জুলাই কন্যারা ২০২৫ সালের যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মর্যাদাপূর্ণ ‘আন্তর্জাতিক সাহসী নারী’ পুরস্কার অর্জন করায় অভিনন্দন জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। জুলাই কন্যাদের সাহসিকতার প্রতীক অভিহিত করে শনিবার তাঁদের অভিনন্দনবার্তা পাঠান প্রধান উপদেষ্টা।

অভিনন্দনবার্তায় জুলাই কন্যাদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘তোমাদের সবাইকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। এই স্বীকৃতি ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে সংঘটিত গণ-অভ্যুত্থানে তোমাদের অসাধারণ সাহসিকতা, নেতৃত্ব এবং অটল অঙ্গীকারের শক্তিশালী প্রমাণ; সেই সংকটময় সময়ে তোমাদের কৃতি সত্যিকার সাহসিকতার উদাহরণ সৃষ্টি করেছে"।

শান্তিতে নোবেলজয়ী অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়ে তোমরা কেবল প্রতিরোধের প্রতীক হিসেবে দাঁড়িয়ে যাওনি, একই সঙ্গে অস্থির একটি সময়ে জাতিকেও আশা দিয়েছ।’

অভিনন্দন বার্তায় বলা হয়, ‘পুরস্কারে যেমনটি বলা হয়েছে, অটল সংকল্পের সঙ্গে তোমরা সহিংস দমন-পীড়নের মুখোমুখি হয়েছ, নিরাপত্তা বাহিনীর আক্রমণের মুখে তোমরা পুরুষ সহ-সংগ্রামীদের সামনে ঢাল হিসেবে দাঁড়িয়েছ। ইন্টারনেট যখন বন্ধ ছিল তখনো মারাত্মক চ্যালেঞ্জের মধ্যেও ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অভিনব উপায় খুঁজে বের করেছ।’

অভিনন্দন বার্তায় অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘তোমাদের শক্তি, দৃঢ়তা এবং দৃঢ় সংকল্প বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাপী অগণিত ব্যক্তি ও গোষ্ঠীকে অনুপ্রাণিত করে চলেছে। তোমাদের নিঃস্বার্থ প্রচেষ্টা আমাদের সকলের কাছে স্মরণ করিয়ে দেয় যে ন্যায়বিচারের সাধনা কখনই সহজ নয়, তবে তা সর্বদা সার্থক। তোমরা বিশ্বকে দেখিয়েছ যে প্রকৃত নেতৃত্ব এবং ত্যাগ কেমন হয় এবং তোমাদের সাহসের মাধ্যমে তোমরা বাংলাদেশের জন্য একটি উজ্জ্বল এবং আরও ন্যায়সংগত ভবিষ্যতের পথ প্রশস্ত করেছ।’

জুলাই কন্যাদের জন্য দেশবাসী গর্বিত উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘তোমাদের প্রত্যেকের জন্য আমরা ভীষণভাবে গর্বিত এবং এটি তোমাদের প্রাপ্য এক স্বীকৃতি যা তোমাদের অটল স্পৃহাকে প্রতিফলিত করে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তোমাদের সাথে আছে এবং একসাথে আমরা গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার এবং স্বাধীনতার আদর্শের দিকে কাজ চালিয়ে যাব, যা তোমরা এত সাহসের সাথে রক্ষা করেছ।’

অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ এগিয়ে যাওয়ার পথে তোমাদের সম্মুখসারিতে এবং কেন্দ্রীয় ভূমিকায় পাওয়ার জন্য আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি।’ ‘তোমরা সমগ্র বাংলাদেশকে গর্বিত করেছ’ উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, 'আরও একবার এই অসাধারণ অর্জনের জন্য অভিনন্দন।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য ইউন স

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই অভ্যুত্থানের নারী শিক্ষার্থীরা পেলেন যুক্তরাষ্ট্রের সম্মানজনক পুরস্কার

যুক্তরাষ্ট্রের সম্মানজনক ‘মেডেলিন অলব্রাইট অনারারি গ্রুপ অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছেন জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের নারী শিক্ষার্থী আন্দোলনকারীরা। আন্তর্জাতিক নারী সাহসিকা (ইন্টারন্যাশনাল উইমেন অব কারেজ—আইডব্লিউওসি) পুরস্কারের পাশাপাশি এই পুরস্কার দেওয়া হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে শুক্রবার এই পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আগামী ১ এপ্রিল পররাষ্ট্র দপ্তরে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ও মার্কিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের আয়োজনে বিজয়ীদের এই অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হবে।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে বলা হয়, বাংলাদেশে দমন–নিপীড়নের বিরুদ্ধে গত বছর জুলাই–আগস্টে ছাত্রদের আন্দোলনে সাহসী একদল নারী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তাঁরা অসাধারণ সাহসিকতার সঙ্গে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন; হুমকি ও সহিংসতার শিকার হওয়ার ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও পুরুষ বিক্ষোভকারীদের মধ্যে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ চালিয়ে গেছেন। সহযোদ্ধা পুরুষ বিক্ষোভকারীদের যখন গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তখন এই নারীরা উদ্ভাবনী উপায়ে যোগাযোগ বজায় রেখেছেন এবং আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন। নানা প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করে এমনকি ইন্টারনেট সম্পূর্ণ বন্ধ থাকার পরও বিক্ষোভ চালিয়ে গেছেন তাঁরা। অনিশ্চয়তার মধ্যেও তাঁদের এই সাহসিকতা ও নিঃস্বার্থতা অসমসাহসের আরেক সংজ্ঞা।

ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা হয়, মেডেলিন অলব্রাইট অনারারি গ্রুপ অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনীত হয়েছে ‘উইমেন স্টুডেন্ট প্রোটেস্ট লিডারস অব বাংলাদেশ’।

পুরস্কারপ্রাপ্তির বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা গতকাল শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই পুরস্কারকে আমরা জুলাই অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া নারীদের সম্মিলিত অর্জন হিসেবে দেখছি। নারীরা শুধু নারী হিসেবে এই অভ্যুত্থানে আসেননি, বরং রাস্তায় আমাদের ভাইবোনদের মৃত্যু দেখে একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে ক্ষুব্ধ হয়েই আমরা রাজপথে নেমেছিলাম। কিন্তু অভ্যুত্থানের পর নারীদের লিঙ্গীয় পরিচয়কে টেনে এনে তাঁদের সাইড করা (কোণঠাসা) বা পেছনে ঠেলে দেওয়ার একটা প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল।’

ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে নারীরা অসমসাহসিকতায় নেমে এসেছিলেন রাস্তায়

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সম্মানজনক বিদায় নেওয়ার ব্যাপারে অন্তর্বর্তী সরকারকে বোঝাবে বিএনপি
  • জুলাই অভ্যুত্থানের নারী শিক্ষার্থীরা পেলেন যুক্তরাষ্ট্রের সম্মানজনক পুরস্কার
  • মুন্সীগঞ্জে ছিনতাইকারী সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত ১, আহত ২