প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যাটা জানতে কয়েক সপ্তাহ লেগে যেতে পারে।

চলুন দেখে নেওয়া যাক এখন পর্যন্ত মিয়ানমারের ভূমিকম্প নিয়ে কী জানা গেল—

ঐতিহাসিক এক শহরে সবচেয়ে ক্ষয়ক্ষতি

ভূমিকম্পে মিয়ানমারের ঐতিহাসিক শহর মান্দালয় শহরে ধ্বংসযজ্ঞের বিভিন্ন চিত্র শনিবার সামনে এসেছে। এই শহরে প্রায় ১৫ লাখ মানুষের বসবাস। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল থেকে মান্দালয় সবচেয়ে কাছের শহর।

বৌদ্ধ মঠ এবং মিয়ানমারের রাজবংশের সুবিশাল প্রাসাদের জন্য মান্দালয় পরিচিত। শহরটির বাসিন্দারা সিএনএনকে বলেছেন, ভূমিকম্পে শহরের ঘরবাড়ি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়, মসজিদ ও মঠ ধসে পড়েছে। ফেটে গেছে বিভিন্ন সড়ক। একজন ভূতাত্ত্বিকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবারের ভূমিকম্পের সময় ৩৩৪টি আণবিক বোমার সমান শক্তি নির্গত হয়েছে।

সাবেক আইনজীবী সিএনএনকে জানিয়েছেন, ভূমিকম্পে তাঁর স্ত্রীর পরিবারের তিন সদস্য মারা গেছেন। তিনি বলেন, ‘এখনো পর্যন্ত আমরা তাঁদের মরদেহ ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে উদ্ধার করতে পারিনি।’

ভূমিকম্পের পর থেকেই আহতদের নিয়ে হাসপাতালে ছুটছেন মান্দালয়ের বাসিন্দারা। নিখোঁজ বা ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়া প্রিয়জনের শেষ খবর কী, তা জানতে অপেক্ষা করছেন অনেকে। তাঁদের মধ্যে এক নারীর সিএনএনের কাছে তুলে ধরেছেন, তাঁর পরিবারের এক সদস্যের ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ার কথা।

৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পের সময় মান্দালয়ের ওই নারী তাঁর শিশু সন্তানের জন্য দুধ বানাচ্ছিলেন। পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, ‘ভূমিকম্পটি খুবই শক্তিশালী ছিল। দ্রুত সবকিছু ঘটে যায়।’ এতে ওই নারীর বাড়ির একটি দেয়ালের অংশ ভেঙে তাঁর দাদির ওপর পড়ে। তাঁর দুই পা ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে।

ভূমিকম্পের পর মান্দালয় শহরের রাস্তায় বেরিয়ে আসেন বাসিন্দারা

সম্পর্কিত নিবন্ধ