শনিবার রাত ৮টা। রাজধানীর বিমানবন্দর সংলগ্ন সেন্টার পয়েন্ট স্টার সিনেপ্লেক্স।  একে একে আসছেন আমন্ত্রিত অতিথিরা। উপলক্ষ নির্মাতা শরাফ আহমেদ জীবনের ঈদের সিনেমা ‘চক্কর ৩০২’ এর প্রিমিয়ার শো। কিন্তু এই সিনেমার প্রধান চরিত্রে অভিনয় করা মোশাররফ করিম যখন প্রবেশ করলেন তখন তাঁকে দেখে অবাক হয়েছিলেন উপস্থিত সবাই। কারণ, অন্যদিনের মত স্বাভাবিক ছিলেন না তিনি। পায়ে ব্যান্ডেজ নিয়ে হুইল চেয়ারে করে অনুষ্ঠানে প্রবেশ করেন এই অভিনেতা।

প্রথমে মোশাররফ করিমকে দেখে অনেকেই মনে করেছিল এটি হয়তো সিনেমার প্রচারণার একটি অংশ। কিন্তু না। মোশাররফ করিম ও নির্মাতা শরাফ আহমেদ জীবন জানালেন, এটি সিনেমার প্রচারণার কোনও অংশ না। বাস্তবে তাঁর পায়ে ফোঁড়াজনিত কারণে অস্ত্রোপচার হয়েছে।

শরাফ আহমেদ জীবন সমকালকে বলেন, ‘মোশাররফ ভাইয়ের পায়ে একটি অস্ত্রোপচার হয়েছে। তারপরও যে তিনি আজকের প্রিমিয়ারে আসবেন এটা আমরা কল্পনাও করিনি। তিনি তাঁর ডেডিকেশনের জায়গা থেকে এসেছেন। এজন্যই তিনি সেরা। এজন্যই তিনি মোশাররফ করিম। একজন নির্মাতা হিসেবে বলতে পারি, এদেশে তাঁর মত ডেডিকেটেড অভিনেতা পাওয়া সত্যিই কঠিন।’
‘‘
প্রিমিয়ার শোতে অতিথিদের মধ্যে ছিলেন, অভিনেত্রী আফসানা মিমি, বিজরী বরকতুল্লাহ, মেহজাবিন চৌধুরী, রুকাইয়া জাহান চমক, আইশা খান, চক্কর সিনেমার অভিনয়শিল্পী ইন্তেখাব দিনার, সুমন আনোয়ার, রওনাক হাসান, মৌসুমী নাগ ও শাশ্বত দত্তসহ আরও অনেকে।

প্রিমিয়ার শো শেষে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন মোশাররফ। তিনি বলেন, “এখানে উপস্থিত হয়ে আজ সিনেমাটি যারা দেখলেন তারাই বলতে পারবেন এটি কেমন আছে। তবে আমি এটুকু বলতে পারি সবাই দারুণ অভিনয় করেছেন। কারণ, জীবন সবার থেকে অভিনয়টা আদায় করে নিয়েছেন। এছাড়া এখানে নতুন কয়েকজন শিল্পী কাজ করেছেন। তারা কিন্তু কোনও অংশেই কম করেনি। ওদের নিয়ে আমি খুব আশাবাদী। আশাকরি সিনেমাটি সবার ভালো লাগবে।”

সিনেমাটি দেখার পর অভিনেত্রী মেহজাবিন চৌধুরী বলেন, “দর্শকের সাড়া পাচ্ছে বলেই কিন্তু বাংলাদেশেও থ্রিলার জনরার সিনেমার এখন বানানো হচ্ছে। ওটিটি থেকে বেরিয়ে এখন বড় পর্দাতেও আমরা সেই ধরনের সিনেমাগুলো দেখতে পাচ্ছি। ‘চক্কর’ দেখে বিষয়টি ভালো লেগেছে। মোশাররফ ভাইসহ সবাই অনেক দুর্দান্ত অভিনয় করেছেন। এখানে সুন্দর বার্তা পেয়েছে। শেষে নির্মাতা একটা চমকও আছে। সব মিলিয়ে দারুণ একটি সিনেমা হয়েছে। এমন একটি সিনেমা উপহার দেওয়ার জন্য ‘চক্কর’ টিমকে ধন্যবাদ।”

‘চক্কর ৩০২’ সিনেমার টিজার এসেছে ২৬ মার্চ। ১ মিনিট ১৬ সেকেন্ডের টিজারে টিজার অনুসারে, হত্যা রহস্য ঘিরে আবর্তিত হবে গল্প। যেখানে উঠে আসবে জীবনের নানান অন্ধকার।

পরিচালক জীবন বলেন, “গল্পটা আমাদের নিজেদের গল্প, দেশের গল্প। একটা মানুষের সম্পর্কের গল্প। দর্শক যদি গল্পের সঙ্গে, চরিত্রের সঙ্গে নিজেদের কানেক্ট করতে পারে তাহলে সিনেমাটি পছন্দ করবে। এখানে কোনো চ্যালেঞ্জ দেখছি না।”

২০২১-২২ অর্থবছরে ‘চক্কর’ সিনেমার জন্য অনুদান পান জীবন। প্রথমে সিনেমাটির নাম ছিল ‘বিচারালয়’। পরবর্তী সময়ে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে পরিবর্তন করে নাম রাখা হয়েছে ‘চক্কর ৩০২’।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশ আমার সেকেন্ড হোম, বাটার চিকেন সুস্বাদু: মাসাকাদজা

দুই বছর পর টেস্ট দলে প্রত্যাবর্তন দারুণভাবে রাঙিয়েছেন ওয়েলিংটন মাসাকাদজা। ১০ ওভার হাত ঘুরিয়ে ৪ মেডেনে ২১ রানে ৩ উইকেট পেয়েছেন। মুশফিকুর রহিম, মুমিনুল হকের উইকেটের পর তার পকেটে ঢুকেছে তাইজুলের উইকেট। জানিয়ে রাখা ভালো, হ্যামিল্টন মাসাকাদজা ও সিঙ্গি মাসাকাদজার ছোট ভাই ওয়েলিংটন মাসাকাদজা।

২০১৮ সালে সিলেটে টেস্ট ক্রিকেটের অভিজাত সংস্করণে পা রেখেছিলেন মাসাকাদজা। যদিও এরপর খুব বেশি টেস্ট খেলা হয়নি তার। ২০২৩ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুই টেস্ট। দুই বছর বাইরে থাকার পর আবার সিলেটেই তার ফিরে আসা। ৩১ বছর বয়সী এই স্পিনার অনুভব করেন, বাংলাদেশ তার সেকেন্ড হোম। ফিরে এসে আনন্দ পান। পছন্দ করেন বাংলাদেশের খাবারও।

সোমবার টেস্টের দ্বিতীয় দিনের সকালে ব্রডকাস্টকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মাসাকাদজা বলেছেন, ‘‘নিশ্চিতভাবেই (বাংলাদেশে ফিরে ভালো লাগে) । আমি অনুভব করি এটা আমার সেকেন্ড হোম। বিশেষ করে স্পিনার হিসেবে এখানকার কন্ডিশন বেশ মানানসই। তারা সুবিধা পেয়ে থাকে। এখানের বাটার চিকেনও সুস্বাদু।’’

‘‘হ্যাঁ, নিশ্চিতভাবেই এটা দারুণ কিছু (বাংলাদেশে ফেরা) । আমার টেস্ট অভিষেক এখানে হয়েছিল। যেই প্রান্ত থেকে বোলিং শুরু করেছিলাম সেখান থেকেই গতকাল করেছিলাম। কয়েক বছর টেস্ট ক্রিকেট খেলার সুযোগ পাচ্ছিলাম না। এখন ফিরে এসে ভালো কিছু করেছি যা ভালো লাগছে।’’ – যোগ করেন মাসাকাদজা।

মুশফিকুর ও মুমিনুলকে ফেরাতে দুর্দান্ত কোনো ডেলিভারী করতে হয়নি মাসাকাদজাকে। মুশফিক লেন্থ বল উড়াতে গিয়ে মিড উইকেটে ক্যাচ দেন। মুমিনুল ফিফটি ছোঁয়ার পর হাওয়ায় ভাসানো বল স্লগ সুইপ করতে গিয়ে মিড উইকেটেই ক্যাচ দেন। এছাড়া তাইজুল বল পুল করতে গিয়ে ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে।

উইকেটের সহায়তা পেয়ে ভালো করায় উচ্ছ্বসিত মাসাকাদজা, ‘‘আমরা এই উইকেটে সঠিক লাইনে বলটা করতে চেয়েছিলাম। আমরা ভেবেছিলাম এখানে সিমারদের জন্য কিছু সাহায্য থাকবে। সেরকমই হয়েছে। সেই সাথে আমরা স্পিনাররা কিছু উইকেট পেয়েছি যা নিশ্চিতভাবেই দারুণ সংকেত।’’

সিলেট/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ