দৌলতদিয়ার বাস কাউন্টারগুলোতে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ
Published: 29th, March 2025 GMT
গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ায় বিভিন্ন রুটে ব্যানার টাঙিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। স্থানভেদে প্রায় দ্বিগুণ ভাড়া গুণতে হচ্ছে ঘরমুখো যাত্রীদের।
রাজবাড়ী জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, দৌলতদিয়া থেকে রাজবাড়ীর দূরত্ব ২৫ কিলোমিটার। দূরত্ব অনুযায়ী টার্মিনাল টোলসহ এখানকার লোকাল বাসের ভাড়া সাধারণত ৫৫ টাকা, দৌলতদিয়া থেকে পাংশার দূরত্ব ৫২ কিলোমিটার। তাই পাংশার ভাড়া ১১২ টাকা। দৌলতদিয়া থেকে কুষ্টিয়ার দূরত্ব ৯০ কিলোমিটার। আর এখানকার ভাড়া ভাড়া ১৯৫ টাকা। দৌলতদিয়া হতে ফরিদপুর রুটের দূরত্ব ৩৩ কিলোমিটার। এই অংশের ভাড়া ৭২ টাকা।
অথচ দৌলতদিয়া থেকে রাজবাড়ীর লোকাল বাসের ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ১০০ টাকা। যা নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে ৪৫ টাকা বেশি। দৌলতদিয়া থেকে পাংশাগামী যাত্রীদের ভাড়া দিতে হচ্ছে ১৮০ টাকা। নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে ৬৮ টাকা বেশি। ফরিদপুরগামী যাত্রীদের অতিরিক্ত গুণতে হচ্ছে ২৮ টাকা এবং কুষ্টিয়াগামী যাত্রীদের অতিরিক্ত গুণতে হচ্ছে ৮৫ টাকা। এ ছাড়া এই নির্দিষ্ট দূরত্বের মাঝে যদি কেউ যেতে চায় তাহলে পরের স্ট্যান্ডের ভাড়া তাকে গুণতে হচ্ছে।
সরেজমিন দেখা যায়, দৌলতদিয়া ঘাট বাস টার্মিনাল এলাকায় ঘরমুখো মানুষের ভিড়। টার্মিনাল এলাকায় এসে সুবিধা অনুযায়ী যাত্রীরা যানবাহনে উঠছেন। কেউ কেউ তিন চাকার মাহিন্দ্র ও ইজিবাইকে গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন। রাস্তার পাশে বাস কাউন্টারের সামনে একটি হলুদ রঙের ব্যানার টানানো রয়েছে। সেখানে লেখা রয়েছে- পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে একমুখী যাত্রী হওয়ায় দৌলতদিয়া হতে রাজবাড়ীর ভাড়া ১০০ টাকা, দৌলতদিয়া হতে কালুখালীর ভাড়া ১৫০ টাকা, দৌলতদিয়া হতে পাংশার ভাড়া ১৮০ টাকা এবং দৌলতদিয়া হতে কুষ্টিয়ার ভাড়া ২৮০ টাকা। পরিচালনায়: রাজবাড়ী জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপ, রাজবাড়ী।
আব্দুল আওয়াল মিয়া নামে এক যাত্রী ঢাকা থেকে লঞ্চ পারাপার হয়ে বাস টার্মিনাল এসেছেন। তিনি বাসের টিকিট সংগ্রহ করতে চাইলে তার কাছে ১০০ টাকা ভাড়া চাওয়া হয়। পরে তিনি বাসে না গিয়ে মাহিন্দ্রায় (থ্রি হুইলার) ওঠেন।
তিনি বলেন, ঘাট থেকে রাজবাড়ীর ভাড়া ৫৫ টাকা। সেখানে ভাড়া নিচ্ছে ১০০ টাকা। এটা তো এক প্রকার ডাকাতি। যেখানে যে যেমন পারছে সে সেভাবেই অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে। আমাদের পরিবারের টানে আসাই লাগবে। তাই বাধ্য হয়েই আমাদের এই বাড়তি ভাড়া দিতে হচ্ছে।
সবুজ হোসেন নামে আরেক যাত্রী বলেন, আমি কুষ্টিয়া যাব। স্বাভাবিক সময়ে সাধারণত ঘাট থেকে কুষ্ঠিয়ায় বাসের ভাড়া নেয় ১৯০ থেকে ২০০ টাকা। কিন্তু এখন ঈদ উপলক্ষ্যে ভাড়া নিচ্ছে ২৮০ টাকা। আমাদের বাড়ি যাওয়া লাগবে। যাত্রীও বেশি। তাই অতিরিক্ত ভাড়া না দিয়ে কোনো উপায় নেই।
রাজবাড়ী জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক সুকুমার ভৌমিক বলেন, দৌলতদিয়া-কুষ্টিয়া ও দৌলতদিয়া-ফরিদপুর রুটে প্রায় ৬০০ থেকে ৭০০ গাড়ি চলছে। ঈদের সময় গাড়িগুলো যাত্রী নিয়ে গিয়ে খালি আসে। এজন্য গত বছরের যে ভাড়া আমরা ঈদে নিয়েছিলাম। এ বছরও সেই ভাড়া আমরা প্রশাসনকে অবহিত করেই নিচ্ছি।
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ঈদয ত র ১০০ ট ক দ লতদ য় র সময়
এছাড়াও পড়ুন:
ভূমিকম্পে ভয়াবহ বিপর্যয় মিয়ানমারে, সাতদিনের শোক ঘোষণা
শক্তিশালী ভূমিকম্পে ভয়াবহ বিপর্যয় চলছে মিয়ানমারে। এই বিপর্যয়ের পর দেশটিতে এক সপ্তাহের জাতীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। ৬ এপ্রিল পর্যন্ত জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে।
এদিকে ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ২০০০ পেরিয়ে গেছে। সোমবার দেশটির সামরিক সরকার জানিয়েছে, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২০৫৬ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া ভূমিকম্পে আহত হয়েছে আরও ৩ হাজার ৯০০। এখনও নিখোঁজ ২৭০ জন। দেশটিতে ভূমিকম্পের প্রায় ৬০ ঘণ্টার পর ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে চারজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। রোববার সাগাইং অঞ্চলে ধসে পড়া একটি স্কুল ভবন থেকে তাঁদের উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছে দেশটির ফায়ার সার্ভিস। খবর- বিবিসি
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন মিয়ানমার সরকারের মুখপাত্র মেজর জেনারেল জাও মিন তুনজানান, মান্দালয় অঞ্চলে ২৭০ জন নিখোঁজ রয়েছেন। সেখানে ভূমিকম্পে মসজিদ, সেতু এবং বিমানবন্দরসহ বিভিন্ন অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্যদিকে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ভূমিকম্পে নিহত ও আহতের প্রকৃত সংখ্যা সরকারি হিসাবের চেয়ে অনেক বেশি হতে পারে। টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা বিকল হওয়ায় অনেক অঞ্চলের ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা যাচ্ছে না।
শুক্রবার মিয়ানমারে শক্তিশালী ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। উদ্ধার তৎপরতা চালাতে গিয়ে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে দেশটির সরকারকে। এসব সীমাবদ্ধতার মধ্যে উদ্ধারকারীরা যখন জীবিতদের সন্ধান করছেন তখন জাতিসংঘ জানিয়েছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে চিকিৎসা সরঞ্জামের তীব্র অভাব দেখা দিয়েছে, যা ত্রাণ প্রচেষ্টাকে ব্যাহত করছে।
সাহায্যকারী সংস্থাগুলোর বরাত দিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের ঘটনায় মিয়ানমারের রাস্তাঘাটে লাশের দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। হাসপাতালগুলো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে মিয়ানমারের জন্য জরুরি ভিত্তিতে ৮০ লাখ মার্কিন ডলারের তহবিল সহায়তা চেয়ে আবেদন জানিয়েছে জাতিসংঘ।
ভূমিকম্পে রাস্তাঘাট এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার মতো গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এর সঙ্গে সামরিক সরকার, বিদ্রোহী গোষ্ঠী এবং সশস্ত্র যোদ্ধাদের মধ্যে চলা গৃহযুদ্ধের ফলে এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্ধারে কাজ করা সাহায্য সংস্থাগুলোর পক্ষে কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
দুর্যোগ মোকাবিলা করার জন্য মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকার আন্তর্জাতিক সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে। তবে বিরোধী ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট জোর দিয়ে বলছে, যেকোনো সহায়তা যেন স্বাধীনভাবে ও স্থানীয় নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়। মিয়ানমারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহর মান্দালয়ের ঐতিহাসিক অনেক ভবন এই ভূমিকম্পে মাটিতে মিশে গেছে। উদ্ধারকর্মীরা খালি হাতে ধ্বংসস্তুূপ ঘেঁটে দেখছেন।
২০২১ সাল থেকে মিয়ানমার শাসন করা সামরিক জান্তা দেশটির সাগাইং, মান্দালয়, মাগওয়ে, বাগো, ইস্টার শান রাজ্য এবং নেপিডো অঞ্চলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। দেশটির দুই বড় শহর, মান্দালয় ও ইয়াংগুনের বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা এখনও বিচ্ছিন্ন রয়েছে।