ভূমিকম্পের সময় রাস্তায় প্রসূতির অস্ত্রোপচার
Published: 29th, March 2025 GMT
শুক্রবার যখন ভয়াবহ ভূমিকম্পে কাঁপছিল থাইল্যান্ড, তার আগমুহূর্তে রাজধানী ব্যাংককের পুলিশ জেনারেল হাসপাতালে প্রসব বেদনায় কাতরাচ্ছিলেন এক নারী। চিকিৎসকরা যখন ওই নারীর অস্ত্রোপচার শুরু করেন, তখনই শুরু হয় ভূমিকম্প। এই পরিস্থিতিতে দ্রুত হাসপাতাল থেকে রোগীসহ বের হয়ে রাস্তায় চলে আসেন চিকিৎসকরা। আর সেই রাস্তায় সন্তান প্রসব করেন ওই নারী।
হাসপাতালের মুখপাত্র পুলিশ কর্নেল সিরিকুল শ্রীসাঙ্গা জানান, মেডিকেল টিম রোগীকে হাসপাতাল থেকে বের করে নিয়ে যায় এবং স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের বেষ্টিত অবস্থায় তিনি একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন।
এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে শেয়ার করা হয়েছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে, ওই নারী স্ট্রেচারে শুয়ে আছেন এবং হাসপাতালের কর্মীরা খোলা আকাশের নিচে তার প্রসবের সময় সহায়তা করছেন। ফুটেজে, হাসপাতালের অন্যান্য রোগীদের অসংখ্য স্ট্রেচারকে উঠানে স্থানান্তরিত করতে দেখা যাচ্ছে। সেখানে ডাক্তাররা তাদের চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছেন।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম থাই এনকোয়ারারের মতে, ভূমিকম্পের সময় ওই নারী অস্ত্রোপচারের মাঝামাঝি ছিলেন।
পুলিশ লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিরামরিত বলেন, “পেটের প্রাচীর বন্ধ করার সময় ভূমিকম্প হয়েছিল। সার্জিক্যাল টিম রোগীকে স্থিতিশীল করার এবং তাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।”
তিনি বলেন, “পুনঃমূল্যায়নের পর, নির্ধারণ করা হয় যে, রোগীর অন্ত্রের হার্নিয়েশনের ঝুঁকি এবং বাইরের বাতাসের সংস্পর্শে আসার ঝুঁকি রোধ করার জন্য অবিলম্বে পেট সেলাই করা প্রয়োজন। জরুরি অবস্থা বিবেচনা করে, সার্জিক্যাল টিম অপারেশন রুমের বাইরে একটি জীবাণুমুক্ত পরিবেশে পেটের প্রাচীরের চূড়ান্ত বন্ধন শুরু করে, ১০ মিনিটের মধ্যে প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করে।”
সার্জন জানান, রোগী ও শিশুটি এখন স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ভ ম কম প ওই ন র
এছাড়াও পড়ুন:
হাসপাতাল থেকে ফিরে যাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানালেন তামিম
হার্ট অ্যাটাকের ধাক্কা সামলে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন তামিম ইকবাল। কঠিন সময় পার করে এসে আবেগঘন এক বার্তায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের সাবেক এই অধিনায়ক। সবার ভালোবাসা ও সহযোগিতায় নিজেকে নতুন জীবন পাওয়া একজন ভাগ্যবান মানুষ মনে করছেন তিনি।
ফেসবুক পেজে দেওয়া পোস্টে এই কয়দিনের ঘটনা বর্ণনায় তামিম বলেন, ‘আপনাদের সবার দোয়ায় ও সর্বশক্তিমান আল্লাহর রহমতে এখন আমি বাসায়। উথালপাথাল এই চারটি দিনে নতুন জীবন যেমন পেয়েছি, তেমনি আমার চারপাশকে আবিষ্কার করেছি নতুন করে। সেই উপলব্ধির সবটুকুতে মিশে আছে কেবল ভালোলাগা ও কৃতজ্ঞতা। আপনাদের সবার ভালোবাসার ছোঁয়া ক্যারিয়ারজুড়ে নানা সময়ই পেয়েছি। তবে এবার তা অনভুব করতে পেরেছি আরও তীব্রভাবে। আমি সত্যিই আপ্লুত ‘
উপকারে এসেছেন এমন কয়েকজনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তামিম লেখেন, ‘ বিকেএসপিতে আমার অসুস্থতার শুরু থেকেই অনেককে পাশে পেয়েছি তাৎক্ষণিকভাবে। ম্যাচ রেফারি দেবু দা (দেবব্রত পাল), বিকেএসপির চিকিৎসকরা এবং আরও যারা তখন ছিলেন সেখানে, অ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইভার যে ভাই আমাকে দ্রুতগতিতে নিয়ে গেছেন হাসপাতালে, সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা। আমাদের ট্রেনার ইয়াকুব চৌধুরী ডালিম ভাইয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাব কীভাবে, আমার আসলে জানা নেই। আমি পরে জেনেছি, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলেছেন যে, ডালিম ভাই ওই সময় সঠিকভাবে সিপিআর না দিলে হয়তো আমাকে বাঁচানো যেত না। উপযুক্ত মানুষকে উপযুক্ত সময়ে আমার পাশে রেখে আল্লাহ আমাকে মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরিয়েছেন।’
আরও অনেকজনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তামিম বলেন, ‘ মোহামেডানের সাপোর্ট স্টাফ ওয়াসিমের কথা না বললেও নয়। শুরু থেকে এখনও সার্বক্ষণিক সঙ্গী হয়েই আছে আমার। কেপিজে হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মনিরুজ্জামান মারুফ ও তার দক্ষ চিকিৎসক দল তাদের পেশাদারিত্ব আর আন্তরিকতার মিশেলে যেভাবে দ্রুততায় চিকিৎসা করেছেন, আমাদের দেশের চিকিৎসকদের মান ও কার্যকারিতাই ফুটে উঠেছে তাতে। আমি পরে শুনেছি যে, দেশের প্রখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ডা. মারুফ ও তার দল মিরাকল ঘটিয়েছেন। গোটা চিকিৎসা প্রক্রিয়ায় কেপিজে হাসপাতালের চিকিৎসক, সেবিকা থেকে শুরু করে যারা যে কোনোভাবে যতটুকু সম্পৃক্ত ছিলেন, সবাইকে হৃদয়ে লালন করব আজীবন। এই হাসপাতালে যতটুকু সময় ছিলাম, তাদের হৃদ্যতার পরশ অনুভব করে যাব সবসময়।’
‘ঢাকা শহরের বাইরে ওই এলাকায় এতটা উঁচু মানের হাসপাতাল আছে, এতটা কুশলী চিকিৎসক দল ও স্টাফরা আছেন, দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার এগিয়ে চলার একটি প্রমাণ এটি। দেশজুড়ে নানা জায়গায় এর কাছাকাছি মানের হাসপাতাল যদি আরও কিছু থাকে, আমার মতো আরও অনেক মানুষের প্রাণ রক্ষা পেতে পারে। ধন্যবাদের তালিকা আসলে শেষ হওয়ার নয়।’
পোস্টে তামিম আরও বলেন, ‘আরও অনেকেই নানাভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন, অনেকের কথা জানি, অনেকের কথা হয়তো জানি না। এতটুকু জানি, ধন্যবাদ পাওয়ার আশায় তারা কিছু করেননি। আমি তাদের ভালোবাসার ঋণে আবদ্ধ সারা জীবনের জন্য। পুরোপুরি সেরে ওঠার পথ এখনও দীর্ঘ। আমাকে ও আমার পরিবারকে প্রার্থনায় রাখবেন। সবার জীবন সুন্দর ও শান্তিময় হোক। ভালোবাসা সবার জন্য।’