ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে পঞ্চগড়ে সড়ক-মহাসড়কে অভিযান
Published: 29th, March 2025 GMT
ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে পঞ্চগড়ে সড়ক-মহাসড়কে অভিযান চালিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। শনিবার (২৯ মার্চ) দুপুরে পঞ্চগড় জেলা শহরের চৌরঙ্গী মোড়সহ আশপাশের এলাকায় জেলা প্রশাসন ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) সমন্বয়ে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে নেতৃত্ব দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) আমিনুল হক তারেক।
এ সময় গাড়ির ফিটনেস, রেজিস্ট্রেশন ও ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষা করা হয়। দূরপাল্লার বাসের কাউন্টারগুলোতে যাত্রীদের কাছে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগে বিভিন্ন পরিবহনের টিকিট কাউন্টারে অভিযান চালান ভ্রাম্যমাণ আদালত। অতিরিক্ত ভাড়ায় টিকিট বিক্রি ও ভাড়ার চার্ট না থাকায় বুড়িমারী এক্সপ্রেস, হানিফ পরিবহন, শ্যামলী এন্টারপ্রাইজ এবং মামুন এন্টারপ্রাইজের কাউন্টার ম্যানেজারকে মোট ১৫ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানার অর্থ নগদ প্রদান করে বাস কাউন্টারগুলো।
অভিযানকালে বিআরটিএর কর্মকর্তা-কর্মচারী, সদর থানা পুলিশ ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পঞ্চগড় ক্যাম্পের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালত ও বিআরটিএর পঞ্চগড় জেলা অফিস সূত্রে জানা গেছে, ঈদের আগে-পরে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে বিআরটিএ, জেলা প্রশাসন, ট্রাফিক বিভাগের উদ্যোগে সচেতনতা বৃদ্ধির কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতি বছর ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা বেশি ঘটে। ঈদের আনন্দ বিষাদে পরিণত হয়। এ বিষয়ে সবাইকে সচেতন করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বিআরটিএর পঞ্চগড় কার্যালয়ের মোটরযান পরিদর্শক হিমাদ্রী ঘটক বলেছেন, ঈদকে সামনে রেখে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সমন্বয়ে আমরা বিশেষ অভিযান চালিয়েছি। সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার প্রতিনিয়ত দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন। এর পাশাপাশি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক অভিযান চালানো হচ্ছে। ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ করতে বিআরটিএর পক্ষ থেকে এবার ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর আমিনুল হক তারেক বলেছেন, ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে ও সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে সচেতনতা বৃদ্ধির কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে। সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি অর্থ আদায়ের অভিযোগে চারটি বাস কাউন্টারকে জরিমানা করা হয়েছে। অতিরিক্ত ভাড়া আদায় না করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা/নাঈম/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ঈদয ত র ব আরট এ
এছাড়াও পড়ুন:
৯ মাসে মতিন স্পিনিংয়ের ৬৫০ কোটি টাকা ব্যবসা
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) ৬৫০ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে বস্ত্র খাতের কোম্পানি মতিন স্পিনিং। আগের বছরের একই সময়ে কোম্পানিটি ব্যবসা করেছিল ৫৫৭ কোটি টাকার। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ডিবিএল গ্রুপের সহযোগী এই কোম্পানির ব্যবসা বেড়েছে ৯৩ কোটি টাকার বা প্রায় ১৭ শতাংশ। সেই সঙ্গে বেড়েছে মুনাফাও।
মতিন স্পিনিং গতকাল রোববার দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) তাদের তৃতীয় প্রান্তিকের (জুলাই-মার্চ) আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য প্রকাশ করেছে। এর আগে গত শনিবার কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের সভায় এই প্রতিবেদন অনুমোদন করা হয়।
আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত জুলাই থেকে মার্চ—এই ৯ মাসে কোম্পানিটি ৩৬ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। তাতে এটির শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস বেড়ে দাঁড়ায় ৩ টাকা ৬৬ পয়সায়। আগের অর্থবছরের একই সময়ে মতিন স্পিনিং মুনাফা করেছিল ১৫ কোটি টাকা। ওই সময় কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় ছিল ১ টাকা ৫৬ পয়সা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির মুনাফা বেড়েছে ২১ কোটি টাকা বা ১৪০ শতাংশ।
মুনাফায় ভালো প্রবৃদ্ধির বিষয়ে মতিন স্পিনিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম এ জব্বার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগের বছরগুলোর তুলনায় কারখানার বিদ্যুৎ পরিস্থিতি কিছুটা ভালো ছিল। সে কারণে আমরা আমাদের উৎপাদন সক্ষমতার ব্যবহার ভালোভাবে করতে পেরেছি। আবার পণ্য বৈচিত্র্যকরণের মাধ্যমে ভালো মূল্য সংযোজন হয় এ রকম পণ্য উৎপাদনে গিয়েছি। পাশাপাশি উৎপাদন খরচ যাতে না বাড়ে, সেই ব্যাপারে সচেষ্ট ছিলাম। এসব পদক্ষেপের কারণে আমরা ভালো মুনাফা করতে পেরেছি। ভবিষ্যতেও যদি নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকে, তবে আমরা ব্যবসা ও মুনাফা প্রবৃদ্ধির এই ধারা অব্যাহত রাখতে পারব বলে বিশ্বাস করি।’
পণ্য বৈচিত্র্যকরণের মাধ্যমে ভালো মূল্য সংযোজন হয় এ রকম পণ্য উৎপাদনে গিয়েছি। পাশাপাশি উৎপাদন খরচ যাতে না বাড়ে, সেই ব্যাপারে সচেষ্ট ছিলাম। এসব পদক্ষেপের কারণে আমরা ভালো মুনাফা করতে পেরেছিএম এ জব্বার, এমডি, মতিন স্পিনিংআর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, কোম্পানিটির ব্যবসা যতটা বেড়েছে, তার চেয়ে বেশি হারে বেড়েছে মুনাফা। যার বড় কারণ কাঁচামালের খরচ তুলনামূলক কম ছিল। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে ৫৫৭ কোটি টাকার ব্যবসার বিপরীতে কাঁচামাল আমদানিতে খরচ হয়েছিল ৫০৬ কোটি টাকা। সেখানে চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে সাড়ে ৬০০ কোটি টাকার ব্যবসা করতে কাঁচামাল আমদানিতে খরচ হয় ৫৪৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ আগের বছরের চেয়ে চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে কোম্পানিটির ব্যবসা বেড়েছে ৯৩ কোটি টাকার। তার বিপরীতে একই সময়ের ব্যবধানে কাঁচামাল আমদানির খরচ বেড়েছে ৪১ কোটি টাকা বা ৮ শতাংশ। এ ছাড়া প্রশাসনিক ও উৎপাদিত পণ্যের সরবরাহ খরচও খুব বেশি বাড়েনি। তাতে গত জুলাই-মার্চ সময়কালে মতিন স্পিনিংয়ের পরিচালন মুনাফা বেড়ে দাঁড়ায় ৭৮ কোটি টাকায়। গত অর্থবছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৩০ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির পরিচালন মুনাফা বেড়েছে ৪৮ কোটি টাকা।
চলতি অর্থবছরের তিন প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা যায়, কোম্পানিটি ভালো মুনাফা করেছে গত অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে। ওই প্রান্তিকে কোম্পানিটি প্রায় সাড়ে ১৫ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। বাকি দুই প্রান্তিকের প্রতিটিতে মুনাফার পরিমাণ ছিল ১০ কোটি টাকার ঘরে। দ্বিতীয় প্রান্তিকে মুনাফা বেশি করলেও গত তিন প্রান্তিকের মধ্যে কোম্পানিটি সবচেয়ে বেশি ব্যবসা করেছে জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে। জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার গণ–অভ্যুত্থানে যখন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া হিমশিম ছিল, তখন কোম্পানিটি ২২৫ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। বাকি দুই প্রান্তিকের মধ্যে অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে ২২১ কোটি টাকা এবং সর্বশেষ জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে ২০৪ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। তাতে সব মিলিয়ে অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে কোম্পানিটির ব্যবসা দাঁড়ায় ৬৫০ কোটি টাকায়।
এদিকে মুনাফা বাড়লেও গতকাল শেয়ারবাজারে কোম্পানিটির শেয়ারের দরপতন হয়েছে। সার্বিকভাবে বাজারে দরপতন চলতে থাকায় তাতে মতিন স্পিনিংয়ের শেয়ারের দামও কমে যায়। ঢাকার বাজারে এদিন কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ১ টাকা ২০ পয়সা বা প্রায় পৌনে ৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ৪৪ টাকা ৫০ পয়সায়। গত ৫ মাসের ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম প্রায় ১৩ টাকা বা ২২ শতাংশের বেশি কমেছে। গত ১৭ নভেম্বর এটির শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ৫৭ টাকা ২০ পয়সা। গতকাল তা সাড়ে ৪৪ টাকায় নেমে আসে।