যেভাবে ঈদ উৎসব উদ্যাপন শুরু হয়েছিল
Published: 30th, March 2025 GMT
দুনিয়া জুড়ে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদ। এর একটি ঈদুল ফিতর, আর অন্যটি ঈদুল আজহা, যাকে কোরবানির ঈদও বলা হয়। বাংলাদেশের মুসলমানরা সবচেয়ে বড় উৎসব হিসেবে বিবেচনা করেন ঈদুল ফিতরকে এবং এক কথায় সবার কাছে পরিচিত ঈদ হিসেবে।
ঈদ ইসলামের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব হলেও ইসলাম ধর্মের আবির্ভাবের সঙ্গে সঙ্গেই কিন্তু ঈদের প্রচলন শুরু হয়নি। মহানবী (সা.
মহানবী (সা.) মুসলমানদের এ দুটি উৎসব পালন করতে নিষেধ করেন এবং বলেন, মহান আল্লাহ তোমাদের জন্য এ দুটির পরিবর্তে এর চেয়ে উত্তম দুটি দিন দান করেছেন। তা হলো ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা। (নাসায়ি, হাদিস: ১,৫৫৬, আবু দাউদ, হাদিস: ১,১৩৪)
মদিনায় প্রথম ঈদ
ঈদের নামাজ প্রবর্তিত হওয়ার সময় সম্পর্কে দুটি অভিমত পাওয়া যায়-প্রথমত, আদ-দুররুল মুখতার গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে যে প্রথম হিজরিতে ঈদের নামাজের বিধান প্রবর্তিত হয়েছে।
দ্বিতীয়ত, বেশির ভাগ আলেমের মতে, দ্বিতীয় হিজরিতে তার বিধান প্রবর্তিত হয়। কেননা, দ্বিতীয় হিজরির শাবান মাসে রোজা ফরজ হয়। মুসলমানরা মদিনায় প্রথম ঈদুল ফিতরের নামাজ পড়ে দ্বিতীয় হিজরি মোতাবেক ৬২৪ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ বা ৩১ মার্চ। (আনওয়ারুল মিশকাত: ৩/৬০৫; আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া: ৫/৫৪)
ঈদ উদ্যাপন মদিনায় শুরু হলেও পরবর্তীতে পুরো দুনিয়ায় মুসলমানদের মধ্যে তা ছড়িয়ে পড়ে এবং প্রচলিত হয়ে যায় ঈদ পালন। কালক্রমে অঞ্চল ভেদে এই উৎসবে ভিন্ন ভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা যুক্ত হয়।
আরও পড়ুনঈদুল ফিতর নামাজের নিয়ম১০ এপ্রিল ২০২৪প্রথম যুগের ঈদ
তখনকার ঈদে বর্তমান ঈদের মতো নতুন জামাকাপড়, কেনাকাটার ধুমধাম ছিল না। তবে আনন্দ-খুশি কম ছিল না। মহানবী (সা.) ঈদের দিন ছোট-বড় সবার আনন্দের প্রতি খেয়াল করতেন। মদিনার ছোট ছোট শিশু-কিশোরের সঙ্গে বিশ্বনবী (সা.) আনন্দ করতেন। শরিয়তের অন্তর্ভুক্ত সব আনন্দ করার অনুমতি দিতেন।
মুসলমানদের জন্য ঈদ পালন ওয়াজিব অর্থাৎ অবশ্য পালনীয়। ঈদের দিন সকালে দুই রাকাত নামাজ আদায় করা, যা সব মুসলমানের জন্য অবশ্য পালনীয়। এ ছাড়া ঈদুল ফিতরে ফিতরা প্রদান করাও একটি অবশ্য পালনীয় রীতি। ফিতরা ঈদের নামাজের আগে অসহায় গরিব-দুঃখীদের দিতে হয়।
যখন প্রথম ঈদের প্রচলন চালু হয়, তখন ঈদের নামাজের পর মিষ্টি দ্রব্য খাওয়া এবং আত্মীয় পরিজন, প্রতিবেশী বন্ধুদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের রেওয়াজ ছিল।
আরও পড়ুনমক্কার পর পবিত্রতম শহর মদিনা২৯ জানুয়ারি ২০২৩উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ঈদ র ন ম জ ম সলম ন প রবর ত রবর ত ত মদ ন য় প রথম আনন দ
এছাড়াও পড়ুন:
তারেক রহমানের ঈদ শুভেচ্ছা, চাইলেন স্বৈরাচারের বিচারও
দেশবাসীকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। একই সঙ্গে ‘পলাতক স্বৈরাচার’ এবং তাদের দোসরদের বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেশে আইন ও ন্যায়ের শাসন প্রতিষ্ঠা করাকে এবারের ঈদের অঙ্গীকার হিসেবে বর্ণনা করেছেন তিনি।
যুক্তরাজ্যের লন্ডনে রয়েছেন তারেক রহমান। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও সেখান পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করবেন।
লন্ডন থেকে বাংলাদেশসহ বিশ্বের মুসলিম উম্মাহর সুখ, শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির জন্য দোয়া কামনা করেছেন তারেক রহমান।
আরো পড়ুন:
সারজিসের ১০০ গাড়ি নিয়ে ‘শোডাউন’, যা বললেন ফখরুল
দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র চলছে: মির্জা ফখরুল
রবিবার ঈদের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর দেশবাসীর সঙ্গে সেই খুশি ভাগাভাগি করে নেন তারেক রহমান। একইসঙ্গে জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ ও জুলাই যোদ্ধাদের বিষয়ে তার মনঃকষ্ট ব্যক্ত করে বিবৃতি দিয়েছেন তিনি।
রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানে ‘ফ্যাসিবাদের’ পতন হওয়ায় এবার ঈদ আনন্দের উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনায় নতুন মাত্রা যোগ হওয়ার কথা তুলে ধরেছেন তারেক রহমান।
বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, “তবে মানুষের মনে পবিত্র আনন্দ-উচ্ছ্বাসের এমন এক বাধাহীন ঊর্মিমুখর সময়েও অনেক মায়েদের মনে আনন্দ নেই। অনেক পরিবারে নেই উৎসবের আমেজ। কারণ ফ্যাসিবাদের দীর্ঘ দেড় দশকের গুম, খুন, অপহরণ, জুলুম নির্যাতনে সন্তান-স্বজনহারা লাখো পরিবারে নেমে এসেছিল জাহেলিয়াতের অন্ধকার।”
তারেক রহমান বলেছেন,‘‘দীর্ঘ দেড় দশক ধরে ফ্যাসিবাদী শাসন চালাতে গিয়ে যারা মানুষের ঈদ উৎসবের আনন্দকে ধ্বংস করে দিয়েছে, যারা অস্ত্রের জোরে মায়েদের বুক থেকে তাদের প্রিয় সন্তানদের কেড়ে নিয়েছে, যারা দেশের অসংখ্য অগণিত সন্তানকে পিতৃহারা-মাতৃহারা করেছে, এই বাংলাদেশে তাদের বিচার হতেই হবে।
“যে কোনো মূল্যে পলাতক স্বৈরাচার আর তাদের দোসরদের বিচারের মুখোমুখি করার মাধ্যমে দেশে আইন ও ন্যায়ের শাসন প্রতিষ্ঠা করে সন্তানহারা মায়েদের মনে স্বজন হারা শোকসন্তপ্ত পরিবারে একটু হলেও সান্ত্বনার বার্তা দেয়া হবে। এবারের ঈদে এটাই হোক আমাদের অঙ্গীকার,” বলেন তিনি।
তারেক রহমান বলেন, “আন্দোলনে হতাহতদের পরিবারগুলোতে ঈদ উৎসবের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস নেই। ঈদের দিনেও হয়তো সন্তানহারা কোনো মায়ের চোখে অশ্রু থাকবে। এই আনন্দঘন সময়েও স্বজনদের হৃদয়ে আপনজন হারানোর নিঃশব্দ কান্না।”
“মাফিয়া চক্রের নির্মমতায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত প্রিয় মানুষটির কাছে বসেই অনেককেই ঈদ আনন্দের এই দিনটি কাটাতে হচ্ছে আশা-নিরাশা আর হতাশায়।”
বিবৃতিতে তারেক রহমান বলেন, ‘‘ঈদুল ফিতর নির্মল আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ মর্মবাণী মানবজাতির কাছে পৌঁছে যায় তা হচ্ছে ‘সকলের তরে সকলে আমরা’। এই মর্মবাণী মানসিক কদর্য, অন্যায়, অবিচার ও নিষ্ঠুর সামাজিক অসাম্যকে অতিক্রম করে এক নিবিড় ভ্রাতৃত্ববোধের প্রেরণা জাগায়।”
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।