প্রায় আট বছর পর লন্ডনে পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করবেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এক/এগারো-পরবর্তী রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দেশের মাটিতে জিয়া পরিবারের ঈদ উদযাপন হয়নি। মাঝেমধ্যে খালেদা জিয়া ছুটে যেতেন লন্ডনে। এতে ছেদ ঘটে ২০১৮ সালে তাঁকে কারাগারে নিলে। প্রায় আট বছর অন্তরীণ থাকতে হয়েছে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে।
সর্বশেষ ২০১৭ সালে বড় ছেলে ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, দুই পুত্রবধূ ও নাতনিদের সঙ্গে ঈদ করেন তিনি। এবারও তাদের সান্নিধ্যে ঈদ উদযাপন করবেন তিনি। সেখানে তারেক রহমানের স্ত্রী ছাড়াও প্রয়াত ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিঁথি ও তাঁর দুই কন্যা রয়েছেন। তাদের মাঝে খোশমেজাজে আছেন খালেদা জিয়া। ঈদের দিন বিএনপি চেয়ারপারসন ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে দলের সিনিয়র নেতারা ভার্চুয়ালি শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন বলে জানা গেছে।

গত ৭ জানুয়ারি চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান খালেদা। ৮ থেকে ২৪ জানুয়ারি তিনি লন্ডনের দ্য ক্লিনিক হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। এর পর তারেক রহমানের বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, দ্য লন্ডন ক্লিনিকের অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি ও জেনিফার ক্রসের অধীনে বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন খালেদা জিয়া। এ ছাড়া তাঁর চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল দলের সদস্যরা সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নিচ্ছেন এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিচ্ছেন। শারীরিকভাবে এখন খালেদা জিয়া অনেকটা সুস্থ। তিনি মানসিকভাবেও চাঙ্গা।

খালেদা জিয়া কবে দেশে ফিরতে পারেন– এমন প্রশ্নের উত্তরে ডা.

জাহিদ হোসেন বলেন, ঈদের পর তাঁর চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে তিনি এপ্রিলের যে কোনো দিন দেশে ফিরতে পারেন। বিষয়টি মেডিকেল বোর্ডের অনুমতির ওপর নির্ভর করছে।
৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ নানা অসুস্থতায় ভুগছেন।

বিএনপির কে কোথায় ঈদ করবেন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঢাকায় ঈদ করবেন। স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সেলিমা রহমানও ঢাকায় থাকবেন। আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী চট্টগ্রামে ঈদ করবেন। অন্যদিকে সালাহউদ্দিন আহমেদ ১০ বছর পর কক্সবাজারে ঈদ করবেন।
স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান ও অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন লন্ডনে ঈদ করবেন। সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ঢাকায় ঈদ করবেন। ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান ও আবদুল আউয়াল মিন্টু ঢাকায়, বরকত উল্লাহ বুলু নোয়াখালী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ঢাকায় এবং নির্বাহী কমিটির সদস্য রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু নাটোরে ঈদ করবেন। যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবীর খোকন নরসিংদীতে ও শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী লক্ষ্মীপুরে ঈদ করবেন।
ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল খুলনায় ও সহসাংগঠনিক সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলীম সিরাজগঞ্জে ঈদ করবেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ঈদ করব ন ল ইসল ম ব এনপ রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

ঈদের ছুটিতে পর্যটক আসতে শুরু করেছে কক্সবাজারে

পুরো রমজান মাসে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে ছিল প্রায় সুনসান নীরবতা। হোটেল-মোটেল, গেস্টহাউস ও রিসোর্টগুলো ছাড় দিয়েও অতিথি পায়নি। বন্ধ ছিল পর্যটক নির্ভর রেস্তোরাঁসহ অন্যান্য ব্যবসা। সেই নীরবতা ভেঙেছে ঈদুল ফিতরের ছুটিতে। ঈদের দিন দুপুর থেকে স্থানীয় পর্যটকরা সৈকতমুখী হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার থেকে আসবেন বাইরের জেলার ভ্রমণপ্রেমীরা।

পর্যটকদের বরণ করে নিতে ইতোমধ্যে হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও রেস্তোরাঁগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও সংস্কার করে প্রস্তুত করা হয়েছে। এ ছাড়া ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও হকাররাও নব উদ্যমে প্রস্তুতি নিয়েছেন।

পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবারের ঈদে ৯ দিনের লম্বা ছুটিতে চাকরিজীবীদের বড় একটি অংশ সপরিবারে বেড়ানোর সুযোগ পাচ্ছেন। আর লম্বা ছুটি বা বিশেষ দিনে ভ্রমণপিপাসুদের বরাবরই পছন্দের জায়গা কক্সবাজার। এখানে সমুদ্রসৈকত ছাড়াও পাহাড়, নদী, ছড়া, ঝিরি-ঝরনাসহ প্রকৃতির অপরূপ সব সৌন্দর্য দেখার সুযোগ রয়েছে।

হোটেল-মোটেল মালিকরা জানান, রমজান মাসের আগের চার মাসে বিপুলসংখ্যক পর্যটক কক্সবাজার ঘুরতে এসেছেন। প্রতি সপ্তাহে গড়ে আড়াই থেকে তিন লাখ পর্যটক এসেছিলেন। আর গত বছর ঈদুল ফিতরের ছুটিতে অন্তত ১০ লাখ পর্যটকের সমাগম হয়েছিল। এবার অনেকেই দেশের নানা প্রান্ত থেকে অনলাইন বা ফোনে যোগাযোগ করে কক্ষ বুকিং দিয়েছেন। ২ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত ৮০ শতাংশ কক্ষ বুকিং রয়েছে। কক্সবাজার শহর ও মেরিন ড্রাইভের পাঁচ শতাধিক হোটেল-মোটেল, গেস্টহাউস ও রিসোর্টে প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার পর্যটক থাকার ব্যবস্থা রয়েছে।

হোটেল-মোটেল, গেস্টহাউস ও রিসোর্ট মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, ‘বাইরের পর্যটকরা ঈদের পরদিন অর্থাৎ মঙ্গলবার থেকে কক্সবাজারমুখী হবেন। পর্যটকরা ভ্রমণে এসে যাতে সমস্যার সম্মুখীন না হন এর জন্য অনলাইনে হোটেল বুকিং দিয়ে এলেই সবচেয়ে ভালো।’

টুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, পর্যটকদের অতিরিক্ত চাপ বাড়ার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে সমুদ্রসৈকত ও পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে সার্বক্ষণিক টুরিস্ট পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে। টুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও তৎপর রয়েছে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, পর্যটকরা এসে যাতে ভালো সেবা পান এর জন্য পর্যটনসংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে সমন্বয় করা হচ্ছে। হোটেল-মোটেল ও রেস্তোরাঁয় অতিরিক্ত টাকা আদায় বন্ধ, অন্যান্য ক্ষেত্রে হয়রানি রোধ এবং নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিত করতে সৈকতে ও আশপাশের বিনোদনকেন্দ্রে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঠে থাকবে। কোনো অভিযোগ পেলেই সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ