‘ঈদের চাঁদ আকাশে সালামি দিন বিকাশে’
Published: 29th, March 2025 GMT
ভাগনে-ভাগনি, ভাতিজা-ভাতিজি, জুনিয়র সহকর্মী, এলাকার ছোট ভাইবোন, পাড়া-প্রতিবেশী সব মিলিয়ে অন্তত শখানেক ব্যক্তিকে ঈদের সময় সালামি দেন ব্যবসায়ী রাশেদুল আলম। তাদের কেউ থাকেন কাছে, কেউবা দূরে। তবে সবার সঙ্গেই সমানভাবে আনন্দ ভাগ করে নিতে চান তিনি। এবার আগে থেকেই বিকাশে সেন্ড মানি গ্রুপ তৈরি করে রেখেছেন, যাতে ঈদের চাঁদ দেখার পর এবং ঈদের দিন সকালে গ্রুপ সেন্ড মানির মাধ্যমে প্রিয়জনদের সালামি দিতে পারেন। রাশেদুল বলেন, ‘এক সময় চকচকে টাকায় সালামি দেওয়া হতো; কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে বিকাশেই দিই সালামি। সালামির রূপান্তর ঘটেছে ক্যাশ থেকে ডিজিটালে। তবে আনন্দ কমেনি এতটুকুও।’
মুসলিম দেশগুলোয় বিশেষ করে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও ইরানে বহু আগে থেকেই ঈদ উদযাপনের অন্যতম অনুষঙ্গ হয়ে আছে সালামি। সালামি বা ঈদি নামে পরিচিত এই প্রথায় বড়দের কাছ থেকে ছোটদের ‘বকশিশ’ পাওয়া ঈদের খুশিকে বহু গুণ বাড়িয়ে তোলে। চিরাচরিত সেই প্রথায় প্রযুক্তির ছোঁয়া লেগেছে দেশের সবচেয়ে বড় মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশের কল্যাণে। গত কয়েক বছর ধরেই দেশের সব ধরনের মানুষের কাছে ঈদ উদযাপনে অন্যতম অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে বিকাশে সালামি।
ঈদের আমেজকে সামনে রেখে বিকাশ অ্যাপে যুক্ত হয়েছে অনেক বর্ণিল ঈদকার্ড, যা বিকাশে ডিজিটাল সালামিকে করে তুলেছে আরও আকর্ষণীয়। শুভেচ্ছা বার্তাসহ রঙিন কার্ডগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করার সুবিধা ঈদে যোগ করছে বাড়তি মাত্রা। পাশাপাশি ‘ঈদের চাঁদ আকাশে, সালামি দিন বিকাশে’, ‘সালাম লাগবে সালাম নিন-সালামিটা বিকাশে দিন’, ‘বিকাশে সালামি দিয়ে কেউ দেউলিয়া হয় না’, ‘চৌধুরী সাহেব গরিব হতে পারি, কিন্তু সালামি নিই বিকাশে’, ‘বিকাশে সালামি না দিলে বন্ধু কথা কয়ো না’– এমন অসংখ্য ডিজিটাল স্টিকারে পুরোনো দিনের স্টিকার কার্ডের আমেজ ফিরিয়ে এনেছে ডিজিটাল সালামি।
একটি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত নাইমুল করিম বলেন, ‘ঈদ আনন্দের একটি বড় অংশজুড়েই থাকে সালামি, বিশেষ করে ছোটদের জন্য। আর এ যুগে সালামি দেওয়া বা চাওয়ার ধরনে পরিবর্তন এসেছে প্রযুক্তির কল্যাণে। ঈদের সময় সহকর্মী বা আত্মীয়স্বজন সবার সঙ্গে দেখা হওয়াটা কঠিনই বটে। ছোটদের ঈদ আনন্দ সালামিতে গত কয়েক বছরের মতো এবারও তাই সবাইকে মজার মেসেজসহ সালামি পাঠিয়ে দেবো বিকাশে।’
নাইমুলের মতো কোটি গ্রাহক স্নেহভাজনদের ঈদ সালামি পাঠাতে এ বছরও ব্যবহার করবেন বিকাশের সেন্ড মানি সেবা। সঙ্গে বিকাশ অ্যাপে থাকা ঈদকার্ড অথবা গ্রাহক চাইলে নিজের পছন্দমতো সেই কার্ডে কোনো খরচ ছাড়াই লিখে দিতে পারবেন আবেগ-অনুভূতি সংবলিত মেসেজ। বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষাতেই মেসেজ লেখার সুযোগ রয়েছে।
এদিকে ছোট ভাইবোনকে সঙ্গে নিয়ে প্রিয়জনদের কাছ থেকে সালামি আদায়ের একটি লিস্ট করে তৈরি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া নওরিন। এই তরুণী বলেন, ‘চাচা-মামা-ফুফু-খালা এবং কাজিনদের অনেকেই বাস করেন অন্যান্য জেলায়। ঈদের সময় তাদের অনেকের সঙ্গেই দেখা হওয়ার সুযোগ হয়ে ওঠে না। তাই বলে তো আর সালামি মিস করা যায় না। এ কারণে ঈদের আগেই কল করে, মেসেজ দিয়ে, বিকাশ অ্যাপ থেকে রিকোয়েস্ট মানি করে তাদের বিকাশে সালামি পাঠিয়ে দেওয়ার আবদার জানাচ্ছি।
যেভাবে সালামি পাঠানো যায় বিকাশ অ্যাপ থেকে
সালামি পাঠাতে বিকাশ অ্যাপের সেন্ড মানি আইকনে ক্লিক করে যে নম্বরে সালামি পাঠাতে চান, সেই নম্বরট সিলেক্ট করে টাকার অঙ্ক বসাতে হবে। এর পর নিচের দিকে থাকা গিফট কার্ড সেকশন থেকে ‘ঈদ মোবারক’ লেখা অংশে প্রেস করলে ঈদকার্ডের লিস্ট চলে আসবে। সেখান থেকে পছন্দের কার্ডটি সিলেক্ট করে নিচের দিকে ‘ভিউ মেসেজ’-এ ট্যাপ করে নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী মেসেজ যোগ করে দেওয়া যাবে। সবশেষে ‘সেভ অ্যান্ড কন্টিনিউ’-এ ক্লিক করে পরের ধাপে বিকাশ পিন দিলেই সালামি চলে যাবে প্রিয়জনের কাছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আনন দ
এছাড়াও পড়ুন:
আইফেল টাওয়ারে ‘শান্তির বার্তা’
ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে প্যারিসের বিখ্যাত আইফেল টাওয়ারে আলো দিয়ে লেখা হলো শান্তির বার্তা– ‘পিস’। এই প্রতীকী বার্তাটি গাজার জনগণের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ ও বিশ্বব্যাপী শান্তির আহ্বানের একটি শক্তিশালী প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছে।
বৃহস্পতিবার আনাদোলু এজেন্সির প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা যায়, প্যারিসের আইফেল টাওয়ারের সামনে হাজারো মানুষ একত্রিত হয়েছেন। আস্তে আস্তে সন্ধ্যার আবরণ যখন শহরের ওপর নেমে আসছিল, তখনই টাওয়ারের গায়ে উজ্জ্বল আলোয় ভেসে ওঠে– ‘গাজাবাসীর জন্য শান্তির বার্তা’।
মুহূর্তটি উপস্থিত দর্শকের মধ্যে আবেগ ও সংবেদনশীলতার এক বিশেষ পরিবেশ তৈরি করে। দর্শকের অনেকেই হাতে ধরে রেখেছিলেন প্ল্যাকার্ড, যাতে লেখা ছিল– ‘নিরাপত্তা চাই’, ‘গণহত্যা বন্ধ হোক’, ‘ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতা চাই’– জাতীয় বিভিন্ন মানবিক ও প্রতিবাদী বার্তা।
এই আলোক বার্তাটি এমন একসময়ে প্রকাশ পায়, যখন গাজায় ইসরায়েলি হামলায় বহু ফিলিস্তিনি, বিশেষত নারী ও শিশু প্রাণ হারাচ্ছেন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নানা স্তর থেকে যুদ্ধবিরতির দাবি জানানো হলেও বাস্তব পরিস্থিতির তেমন কোনো অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না।
আইফেল টাওয়ার, যা ফ্রান্সের গর্ব ও বিশ্ব ঐতিহ্যের অন্যতম প্রতীক, সেই স্থানে এই ধরনের বার্তা প্রদর্শন বিশ্ববাসীর কাছে শান্তির একটি জোরালো আহ্বান হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। শান্তিকামী মানবাধিকারকর্মীদের সমর্থনে এ আয়োজন করা হয়। বুধবারের এই আয়োজনে ফ্রান্সসহ বিশ্বের বহু মানুষের হৃদয়ে নাড়া দিয়েছে, যারা গাজায় শান্তি, ন্যায়বিচার ও মানবিক সহায়তার স্বপ্ন দেখেন।
এ সময় ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ করেছেন শত শত সাংবাদিক। গাজায় ইসরায়েলি হামলায় সহকর্মীদের নিহতের প্রতিবাদও জানান তারা। একই সঙ্গে গাজায় সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিও জানান বিক্ষোভকারীরা। নিহত সহকর্মীর ছবি বুকে নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সেখানে অবস্থান করেন তারা। সহকর্মী হত্যার বিচারের দাবিতে স্লোগানে স্লোগানে গর্জে ওঠেন বিক্ষোভকারীরা। একই সঙ্গে গাজার খবর বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরার অধিকার চান তারা। গাজায় শিগগিরই গণহত্যা বন্ধের দাবিও তোলেন আন্দোলনরত সাংবাদিকরা।
বিক্ষোভকারী সাংবাদিকদের মধ্যে একজন বলেন, ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাংবাদিকরা যেন গাজায় নিরাপদে অবস্থান করতে পারেন, সেই দাবি জানাচ্ছি। গাজার খবর গোটা বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে চাই। আরেকজন বলেন, গাজায় প্রায় প্রতিদিনই সাংবাদিকদের হত্যা করছে ইসরায়েল। সহকর্মীদের এই মর্মান্তিক মৃত্যু দেখে ঘরে বসে থাকা সম্ভব নয়।
আগ্রাসন শুরুর পর থেকেই গাজার সংবাদমাধ্যমগুলো বন্ধের চেষ্টা চালাচ্ছে ইসরায়েলি প্রশাসন। চিত্র সাংবাদিক, রিপোর্টারসহ এ পর্যন্ত দুই শতাধিক সাংবাদিক নিহত হয়েছেন আইডিএফের হামলায়। যাদের বেশির ভাগই ফিলিস্তিনের সাংবাদিক। দিনশেষে রাতেও ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে আইফেল টাওয়ারে অবস্থান করেন কয়েকশ বিক্ষোভকারী। এ সময় আবেগঘন এক মুহূর্ত তৈরি হয় আইফেল টাওয়ারের পাদদেশে। আনাদোলু এজেন্সি।