ব্রাহ্মণবাড়িয়া এক সন্তানের জননী টুম্পা আক্তারের সাথে ইমো অ্যাপে প্রেম গড়ে ওঠে চট্টগ্রামে বসবাসকারী বেকার ইব্রাহিম হাওলাদারের। এই প্রেমের সূত্র ধরেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে চট্টগ্রামে চলে যান টুম্পা। বিয়ে না করে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে থাকেন নগরীর বন্দর থানার কলসিদীঘি এলাকায়। 

তবে সুখের হয়নি সে জীবন। অন্য পুরুষের সাথে টুম্পার সম্পর্ক থাকতে পারে। সবসময় এমন সন্দেহ করতেন ইব্রাহিম। সেই সন্দেহ থেকেই একদিন টুম্পার গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাস রোধ করে হত্যা করে ইব্রাহিম। 

সম্পুর্ণ ক্লু লেস এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করে ঘাতক ইব্রাহীমকে গ্রেপ্তার করেছে চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশ। 

শনিবার (২৯ মার্চ) দুপুরে নগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত তুলে ধরেন উপ-কমিশনার (ডিবি-পশ্চিম) মোহাম্মদ মাহবুব আলম খান।

মাহবুব আলম খান জানান, গত ২৬ মার্চ সন্ধ্যায় বন্দর থানার ওয়াসিম চৌধুরী পাড়া পেলাগাজীর বাড়ি আলী সওদাগরের বিল্ডিংয়ের নিচ তলার একটি বাসা থেকে এক অজ্ঞাত নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। এরপরই ঘটনার ছায়াতদন্ত শুরু করে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। বাড়ির মালিকের কাছে ভাড়াটিয়ার তথ্য না থাকায় তাৎক্ষণিক পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পরে একই এলাকার একটি দোকানের ক্যাশমেমো থেকে পাওয়া নম্বর ধরেই এগোয় তদন্ত। এরপরই শনাক্ত হয় ইব্রাহিম; যিনি চট্টগ্রাম থেকে বাগেরহাট যাচ্ছিলেন।

পুলিশ জানায়, ইব্রাহিমকে রাজধানীর পোস্তগোলা ব্রিজ এলাকায় বাসের ভেতর থেকে গোয়েন্দা পুলিশ আটক করতে সক্ষম হয়। তারপর তাকে জিজ্ঞাসাবাদে উদঘাটিত হয় খুনের রহস্য।

পুলিশ জানায়, ইমোতে প্রেমে সম্পর্কের সূত্র ধরে টুম্পা ও ইব্রাহীম বিয়ে ছাড়াই স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে সংসার করছিলেন। ভিকটিম টুম্পা আক্তার একজন গার্মেন্টসকর্মী। তার পরিচয় মূলত ইব্রাহিমকে গ্রেপ্তারের পরই জানতে পারি। তারা বন্দর এলাকার ওই বাসায় লিভ টুগেদার করত। কাগজে-কলমে তাদের বিয়ে হয়নি। দুজন ব্যক্তিকে স্বাক্ষী রেখে তাদের মুখে মুখে বিয়ে হয়।
টুম্পা আক্তার যখন কর্মস্থলে যেতেন ইব্রাহিম মোবাইল নিয়ে যেতে দিতেন না। মোবাইল বাসায় রেখে যেতেন। বাসায় রাখার পর অনেকসময় তার ফোনে পুরুষ কণ্ঠে কল আসত। ইব্রাহিমের সন্দেহ হয় তার কথিত স্ত্রীর আরও কয়েকজনের সাথে সম্পর্ক থাকতে পারে। এই সন্দেহের জেরে তাদের মধ্যে মানসিক দূরত্ব তৈরি হয়। 

ঘটনার দিন এই বিষয় নিয়েই তাদের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক হয়। এক পর্যায়ে ইব্রাহিমের মাথার কাছে একটি শেলফে থাকা রশি দিয়ে টুম্পার গলা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। ওই সময় টুম্পার বাচ্চাটি পাশের রুমে ঘুমাচ্ছিল। কিছুক্ষণ পর বাচ্চাটি ঘুম থেকে উঠলে তাকে একজন মহিলার কাছে দিয়ে ইব্রাহিম ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।

এ হতাকাণ্ডের ঘটনায় বন্দর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। গ্রেপ্তার আসামিকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

ঢাকা/রেজাউল/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

এই মেঘ, এই বৃষ্টি, এমনটা কেন, কতক্ষণ থাকবে জানাল আবহাওয়া অফিস

ঢাকার আকাশজুড়ে আজ সোমবার সকাল থেকেই ছিল মেঘের আনাগোনা। সকাল নয়টার দিকে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হয়। এরপরই আবার রোদ ওঠে। ঘণ্টাখানেক বাদে রোদ সরে গিয়ে আকাশে মেঘের প্রত্যাবর্তন।

এখন দুপুর ১২টা পার হয়ে গেছে। এখনো আকাশজুড়ে কালো মেঘ। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঢাকার বিভিন্ন স্থানে আবারও বৃষ্টি শুরু হতে পারে। ঢাকা ও আশপাশের বিভিন্ন জায়গায় বজ্রমেঘ সৃষ্টি হয়েছে। সে কারণেই এই বৃষ্টি।

আর এখন যে বৃষ্টি বা ঝোড়ো হাওয়া, তা মূলত কালবৈশাখী হিসেবেই চিহ্নিত হবে। কিন্তু কালবৈশাখী যখন হয়, তখন আকাশ কালো করে মেঘ আসে এবং একবারে বৃষ্টিও হয় অনেকটা। আজ এবং কয়েক দিন ধরেই রাজধানীতে তেমনটা হচ্ছে। বৃষ্টি অনেকটাই কম মেঘের তুলনায়। কেন এমন হচ্ছে, এর জবাবে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ আফরোজা সুলতানা প্রথম আলোকে বলেন, মেঘ আর বৃষ্টির লুকোচুরি খেলাটা হচ্ছে মূলত তাপমাত্রা যথেষ্ট না বাড়ার কারণে। তাপ বেশি থাকলে ক্রমান্বয়ে জলীয় বাষ্প সৃষ্টি হয়ে বজ্রমেঘ ও ঝড়ের সৃষ্টি হয়। সেটার অভাব আছে। কিন্তু এখন যেটি হচ্ছে,সেটি মূলত কালবৈশাখী।

আফরোজা সুলতানা জানান, শুধু ঢাকা নয়, ময়মনসিংহ, বরিশাল, ভোলা, খুলনাসহ নানা স্থানে আজ বজ্রমেঘের সৃষ্টি হয়েছে। আর ঢাকায় এই মেঘ ও বৃষ্টি বিকেল পর্যন্ত চলতে পারে।

গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীতে ২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে হাতিয়ায়, ৫০ মিলিমিটার। এরপরই আছে নেত্রকোনা। সেখানে ৪৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর প্রতি মাসের শুরুতে আবহাওয়ার একটি দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস দেয়। এই মাসের পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল, হালকা থেকে মাঝারি বেশ কয়েকটি তাপপ্রবাহ বয়ে যাবে। এর মধ্যে হালকা থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে গেলেও তীব্র তাপপ্রবাহের সৃষ্টি এখনো হয়নি। এর মধ্যে কয়েক দফা বৃষ্টি হয়েছে। তাতে তাপমাত্রা কিছুটা প্রশমিত হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্র জানাচ্ছে, আগামী কয়েক দিন তাপমাত্রা খুব একটা কমবে না; বরং তা কিছুটা  বাড়তে পারে।

গত বছর ৩৫ দিন একটানা তাপপ্রবাহ বয়ে গিয়েছিল দেশের বিভিন্ন স্থানে। বিশ্বের ৭৬ বছরের ইতিহাসে তেমনটা হয়নি। সে তুলনায় এবার তাপপ্রবাহ কিছুটা হলেও কম।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এই মেঘ, এই বৃষ্টি, এমনটা কেন, কতক্ষণ থাকবে জানাল আবহাওয়া অফিস