সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলায় বৌলাই নদে যাত্রীবাহী নৌকা ডুবে দুই নারী ও তিন শিশুসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ১০টায় উপজেলার বেহেলী ইউনিয়নের বৌলাই নদের মদনাকান্দা গ্রামের পাশে এ ঘটনা ঘটে।

জামালগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। রাত পৌনে ১২টায় মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘আমরা রাত সাড়ে ১০টায় খবর পেয়েছি। এখন ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা দিয়েছি। স্থানীয় সূত্রে পাঁচজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছি। এর মধ্যে দুজন নারী ও তিনজন শিশু।’

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলা থেকে একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা যাত্রী নিয়ে জামালগঞ্জের বেহেলী ইউনিয়নের মদনাকান্দা গ্রামে যাচ্ছিল। ঈদের কারণে নৌকাটিতে অতিরিক্ত যাত্রী ছিল। নৌকাটি বৌলাই নদ হয়ে মদনাকান্দা গ্রামের পাশে এসে তীরে ভেড়ার আগে ডুবে যায়। এ সময় অন্য যাত্রীরা তীরে উঠতে পারলেও ওই নারী ও শিশুরা উঠতে পারেনি। পরে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়।

ওসি সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘নৌকাটির কোনো ছাদ ছিল না। খোলা নৌকায় করেই এ পথে যাত্রীরা যাতায়াত করেন। অতিরিক্ত যাত্রীর কারণেই নৌকাটি ডুবেছে। মৃতদের নাম–পরিচয় জানা যায়নি। আমরা ঘটনাস্থলে যাচ্ছি, পরে বিস্তারিত জানা যাবে।’

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সিলেটের নিখোঁজ ছয় শ্রমিকের লোকেশন টেকনাফ: পুলিশ

কক্সবাজার জেলায় কাজের সন্ধানে এসে সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার এক গ্রামের ছয়জন শ্রমিক নিখোঁজ হয়েছেন। তারা পেশায় সবাই রাজমিস্ত্রী। সাত দিন ধরে নিখোঁজ থাকা শ্রমিকরা সবাই গত ১৫ এপ্রিল কাজের উদ্দেশ্যে জকিগঞ্জ উপজেলার খলাছড়া ইউনিয়নের পশ্চিম লোহারমহল গ্রাম থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশ্য বের হয়েছিলেন।  

পুলিশ বলছে, তাদের সবার ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। সর্বশেষ নিখোঁজদের মধ্যে দুজনের মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং করে তাদের অবস্থান টেকনাফের রাজারছড়া এলাকা পাওয়া যাচ্ছে। এদিকে টেকনাফের রাজারছড়া মানবপাচার ও অপহরণকারীদের মূল আস্তানা। তাই সন্দেহ করা হচ্ছে নিখোঁজদের মানবপাচার ও অপহরণকারী চক্রের ফাঁদে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।  

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল ইসলাম মুন্না বলেন, কক্সবাজারের কাজের উদ্দেশ্যে বের হওয়া আমার এলাকার ছয় যুবক নিখোঁজ রয়েছেন। তারা এর আগেও চট্রগ্রাম-কক্সবাজারের কাজ করতে গিয়েছিলেন। আমরা পরিবারকে সহায়তা করছি। তাদের লোকেশন টেকনাফের রাজারছড়া গ্রামে পাওয়া যাচ্ছে। তাই সেখানকার থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে।

টেকনাফ মডেল ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছি। আমরাও তাদের লোকেশন রাজারছড়া এলাকা পাচ্ছি। বিষয়টি খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। কেননা এসব এলাকায় অপহরণ ও মানবপাচার চক্রের আনাগোনা বেশি। 

নিখোঁজ ৬ জন হলেন, জকিগঞ্জ উপজেলার খলাছড়া ইউনিয়নের পশ্চিম লোহারমহল গ্রামের ফারুক আহমদের ছেলে মারুফ আহমদ (১৮), আজির উদ্দিনের ছেলে শাহিন আহমদ (২১), মৃত লুকুছ মিয়ার ছেলে রশিদ আহমদ (২০), সফর উদ্দিনের ছেলে খালেদ হাসান (১৯) ও মৃত সরবদির ছেলে আব্দুল জলিল (৫৫) ও মৃত দুরাই মিয়ার ছেলে এমাদ উদ্দিন (২২)।  

নিখোঁজ পরিবারের ভাষ্যমতে, গত ১৫ এপ্রিল বিকেলে সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার খলাছড়া ইউনিয়নের পশ্চিম লোহারমহল গ্রামের ৫ তরুণসহ ছয় জন কাজের উদ্দেশ্যে কক্সবাজারের উদ্দেশে রওয়ানা দেন। ১৬ এপ্রিল কক্সবাজার পৌঁছার পর পরিবারের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু এরপর থেকে তাদের মোবাইল বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। এঘটনায় নিখোঁজদের পরিবারে চরম দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে। নিখোঁজ সবাই রাজমিস্ত্রীর কাজ করেন।

নিখোঁজ রশিদের ভাই আব্দুল বাছিত বলেন, রশিদ কয়েক বছর থেকে চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজারের এক ঠিকাদারের অধীনে কাজ করতো। বিভিন্ন সময়ে বাড়িতে আসা যাওয়া ছিল। এবার কক্সবাজার যাওয়ার পর থেকে রশিদসহ সঙ্গে থাকা সবার মোবাইল ফোন বন্ধ দেখাচ্ছে। তাদের লোকেশন টেকনাফের রাজারছড়া পাওয়া যাচ্ছে। আমরা খুব চিন্তিত কারণ টেকনাফ অপহরণ এবং মানবপাচারপ্রবণ এলাকা।

জকিগঞ্জ উপজেলার চৌকিদার ফয়সাল আহমেদ বলেন, আমার এলাকার ছয় শ্রমিক প্রায় সময় কক্সবাজারের কাজ করতে যায় বাবুল নামে এক ঠিকাদারের অধীনে। বাবুল ঠিকাদারের কাজ না থাকায় টেকনাফের এক পরিচিত ছেলে সাথে টেকনাফে কাজ করতে বের হন। তখন থেকে তাদের ফোন বন্ধ রয়েছে।

টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য জিয়াউর রহমান বলেন, বিষয়টি আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জেনেছি। আমিও চেষ্টা করছি তাদের খোঁজ খবর নেওয়ার জন্য। তাদের লোকেশন যে এলাকায় পাওয়া যাচ্ছে সেটি ভয়ংকর এলাকা। কেননা এর আগেও থ্রি মার্ডার  সেখানে (রাজারছড়া) হয়েছিল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ