ঈদের বন্ধে এটিএম সচল রাখতে বাড়তি উদ্যোগ অনেক ব্যাংকের
Published: 29th, March 2025 GMT
এবার ঈদের বন্ধে গতকাল শুক্রবার থেকে টানা ৯ দিনের ছুটির কবলে পড়ছে দেশ। এই সময়ে বন্ধ থাকছে দেশের সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান। তবে খোলা এটিএম বুথ, ইন্টারনেট ব্যাংকিংসহ বিকল্প সব সেবা। ব্যাংক বন্ধ থাকলেও এসব সেবা নির্বিঘ্ন রাখতে নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাস্তবতা হলো ইতিমধ্যে অনেক ব্যাংকের এটিএম অচল দেখা গেছে। আবার অনেক ব্যাংক নিজ গ্রাহক ছাড়া অন্য গ্রাহকদের টাকা তোলার সুযোগ বন্ধ করে দিয়েছে কিংবা নির্দিষ্ট অঙ্কের বেশি টাকা তুলতে দিচ্ছে না। ফলে সাধারণ গ্রাহকদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
সারা দেশে এটিএম বুথ রয়েছে ১২ হাজার ৯৪৬টি এবং ক্যাশ রিসাইক্লিং মেশিন (সিআরএম) রয়েছে ৭ হাজার ১২টি। এটিএম বুথে নিয়মিত টাকা জমা করতে হয়। ঈদের সময় সিআরএমগুলোয়ও এটিএমের মতো টাকা জমা করতে হয়, কারণ এই সময় সবাই টাকা উত্তোলন করে। একটি এটিএমে ২০ লাখ টাকা থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত জমা করা যায়।
ব্যাংকগুলো দুই পদ্ধতিতে এটিএম বুথে টাকা জমা করে। শাখার নিকটবর্তী এটিএম বুথগুলোয় শাখার কর্মকর্তারা টাকা জমা করে থাকেন। দূরের এটিএম বুথগুলোয় তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে টাকা জমা করা হয়।
দেশের ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি এটিএম বুথ রয়েছে ডাচ্–বাংলা ব্যাংকের। ব্যাংকটির এটিএম বুথ রয়েছে ৮ হাজার ২৫০টি। এর মধ্যে অনেকগুলো ফাস্ট ট্র্যাকের মধ্যে। সব ব্যাংকের গ্রাহকেরা টাকা উত্তোলনের জন্য ডাচ্–বাংলা ব্যাংকের এটিএম ব্যবহার করে থাকেন। এবারের টানা বন্ধে গ্রাহকের ভোগান্তি এড়াতে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত ফাস্ট ট্র্যাকের কর্মীদের অফিস খোলা রাখছে ব্যাংকটি। এ ছাড়া নিয়েছে আরও বেশ কিছু উদ্যোগ।
এই উদ্যোগগুলো সম্পর্কে জানিয়েছেন ডাচ্–বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবুল কাশেম মো.
আবুল কাশেম মো. শিরিন আরও বলেন, ‘আমাদের সফটওয়্যার আছে, যা দিয়ে এটিএমে টাকা না থাকলে বা কোনো সমস্যা হলে তাৎক্ষণিক বার্তা পাওয়া যায়। এক ঘণ্টার মধ্যে ভেন্ডররা টাকা জমা না করলে আমাদের পর্যায় পর্যন্ত বার্তা আসে। ফলে কী পরিমাণ এটিএম কাজ করছে, তা আমরা জানতে পারি। সাধারণত আমাদের দেড় থেকে দুই শতাংশ এটিএম বুথে এ ধরনের সমস্যা হয়। এটা যেকোনো দেশের চেয়ে কম। পৃথিবীতে ৩ শতাংশ পর্যন্ত এটিএম কাজ না করাকে গ্রহণযোগ্য ধরা হয়।’
বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে পূবালী ব্যাংকের শাখা ও এটিএম নেটওয়ার্ক শক্তিশালী অবস্থানে আছে। পূবালী ব্যাংকের এমডি মোহাম্মদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটিএম বুথ সার্বক্ষণিক চালু রাখার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ফলে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। যেসব এটিএম বুথে শাখা থেকে টাকা জমা করে, সেসব বুথে শেষ হয়ে গেলে কিছুটা সময় প্রয়োজন হয়। অন্য এটিএম বুথগুলো তৃতীয় পক্ষ থেকে টাকা জমা করে। টাকা না থাকলে আমরা তাৎক্ষণিক জানতে পারি। ফলে ঈদের ছুটিতে টাকা পেতে সমস্যা হবে না।’
বেসরকারি খাতের সিটি ব্যাংক বেশির ভাগ এটিএমকে সিআরএমে রূপান্তর করেছে। ব্যাংকটির এটিএম ও সিআরএম রয়েছে ৪৫৮টি। ব্যাংকটির ৮০ শতাংশ এটিএম ও সিআরএম শাখার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ হয় আর ২০ শতাংশ তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে।
সিটি ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) অরুপ হায়দার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের এটিএম বুথে সার্বক্ষণিক টাকা থাকে। ঈদের বন্ধের মধ্যেও আমাদের কর্মকর্তারা কাজ করবেন। এতে শুধু সিটি ব্যাংক নয়, সব ব্যাংকের কার্ডধারী গ্রাহকেরা উপকৃত হবেন। কারিগরি কারণে আমাদের ১ শতাংশের কম এটিএমে সমস্যা দেখা দেয়। ফলে এটিএম সেবায় আমরা বাজারের সেরা।’
এর পাশাপাশি আরও কিছু ব্যাংক ঈদের মধ্যে ডিজিটাল সেবা সব সময় চালু রাখতে উদ্যোগ নিয়েছে। তবে অনেক ব্যাংক সেই পথে যায়নি। বিশেষ করে তারল্য ও ব্যবস্থাপনার সংকটে থাকা ব্যাংকগুলোর এটিএম সেবা অচল দেখা গেছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অন ক ব য স আরএম গ র হক আম দ র সমস য
এছাড়াও পড়ুন:
গুজরাটে আতশবাজি কারখানায় বিস্ফোরণ, নিহত ১৮
ভারতের গুজরাটের একটি আতশবাজির কারখানা ও গোডাউনে বিস্ফোরণের ঘটনায় অন্তত ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ছিল যে তার ফলে ভবনের একাংশ ভেঙে পড়ে। সূত্র- বিবিসি বাংলা
গুজরাটের পুলিশ বলছে, মঙ্গলবার সকালে গুজরাটের বনাসকাণ্ঠা জেলার ডীসা শহরে আতশবাজির কারখানায় হঠাৎই বিস্ফোরণ হয়।
বনাসকাণ্ঠা জেলার পুলিশ সুপার অক্ষয়রাজ মাকওয়ানা বলেন, খবর পাওয়া মাত্রই স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে উদ্ধারের কাজ শুরু করা হয়। ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে এখনও পর্যন্ত ১৮ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, যে সময় ঘটনাটি ঘটে সে সময় ঘটনাস্থলে কারখানার শ্রমিকেরা ছাড়াও তাদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
গোডাউনের একাংশেই শ্রমিকেরা তাদের পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন। বিস্ফোরণে ভবনের একাংশ ভেঙে পড়ায় ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে যান উপস্থিতদের অনেকেই।
পুলিশের ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ভবনের একটি স্ল্যাব ধসে পড়ায় প্রাণ হারিয়েছেন বহু মানুষ। নিহতরা মধ্য প্রদেশের বাসিন্দা ছিলেন।
তিনি বলেন, এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। আমরা তদন্ত করছি, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ঘটনায় শোক জানিয়েছেন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভুপেন্দ্র প্যাটেল। নিহতের পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণেরও ঘোষণা করেছেন তিনি।
বনাসকাণ্ঠা জেলার কালেক্টর মিহির প্যাটেল বলেন, তীব্র বিস্ফোরণে কারখানার আরসিসি স্ল্যাব ধসে পড়েছে। জেসিবি মেশিনের মাধ্যমে ধ্বংসাবশেষ সরানোর কাজ শুরু হয়।
প্রাথমিকভাবে খবর পাওয়া গেছে, বাজি তৈরির কাজ চলার সময়ই বিস্ফোরণ ঘটে।
স্থানীয়রা বাসিন্দারা জানিয়েছেন, যে সময় ঘটনাটি ঘটে সেই সময় কারখানায় কাজ হচ্ছিল।
হঠাৎ বিকট আওয়াজ শুনতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। মুহূর্তে ছোটাছুটি শুরু হয়ে যায়। চারিদিক থেকে চিৎকার শোনা যাচ্ছিল।
একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, যে সময় ঘটনাটি ঘটে তখন ভেতরে কাজ চলছিল। কমপক্ষে ৩৫ জন ছিলেন সেখানে। ধ্বংসস্তূপের নিচে অনেকে আটকে থাকতে পারেন বলে আশঙ্কা করছি।
তবে ওই কারখানায় ঘটনার সময় ঠিক কতজন উপস্থিত ছিলেন, সে বিষয়ে নিশ্চিতভাবে কিছু বলতে পারেননি কর্মকর্তারা।