বাল্যবন্ধুর ফেসবুক পোস্টে ‘হা হা’ রিঅ্যাক্ট দেওয়ায় বাগবিতণ্ডার জেরে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে ছুড়িকাঘাত করে নাইম বাদশা নামে এক কলেজছাত্রকে হত্যা করা হয়েছে।

শনিবার সকাল দশটার দিকে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার নয়াবিল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত নাইম বাদশা ওই গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলামের ছেলে এবং সরকারি নাজমুল স্মৃতি কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিল। এ ঘটনায় অভিযুক্ত সবুজ আহমেদকে আটক করেছে থানা পুলিশ।

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, উপজেলার নয়াবিল ইউনিয়নের আন্দারুপাড়া গ্রামের হুরমুজ আলী ভুট্টুর ছেলে সবুজ আহমেদ (২০)। তিনি গাজীপুর এলাকায় সিকিউরিটি গার্ডের কাজ করেন। নিহত নাইম বাদশা ও সবুজ আহমেদ উভয়ে বাল্যকালে আন্দারুপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়গাশোনা করেছে। সম্প্রতি নাইম বাদশা সবুজ আহমেদের একটি ফেসবুক পোস্টে ‘হা হা’ রিঅ্যাক্ট দেয়। এ নিয়ে সবুজ ক্ষোভে নাইমকে হুমকিও দেয়। শনিবার সকাল আনুমানিক সাড়ে নয়টার দিকে সবুজ নাইমকে মোবাইল ফোনে ডেকে বাড়ির অদূরে কৃষি ব্যাংক নয়াবিল শাখার পেছনে ভোগাই নদীর কাছে নিয়ে যায়। সেখানে যাওয়ার পর নাইমের সঙ্গে সবুজের বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে সবুজ নাইমকে পেছন থেকে ছুরিকাঘাত করেন। এসময় সঙ্গে থাকা বন্ধুরা চিৎকার করেন ও নাইমকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন স্বজনেরা।

অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে পথিমধ্যেই নাইম মারা যায়।

এদিকে ঘটনার পরপরই এলাকাবাসী সবুজকে ধরে ফেলে। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সোহেল রানা জানান, অভিযোগ প্রাপ্তি সাপেক্ষে মামলা গ্রহণ করা হবে। অভিযুক্ত আটক রয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ফ সব ক প স ট ছ র ক ঘ ত হত য সব জ আহম দ ন ইমক

এছাড়াও পড়ুন:

আমরণ অনশনে চবির চারুকলার শিক্ষার্থীরা

বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে ফেরার দাবিতে সোমবার থেকে আন্দোলনে নেমেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। দিনভর বিক্ষোভ ও মানববন্ধনের পর বিকেল চারটা থেকে আমরণ অনশনে বসেছেন বিভাগটির নয় শিক্ষার্থী।

তারা হলেন, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের খন্দকার মাসরুল আল ফাহিম; ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের নূর ইকবাল সানি; ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শাহরিয়ার হাসান সোহেল; ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ইসরাত জাহান ইয়ামিন, মালিহা চৌধুরী, ইসরাত জাহান, নুসরাত জাহান ইপা; ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের তরিকুল ইসলাম মাহী ও মাহমুদুল ইসলাম মিনহাজ।

এর আগে সোমবার বৃষ্টি ও বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে দুপুর ১২ টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। দিনভর এই আন্দোলন চলে। এসময় চারুকলার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীরাও মানববন্ধনে যোগ দেন। পরে বিকেল চারটায় প্রেস ব্রিফিং এর পর আমরণ অনশনে বসেন নয় শিক্ষার্থী।

মানববন্ধনে চারুকলার শিক্ষার্থী আল মাশরুল ফাহিম বলেন,‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ঘোষণা দিয়েছিল চলমান এপ্রিল মাস থেকে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে ক্লাস শুরু করবো। কিন্ত আমরা এখনও মূল ক্যাম্পাসে আসতে পারিনি।’

ইনস্টিটিউটের আওয়ামী পন্থী শিক্ষকদের দায়ী করে তিনি বলেন, 'চারুকলাকে মূল ক্যাম্পাসে আনতে আমাদের আওয়ামীপন্থী শিক্ষকরা ভেটো দিচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে ফেরত আসলে তাদের অনৈতিক অর্থ উপার্জন বন্ধ হয়ে যাবে ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী চলতে হবে বলে তারা ফেরত আসতে চাননা।'

আমরণ অনশন থেকে নুসরাত জাহান ইপা বলেন,‘যতক্ষণ পর্যন্ত জরুরি সিন্ডিকেট সভা ডেকে চারুকলা ক্যাম্পাসে প্রত্যাবর্তনের প্রজ্ঞাপন জারি হবে না ততক্ষণ আমরা অনশন চালিয়ে যাবো।’
 
এ বিষয়ে ইনস্টিটিউটকে স্থানান্তরের প্রক্রিয়া জানতে চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক শামীম উদ্দিন খান ও উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।

প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা বিভাগের যাত্রা ১৯৭০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর। এরপর ২০১০ সালে নগরের সরকারি চারুকলা কলেজের সঙ্গে এক করে গঠন করা হয় চারুকলা ইনস্টিটিউট। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে নগরীর মেহেদীবাগের বাদশা মিয়া সড়কে এখন এর অবস্থান। আন্দোলনের মুখে ২০২৩ সালের ০২ ফেব্রুয়ারি চারুকলা ইনস্টিটিউটকে বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পরে প্রায় তিন মাস বন্ধ থাকার পর ক্লাসে ফিরে যান শিক্ষার্থীরা। এরপর জুলাই অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ডিসেম্বরে আবারও আন্দোলন নামেন তারা। গত ১২ ডিসেম্বর চলতি বছরের মার্চের মধ্যেই চারুকলা ইনস্টিটিউটকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের ঘোষণা দেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শামীম উদ্দিন খান। তবে এই প্রক্রিয়ার দৃশ্যমান অগ্রগতি না থাকায় আবারও আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ