পিরোজপুরের কাউখালীতে পূর্বশত্রুতার জেরে স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতার পোস্টার লাগানোর সময় হামলা ও সংঘর্ষে ছাত্রদলের নেতাকর্মীসহ পাঁচজন আহত হয়েছেন। এ সময় একটি কাঠের ঘরে অগ্নিসংযোগ করা হয়। গত শুক্রবার রাতে উপজেলার শিয়ালকাঠি ইউনিয়ন পরিষদসংলগ্ন রাঢ়ীর হাট ও রাঢ়ী বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

ছাত্রদলের নেতাকর্মী জানান, রাতে তারা একই এলাকার বাসিন্দা স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিনের ঈদ শুভেচ্ছার পোস্টার লাগানোর জন্য রাঢ়ীর হাটে যান। এ সময় ছাত্রলীগের উপজেলা শাখার সহসভাপতি রাসেল রাঢ়ী এবং তাঁর ভাই ঢাকার যুবলীগ নেতা রহমত রাঢ়ীর নেতৃত্বে একদল যুবক তাদের ওপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালালে পাঁচজন আহত হন।
স্থানীয় লোকজন আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে পিরোজপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দু’জনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

রাসেলের ভাই রফিকুল ইসলাম রাঢ়ী অভিযোগ করে বলেন, তারা সবাই ঢাকায় থাকেন। ফেসবুকের একটি পোস্টকে কেন্দ্র করে তাঁর দুই ভাইকে ধরে নেওয়ার জন্য ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তারিকুল ইসলাম সুমনের নেতৃত্বে ৮-১০ জন লোক আসেন। ধরে নিতে ব্যর্থ হয়ে দেড় শতাধিক লোক তাদের বাড়িতে হামলা করে একটি ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়।

খবর পেয়ে কাউখালী ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। যদিও হামলার অভিযোগ থেকে রক্ষা পেতে রাসেল রাঢ়ীর লোকজন নিজেদের ঘরে আগুন লাগিয়েছে বলে অভিযোগ ছাত্রদল নেতা সুমনের। তবে উভয় পক্ষই স্বীকার করেছে, অজ্ঞাত একটি ফেসবুক আইডি থেকে পোস্ট দেওয়াকে কেন্দ্র করে ঢাকায় উভয় পক্ষের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা ও দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। পোস্টার লাগানোর সময় তারা সামনাসামনি হওয়ায় তাদের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

ছাত্রদলের নেতাকর্মীর ওপর হামলার খবর পেয়ে পিরোজপুর সদর হাসপাতালে ছুটে যান জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেন, কাউখালী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক চেয়ারম্যান এসএম আহসান কবীর, সাধারণ সম্পাদক এইচ এম দ্বীন মোহাম্মদসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।

কাউখালী থানার ওসি মো.

সোলায়মান বলেন, পোস্টার লাগানোকে কেন্দ্র করে ছাত্রদলের লোকজনের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাঠের ঘরে কীভাবে আগুন লেগেছে, সে বিষয়ে তিনি কিছু জানাতে পারেননি। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ছ ত রদল স ঘর ষ আহত ছ ত রদল র

এছাড়াও পড়ুন:

তিন স্তরে কমছে ইন্টারনেটের দাম

নতুন তিনটি স্তরে ইন্টারনেটের মূল্য কমছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব।

সোমবার (২১ এপ্রিল) সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এ তথ্য জানান তিনি।

ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব লিখেছেন, “নতুন তিনটি স্তরে ইন্টারনেটের মূল্য কমছে। ফাইবার অ্যাট হোমের ম্যানেজমেন্ট নিশ্চিত করেছেন যে- আইটিসি পর্যায়ে ১০ শতাংশ, আইআইজি পর্যায়ে ১০ শতাংশ এবং এনটিটিএন বা ন্যাশনাল ট্রান্সমিশন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ মূল্য হ্রাস করবেন তারা। ”

এর আগে আইএসপি লাইসেন্স প্রাপ্ত কোম্পানিগুলোর অ্যাসোসিয়েশন থেকে পাঁচ এমবিপিএসের পরিবর্তে ৫০০ টাকায় ১০ এমবিপিএস ইন্টারনেট প্রদানের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে।  

তারও আগে আন্তর্জাতিক গেটওয়ে পর্যায়ে বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি সকল আইআইজি এবং আইএসপি গ্রাহকদের জন্য ১০ শতাংশ এবং পাইকারি গ্রাহকদের জন্য অতিরিক্ত ১০ শতাংশসহ মোট ২০ শতাংশ দাম কমিয়েছে।  

এ নিয়ে ইন্টারনেট লাইসেন্স রেজিমের মোট তিন থেকে চারটি স্তরে ইন্টারনেটের মূল্য কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বাকি আছে শুধু মোবাইলসেবা দাতা ৩টি বেসরকারি কোম্পানির দাম কমানোর ঘোষণা। এরইমধ্যে সরকার মোবাইল কোম্পানিগুলোকে বিডব্লিউডিএম এবং ডার্ক ফাইবার সুবিধা দিয়েছে। 

তিনি আরো লিখেছেন, “এমতাবস্থায় বেসরকারি মোবাইল কোম্পানিগুলোর ইন্টারনেটের দাম না কমানোর কোনো ধরনের যৌক্তিক কারণ কিংবা অজুহাত অবশিষ্ট থাকে না।  সরকার মোবাইল সেবাদাতা কোম্পানিগুলোকে পলিসি সাপোর্ট দিয়েছে এবং সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে আন্তর্জাতিক এবং জাতীয় স্তরগুলোতে পাইকারি পর্যায়ে ইন্টারনেটের দামও কমিয়েছে। এখন তাদের জাতীয় উদ্যোগে শরিক হওয়ার পালা।” 

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী জানিয়েছেন, মোবাইল ইন্টারনেটের দাম কমানোর পদক্ষেপে চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতিও সামান্য কিছুটা কমে আসবে বলে আশা করি।  

ঈদুল ফিতরের দিন থেকে সরকারি মোবাইল সেবা দাতা কোম্পানি টেলিটক ১০ শতাংশ মূল্য ছাড়ের ঘোষণা দিয়েছিল। সরকার আশা করে অতি দ্রুতই তিনটি বেসরকারি মোবাইল কোম্পানি অত্যন্ত যৌক্তিকভাবে মোবাইল ইন্টারনেটের মূল্য পতনের ঘোষণা দেবে।  

সরকার এখানে দুই ধরনের মূল্য ছাড় আশা করে- প্রথমত, মার্চ মাসে এসআরও অ্যাডজাস্টমেন্ট বাবদ মোবাইল কোম্পানিগুলো যে মূল্য বাড়িয়েছিল সেটা কমাবে। (সরকার শুল্ক বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়ে তা থেকে সরে এসেছে, কিন্তু সেই মতে বর্ধিত মূল্য কমায়নি মোবাইল কোম্পানিগুলো। )

দ্বিতীয়ত, আন্তর্জাতিক গেটওয়ে/আইটিসি, আইআইজি এবং ন্যাশনাল ট্রান্সমিশন পর্যায়ে যতটুকু পাইকারি দাম কমানো হয়েছে তার সমানুপাতিক হারে গ্রাহক পর্যায়ে ইন্টারনেটের দাম কমাবে। বাংলাদেশের মোবাইল ইন্টারনেটের মানে ব্যাপক প্রশ্ন রয়েছে। মানের তুলনায় দাম অনেক বেশি। এমতাবস্থায় গ্রাহকস্বার্থে যৌক্তিক পদক্ষেপ নিতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

ঢাকা/হাসান/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ