জুলাই অভ্যুত্থানের নারী শিক্ষার্থীরা পেলেন যুক্তরাষ্ট্রের সম্মানজনক পুরস্কার
Published: 29th, March 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের সম্মানজনক ‘মেডেলিন অলব্রাইট অনারারি গ্রুপ অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছেন জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের নারী শিক্ষার্থী আন্দোলনকারীরা। আন্তর্জাতিক নারী সাহসিকা (ইন্টারন্যাশনাল উইমেন অব কারেজ—আইডব্লিউওসি) পুরস্কারের পাশাপাশি এই পুরস্কার দেওয়া হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে শুক্রবার এই পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আগামী ১ এপ্রিল পররাষ্ট্র দপ্তরে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ও মার্কিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের আয়োজনে বিজয়ীদের এই অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হবে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে বলা হয়, বাংলাদেশে দমন–নিপীড়নের বিরুদ্ধে গত বছর জুলাই–আগস্টে ছাত্রদের আন্দোলনে সাহসী একদল নারী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তাঁরা অসাধারণ সাহসিকতার সঙ্গে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন; হুমকি ও সহিংসতার শিকার হওয়ার ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও পুরুষ বিক্ষোভকারীদের মধ্যে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ চালিয়ে গেছেন। সহযোদ্ধা পুরুষ বিক্ষোভকারীদের যখন গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তখন এই নারীরা উদ্ভাবনী উপায়ে যোগাযোগ বজায় রেখেছেন এবং আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন। নানা প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করে এমনকি ইন্টারনেট সম্পূর্ণ বন্ধ থাকার পরও বিক্ষোভ চালিয়ে গেছেন তাঁরা। অনিশ্চয়তার মধ্যেও তাঁদের এই সাহসিকতা ও নিঃস্বার্থতা অসমসাহসের আরেক সংজ্ঞা।
ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা হয়, মেডেলিন অলব্রাইট অনারারি গ্রুপ অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনীত হয়েছে ‘উইমেন স্টুডেন্ট প্রোটেস্ট লিডারস অব বাংলাদেশ’।
পুরস্কারপ্রাপ্তির বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা গতকাল শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই পুরস্কারকে আমরা জুলাই অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া নারীদের সম্মিলিত অর্জন হিসেবে দেখছি। নারীরা শুধু নারী হিসেবে এই অভ্যুত্থানে আসেননি, বরং রাস্তায় আমাদের ভাইবোনদের মৃত্যু দেখে একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে ক্ষুব্ধ হয়েই আমরা রাজপথে নেমেছিলাম। কিন্তু অভ্যুত্থানের পর নারীদের লিঙ্গীয় পরিচয়কে টেনে এনে তাঁদের সাইড করা (কোণঠাসা) বা পেছনে ঠেলে দেওয়ার একটা প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল।’
ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে নারীরা অসমসাহসিকতায় নেমে এসেছিলেন রাস্তায়.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সম্মানজনক বিদায় নেওয়ার ব্যাপারে অন্তর্বর্তী সরকারকে বোঝাবে বিএনপি
‘এ বছরের ডিসেম্বরে নির্বাচনের বিষয়ে সবাই একমত হয়েছে। নির্বাচন ডিসেম্বরের পর গেলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠবে। বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ তৈরি হবে। এর অর্থ কিছু অস্থিরতা হতে পারে। সম্মানজনকভাবে বিদায় নেওয়ার ব্যাপারে আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে বোঝানোর চেষ্টা করব।’ যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থানরত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, সাবেক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী আবদুল মঈন খান বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন।
তিনি বলেছেন, চলতি বছরের মধ্যেই গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত একটি সরকার চায় বিএনপি। এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন না হলে ‘জনগণের মধ্যে জোরালো অসন্তোষ’ এবং দেশে অস্থিরতা তৈরি হবে। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে বোঝানোর চেষ্টা করব যে তাদের জন্য সর্বোত্তম হলো যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন দেওয়া এবং সম্মানজনকভাবে বিদায় নেওয়া।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশে ভাষণে ‘এ বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে’ এমন বক্তব্যের পর বিএনপির পক্ষ থেকে তিনি এই সতর্কবার্তা দিলেন। বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন তিনি।
নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হলে তারেক রহমান ঢাকায় ফিরতে পারেন: আবদুল মঈন খান বলেছেন, নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হলে লন্ডনে স্বেচ্ছা নির্বাসনে থাকা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান ঢাকায় ফিরতে পারেন। তিনি বলেন, বিএনপির জরিপে দেখা গেছে, আগামী বছরের মধ্যে যদি নির্বাচন হয়, তাহলে সহজে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে বিএনপি জয়ী হবে। তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি তারেক রহমান ও খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে হওয়া আদালতের বেশ কিছু রায় উল্টে গেছে। এতে তারেক রহমানের দেশে ফেরার পথ তৈরি হয়েছে।
খালেদা জিয়ার সক্রিয় রাজনীতিতে ফেরার সম্ভাবনা কম: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া লিভার ও হৃদ্রোগে গত জানুয়ারি থেকে লন্ডনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি বাংলাদেশে যেমন ছিলেন, তারচেয়ে এখন অনেকটা ভালো আছেন। তবে তাঁর সক্রিয় রাজনীতিতে ফেরার সম্ভাবনা কম।
জোট করে আগামী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই: সাক্ষাৎকারে মঈন খান আরও বলেন, জোট করে আগামী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কোনো পরিকল্পনা বিএনপির নেই। বিএনপি যদি নির্বাচিত হয় তাহলে অন্যান্য দলকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে চায়। সেখানে জাতীয় নাগরিক পার্টিও থাকতে পারে।