এখন চৈত্র মাস। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হারিয়ে যাওয়া কবিতায় লিখেছেন, আমি ছিলাম ছাতে/ তারায় ভরা চৈত্র মাসের রাতে। কবিগুরুর রেশেই বলা যায়, চৈত্র মাসের আকাশে এখন সন্ধ্যার পর থেকেই তারার মেলা বসছে।

২৯ মার্চ

রাত ৮:৪৭ মিনিটে এরিস তারকামণ্ডলে মাসালিয়া গ্রহাণু দেখা যাবে বেশ উজ্জ্বলভাবে। রাত ১১:০৭ মিনিট পর্যন্ত আকাশে খালি চোখেই টরাস তারকামণ্ডলে বৃহস্পতি গ্রহ দেখতে পাবেন। রাত ১:৫৩ মিনিট পর্যন্ত খালি চোখেই জেমিনি তারকামণ্ডলে মঙ্গল গ্রহ দেখা যাচ্ছে। রাত ১১:৫১ মিনিট পর্যন্ত অরিগা তারকামণ্ডলে এগরিয়া গ্রহাণু দেখা যাবে। ভোর ৫:২০ পর্যন্ত গ্রহাণু ফ্লোরা দেখা যাবে আকাশের লিও তারকামণ্ডলে।

৩০ মার্চ

এদিন গ্রহ আকাশে সন্ধ্যার পরে বেশ কিছু গ্রহ দেখা যাবে। খালি চোখে দেখা যাবে শুক্র গ্রহ ভোর ৫:২০ মিনিট পর্যন্ত। মঙ্গল গ্রহ দেখা যাবে রাত ১:৫৪ মিনিট পর্যন্ত বুধ গ্রহ, শনি ও ইউরেনাস আকাশে থাকলেও দেখা বেশ কষ্টকর হবে। আর নক্ষত্রপুঞ্জের মধ্যে জেমিনিকে সূর্যাস্তের পরে পশ্চিম আকাশে দেখা যাবে। মধ্যরাত পর্যন্ত দেখতে পাবেন। ক্যানসার তারকামণ্ডল জেমিনি মিথুন ও সিংহ রাশির মধ্যে অবস্থার করবে। সন্ধ্যার আকাশে স্পষ্টভাবে দেখতে পাবেন।

৩১ মার্চ

ভোরে খালি চোখেই আকাশে শুকতারা বা শুক্র গ্রহ স্পষ্ট দেখতে পাবেন। এদিন লিও তারকামণ্ডল বেশ উজ্জ্বলভাবে আকাশে অবস্থান করবে। মধ্যরাতের দিকে সর্বোচ্চ উজ্জ্বলতায় দেখা যাবে। রাত ৯টার পরে আকাশে ভার্গো তারকামণ্ডল স্পষ্টভাবে দেখা যাবে।

১ এপ্রিল

রাত ১:৪৬ মিনিট পর্যন্ত আকাশে মঙ্গল গ্রহ স্পষ্টভাবে দেখা যাবে। নক্ষত্রপুঞ্জের মধ্যে ভার্গো বেশ উজ্জ্বলভাবে আকাশে অবস্থান করবে। এই তারকামণ্ডলের উজ্জ্বল নক্ষত্র স্পিকা সন্ধ্যায় দক্ষিণ-পূর্ব আকাশে দৃশ্যমান হবে। এ ছাড়া বুটস তারকামণ্ডলকে রাত ১০টার পর থেকে ভালোভাবে দেখা যাবে। উজ্জ্বল নক্ষত্র আর্কটারাস পূর্ব আকাশে দেখতে পাবেন।

২ এপ্রিল

রাত ১০:৫৮ মিনিট পর্যন্ত আকাশে বৃহস্পতি গ্রহ স্পষ্ট দেখতে পাবে। এদিন নক্ষত্রপুঞ্জের মধ্যে ভার্গো পূর্ব আকাশে মধ্যরাতে উদিত হবে। ভোরের দিকে বেশ উজ্জ্বলতা বাড়বে। আর স্করপিয়াস তারকামণ্ডল লিবরা তারকামণ্ডলকে অনুসরণ করবে। সূর্যোদয়ের আগে উজ্জ্বল নক্ষত্র আন্টারেস দেখা যাবে।

৩ এপ্রিল

শনি গ্রহ ভোর ৫টার পরে কিছুটা পরিশ্রম করে দেখতে পাবেন আকাশে। এ ছাড়া বুধ গ্রহ ও ইউরেনাস আকাশে থাকলেও শনাক্ত করা বেশ কঠিন হবে। ভোরের দুই ঘণ্টা আগে আকশে স্করপিয়াস তারকামণ্ডল দেখতে পাবেন। টলেমির ক্লাস্টার হিসেবে স্করপিয়াসের লেজের উজ্জ্বলতা দেখতে পাবেন।

৪ এপ্রিল

ভোর ৪:৩৫ মিনিট থেকে আকাশে শুকতারা হিসেবে শুক্র গ্রহ দেখতে পাবেন। মধ্যরাতের আকাশে লিও তারকামণ্ডল সবচেয়ে উজ্জ্বল বস্তু হিসেবে আবির্ভূত হবে।

সূত্র: বিবিসি স্কাই অ্যাট নাইট ম্যাগাজিন, অ্যাস্ট্রোনমি, স্কাই অ্যান্ড টেলিস্কোপ ও স্কাই ম্যাপস

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ভূমিকম্পে ভয়াবহ বিপর্যয় মিয়ানমারে, সাতদিনের শোক ঘোষণা

শক্তিশালী ভূমিকম্পে ভয়াবহ বিপর্যয় চলছে মিয়ানমারে। এই বিপর্যয়ের পর দেশটিতে এক সপ্তাহের জাতীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। ৬ এপ্রিল পর্যন্ত জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে।

এদিকে ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ২০০০ পেরিয়ে গেছে। সোমবার দেশটির সামরিক সরকার জানিয়েছে, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২০৫৬ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া ভূমিকম্পে আহত হয়েছে আরও ৩ হাজার ৯০০। এখনও নিখোঁজ ২৭০ জন। দেশটিতে ভূমিকম্পের প্রায় ৬০ ঘণ্টার পর ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে চারজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। রোববার সাগাইং অঞ্চলে ধসে পড়া একটি স্কুল ভবন থেকে তাঁদের উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছে দেশটির ফায়ার সার্ভিস।  খবর- বিবিসি

রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন মিয়ানমার সরকারের মুখপাত্র মেজর জেনারেল জাও মিন তুনজানান, মান্দালয় অঞ্চলে ২৭০ জন নিখোঁজ রয়েছেন। সেখানে ভূমিকম্পে মসজিদ, সেতু এবং বিমানবন্দরসহ বিভিন্ন অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্যদিকে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ভূমিকম্পে নিহত ও আহতের প্রকৃত সংখ্যা সরকারি হিসাবের চেয়ে অনেক বেশি হতে পারে। টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা বিকল হওয়ায় অনেক অঞ্চলের ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা যাচ্ছে না। 

শুক্রবার মিয়ানমারে শক্তিশালী ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। উদ্ধার তৎপরতা চালাতে গিয়ে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে দেশটির সরকারকে। এসব সীমাবদ্ধতার মধ্যে উদ্ধারকারীরা যখন জীবিতদের সন্ধান করছেন তখন জাতিসংঘ জানিয়েছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে চিকিৎসা সরঞ্জামের তীব্র অভাব দেখা দিয়েছে, যা ত্রাণ প্রচেষ্টাকে ব্যাহত করছে। 

সাহায্যকারী সংস্থাগুলোর বরাত দিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের ঘটনায় মিয়ানমারের রাস্তাঘাটে লাশের দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। হাসপাতালগুলো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে মিয়ানমারের জন্য জরুরি ভিত্তিতে ৮০ লাখ মার্কিন ডলারের তহবিল সহায়তা চেয়ে আবেদন জানিয়েছে জাতিসংঘ। 

ভূমিকম্পে রাস্তাঘাট এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার মতো গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এর সঙ্গে সামরিক সরকার, বিদ্রোহী গোষ্ঠী এবং সশস্ত্র যোদ্ধাদের মধ্যে চলা গৃহযুদ্ধের ফলে এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্ধারে কাজ করা সাহায্য সংস্থাগুলোর পক্ষে কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

দুর্যোগ মোকাবিলা করার জন্য মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকার আন্তর্জাতিক সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে। তবে বিরোধী ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট জোর দিয়ে বলছে, যেকোনো সহায়তা যেন স্বাধীনভাবে ও স্থানীয় নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়। মিয়ানমারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহর মান্দালয়ের ঐতিহাসিক অনেক ভবন এই ভূমিকম্পে মাটিতে মিশে গেছে। উদ্ধারকর্মীরা খালি হাতে ধ্বংসস্তুূপ ঘেঁটে দেখছেন। 

২০২১ সাল থেকে মিয়ানমার শাসন করা সামরিক জান্তা দেশটির সাগাইং, মান্দালয়, মাগওয়ে, বাগো, ইস্টার শান রাজ্য এবং নেপিডো অঞ্চলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। দেশটির দুই বড় শহর, মান্দালয় ও ইয়াংগুনের বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা এখনও বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ