ভূমিকম্পে থাইল্যান্ডে একাধিক ভবন ধসের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ব্যাংককে নির্মাণাধীন একটি ৩০তলা ভবন ধসে ১০১ জন শ্রমিক নিখোঁজ রয়েছেন। দেশটিতে ভূমিকম্পে এ পর্যন্ত ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন ১৬ জন। ব্যাংককের ডেপুটি গভর্নর তাভিদা কামোলভেজ এ তথ্য জানিয়েছেন।

আজ শনিবার ব্যাংকক টাইমসের এক প্রতিবেদন বলা হয়েছে, ব্যাংককের চাটুচাক জেলার একটি উচু ভবন ধসে আটজনের মৃত্যু হয়েছে। একজন শ্রমিক মারা যান ক্রেনের নিচে পড়ে। ব্যাং চ্যান এলাকায় আরেকজন মারা যান ঘরের সিলিংয়ের নিচে পড়ে।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৭। এর উৎপত্তিস্থল মিয়ানমারের সাগাইং থেকে ১৬ কিলোমিটার উত্তর–উত্তরপশ্চিমে। ভূমিকম্পটির উৎপত্তি ১০ কিলোমিটার গভীরে। 

ইউএসজিএস জানিয়েছে, স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে আঘাত হানা ভূমিকম্পের প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশ, ভারত, লাওস, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড এবং চীনে।

দুর্যোগ প্রতিরোধ ও প্রশমন বিভাগের মহাপরিচালক পাসাকর্ন বুনিয়ালাক বলেন, ভূমিকম্পে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংকক ছাড়াও আরও ১০টি প্রদেশে আঘাত হানে। এর মধ্যে সামুত সাখন, চিয়াং মাই, চিয়াং রাই, ফারে, মাই হোং সন, লাম্পেং, চাই নাট, লাম্ফুন, লোয়েই ও কামফায়েন্ং ফেট।

এদিকে থাইল্যান্ডের আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ মাই হং সনে আরও দুটি ভূমিকম্প শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি ঘটে পাই জেলায়। এখানে ৪ দশমিক এক মাত্রার, গভীরতা ৫ কিলোমিটার। স্থানীয় সময় ১১ টা ২১ মিনিটে এটি ঘটে। অন্যটি পাই জেলায় ২ মাত্রার, ভোর ৩টা ২৪ মিনিটে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ভ ম কম প ভ ম কম প

এছাড়াও পড়ুন:

সড়কে রক্তের দাগ

ঈদের সময় সড়ক দুর্ঘটনা বেড়ে যায়। দুর্ঘটনায় প্রাণহানি সংক্রান্ত সংবাদপত্রের সাম্প্রতিক খবরগুলো বড় বেদনার। স্বাভাবিক সময়েই অনেক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। শহীদ রওশনের মায়ের চোখের পানি এখনও শুকায়নি। ২০১৮ সালের সেই জুলাইয়ের সকালে তিনি তাঁর ছেলেকে স্কুলে পাঠিয়েছিলেন স্বপ্ন নিয়ে। ফিরে পেয়েছিলেন রক্তাক্ত দেহ। একটি বেপরোয়া বাসের চাকায় শুধু একটি প্রাণই নয়, একটি পরিবারের সব স্বপ্ন চূর্ণ হয়ে গিয়েছিল।
প্রতিদিন বাংলাদেশের সড়কে গড়ে ২২ জন প্রাণ হারান। প্রতিটি মৃত্যুর পেছনে রয়েছে একটি পরিবারের অশ্রু আর অপূরণীয় ক্ষতি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য বলছে, গত দশকে আমরা হারিয়েছি ৭৫ হাজার প্রাণ, যা একটি ছোট শহরের জনসংখ্যার সমান।

আমাদের সড়কগুলো যেন মৃত্যুর মিছিল চলার উন্মুক্ত প্রান্তর। প্রতি ১০০টি গাড়ির মধ্যে ৩৫টি মেয়াদোত্তীর্ণ। ৪০ শতাংশ চালক বিনা লাইসেন্সে গাড়ি চালায়। এর পেছনে রয়েছে জটিল নেটওয়ার্ক– দুর্নীতি, অদক্ষতা। সর্বোপরি আমাদের সামাজিক অবক্ষয়।
২০১৮ সালের ছাত্র আন্দোলন ছিল এই ব্যবস্থার বিরুদ্ধে এক জোরালো প্রতিবাদ। কিন্তু ছয় বছর পর আমরা কতটুকু এগিয়েছি? ডিজিটাল লাইসেন্সিং সিস্টেম চালু হয়েছে, কিন্তু অনেক আবেদনকারী এখনও 
দালালের কারণে হয়রানির শিকার। আইন হয়েছে, কিন্তু প্রয়োগ দুর্বল।
আমাদের সমস্যা শুধু প্রযুক্তিগত নয়। এটি মূলত সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয়। প্রতিটি সড়ক দুর্ঘটনার পেছনে রয়েছে সামাজিক অবক্ষয়ের ছাপ। আমরা যেখানে দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়ন করছি, সেখানে আমাদের মানবিক মূল্যবোধ পিছিয়ে পড়ছে।

সরকারের নতুন উদ্যোগগুলোকে স্বাগত জানাই। পাশাপাশি আমাদের প্রয়োজন সামাজিক বিবেককে জাগ্রত করা। প্রত্যেক চালক যেন বুঝতে পারে, তার হাতে শুধু স্টিয়ারিং নয়, অসংখ্য প্রাণের দায়িত্বও রয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার গুরুত্বপূর্ণ। লাইসেন্স প্রদান থেকে শুরু করে গাড়ি পরিদর্শন– সর্বক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। সমন্বিত পরিকল্পনা নিতে হবে। শুধু সড়ক নয়, আমাদের প্রয়োজন একটি সমন্বিত যানবাহন ব্যবস্থা, যেখানে প্রত্যেক নাগরিকের নিরাপত্তা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাবে।
২০১৮ সালের সেই নিরাপদ সড়ক আন্দোলন আমাদের দেখিয়েছিল– পরিবর্তন সম্ভব। আজ আমাদের প্রয়োজন সেই চেতনাকে আবার জাগিয়ে তোলা। প্রতিটি প্রাণ অমূল্য, প্রতিটি দুর্ঘটনা অপ্রয়োজনীয়। রওশনের মায়ের মতো চোখের জল যেন আর কোনো মাকে ফেলতে না হয়। সড়কগুলো যেন আর না হয় কবরস্থান। এটি শুধু একটি স্বপ্ন নয়, অধিকার। আসুন,সবাই মিলে গড়ে তুলি এমন এক বাংলাদেশ, যেখানে সড়ক দুর্ঘটনা হবে অতীতে ঘটে যাওয়া করুণ ইতিহাস, যা বর্তমানে নেই।

মো. রাইসুল ইসলাম: স্বেচ্ছাসেবক, চট্টগ্রাম 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিশ্ব সৃজনশীলতা ও উদ্ভাবন দিবস আজ
  • রাস্তা নির্মাণে নিম্নমানের ইট খোয়া, স্থায়িত্ব নিয়ে শঙ্কা
  • সুপেয় পানি সংকটের স্থায়ী সমাধানের পথ
  • দিনাজপুরে পথেঘাটে গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে কাঁচাপাকা খেজুর
  • শেয়ারবাজারে কাঠামোগত সংস্কারে অগ্রগতি নেই
  • রাউজান কেন এখনও অশান্ত
  • কী হয়েছিল সৃজিতের, জানালেন চিকিৎসক
  • বৈশাখজুড়ে শতবর্ষী মেলা
  • সড়কে রক্তের দাগ