প্রবল জোয়ার, সাগর উত্তাল, ফেরি আটকে গেছে সন্দ্বীপে
Published: 29th, March 2025 GMT
উত্তাল সাগর, স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বেড়েছে জোয়ারের উচ্চতা। এমনই পরিস্থিতিতে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপকূলে আটকা পড়েছে ফেরি কপোতাক্ষ। আজ শনিবার সকাল নয়টার দিকে ফেরিটি সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া ঘাটের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার কথা ছিল। এ লক্ষ্যে যাত্রী ও যানবাহন তোলা হলেও বেলা একটা পর্যন্ত ফেরিটি ছাড়া সম্ভব হয়নি।
এর আগে সকাল সোয়া সাতটায় সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া ফেরিঘাট থেকে যানবাহন ও যাত্রী নিয়ে সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া ঘাটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় ফেরি কপোতাক্ষ। ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ায় উভয় পাশে অর্ধশতাধিক যানবাহন আটকা পড়ে।
ফেরির মাস্টার মো.
মো. শামসুল আলম বলেন, গতকাল শুক্রবার জোয়ারের সময় সন্দ্বীপ থেকে বাঁশবাড়িয়া ঘাটে এসে বিপাকে পড়তে হয়েছিল। ফেরি থেকে নামার রাস্তা ডুবে যাওয়ায় প্রায় আড়াই ঘণ্টা যানবাহন ও যাত্রী নামানো যায়নি।
ঘাটসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সকাল ১০টার দিকে বাঁশবাড়িয়া ঘাটে জোয়ার-ভাটার অবস্থা পর্যবেক্ষণে যান বিআইডব্লিউটিসি ও বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তারা। তাঁরা ফেরি থেকে নামার সড়ক ও র্যাম্প পরিদর্শন করেন। জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিএর উপপরিচালক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, সাগর বেশি উত্তাল। এ সময়ে ফেরি চালানো অত্যন্ত ঝুঁকির। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিস্তারিত তুলে ধরা হবে। এরপর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যে সিদ্ধান্ত দেবে সেটি বাস্তবায়ন করা হবে।
মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, ‘পরিদর্শনকালে দেখেছি জোয়ারের তীব্রতায় ফেরির পন্টুন এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করছে। একটি পন্টুনের দাম প্রায় তিন কোটি টাকা। বর্ষায় জোয়ার আরও বেড়ে গেলে তখন ঢেউয়ের তোড়ে পন্টুন ভেসে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে’।
বিআইডব্লিউটিসির উপমহাব্যবস্থাপক বাণিজ্য গোপাল চন্দ্র মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, যাত্রী ও যানবাহনের চাপ থাকায় তাঁরা দৈনিক দুই ট্রিপ ফেরি চালানোর চেষ্টা করছেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে ফেরি কয় ট্রিপ চালানো যাবে বা বন্ধ হয়ে যাবে কি না, তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কক্সবাজার-মহেশখালী রুটে যুক্ত হলো সি-ট্রাক
কক্সবাজার থেকে মহেশখালী নৌপথে প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হয়েছে সি-ট্রাক (ফেরি) চলাচল। গতকাল শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ রুটে পরীক্ষামূলকভাবে প্রথমবারের মতো বিআইডব্লিউটিএ ২৫০ জন ধারণক্ষমতার ‘ভাষাসৈনিক আব্দুল জব্বার’ নামে এ সি-ট্রাকটি চালু করে। এ জন্য মহেশখালী দ্বীপে বসানো হয় পন্টুনও। প্রথম দিন সি-ট্রাকে কোনো যাত্রী পরিবহন করা হয়নি। পর্যটক ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা সি-ট্রাকে মহেশখালী যান।
বিআইডব্লিউটিএর পরিচালক (বন্দর) এ কে এম আরিফ উদ্দিন জানান, শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে কক্সবাজার শহরের বাঁকখালী নদীর ৬ নম্বর জেটিঘাটের পন্টুন থেকে সি-ট্রাক মহেশখালীর উদ্দেশে ছেড়ে যায়। ২৫ মিনিটের মধ্যেই সি-ট্রাক পৌঁছে যায় মহেশখালী। আগামী ২৫ এপ্রিল থেকে নিয়মিত ১০ কিলোমিটারের এই সমুদ্রপথে যাতায়াত করবে সি-ট্রাকটি। যাত্রীপ্রতি সর্বনিম্ন ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ টাকা।
আরিফ উদ্দিন আরও বলেন, জোয়ারের সময় সি-ট্রাক চালু করে সফল হয়েছি। ১০ কিলোমিটারের সাগর চ্যানেলের বিভিন্ন অংশে পলি জমে ভরাট
হয়ে রয়েছে; ডুবোচর জেগেছে। ভাটার সময়ও সি-ট্রাক চলে কিনা, তা পরীক্ষা করা হবে। সে ক্ষেত্রে সমস্যা হলে উদ্যোগে নেওয়া হবে চ্যানেলের ভরাট অংশ খননের।
এদিকে সি-ট্রাক আসার খবরে এ দিন দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীতে মানুষের মধ্যে আগ্রহ ও উচ্ছ্বাস দেখা গেছে। কক্সবাজার থেকে মহেশখালীতে যাতায়াতের রুটে ১০ কিলোমিটার সমুদ্রপথে সি-ট্রাক বা ফেরি চলাচলের দাবি ছিল দীর্ঘদিনের। গত বছরের ৫ আগস্টের পর ছাত্র-জনতার দাবিতে সরকার সি-ট্রাক চালুর ঘোষণা দেয়।
মহেশখালী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন বলেন, সি-ট্রাক চালু হওয়ায় জনগণের দুর্ভোগ লাঘব হবে।
মহেশখালী ইউএনও হেদায়েত উল্লাহ বলেন, সি-ট্রাকে যাত্রী পারাপারে উপজেলা প্রশাসন সার্বিক সহযোগিতা করবে।