দেশের বৃহত্তম পেঁয়াজ উৎপাদনকারী এলাকা ঝিনাইদহের শৈলকুপার হাট-বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়েছে। তবে আশানুরূপ ফলন ও দাম না হওয়ায় হতাশ চাষিরা। তারা বলছেন, সাধারণত গড়ে বিঘাপ্রতি ৫০ থেকে ৬০ মণ পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। সেখানে বিঘাপ্রতি গড়ে ২০ থেকে ৩০ মণ পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে। বর্তমান বাজার মূল্যে প্রতি মণ সর্বোচ্চ ৮শ থেকে ১১শ টাকা। এরকম মূল্য থাকলে আমাদের লাভতো দূরে থাক আসল নিয়ে চিন্তা করতে হবে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবার ১৩ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে পেঁয়াজ রোপণ হয়েছে। যা গত মৌসুমের তুলনায় ৫ হাজার হেক্টর বেশি।
শনিবার শৈলকুপা বাজারের পেঁয়াজ বিক্রি করতে আসা চাষি শরিফ বিশ্বাস বলেন, পেঁয়াজের যে দাম তাতে খরচের টাকা ওঠা মুশকিল। এবার বিঘাপ্রতি খরচ হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১শ’ থেকে ১২শ’ টাকা মণ। হাইব্রিড জাতের সুখসাগর পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭শ’ থেকে ৮’শ টাকা মণ। গড়ে বিঘাপ্রতি উৎপাদন হয়েছে ২০ থেকে ৩০ মণ। ফলে পেঁয়াজ বিক্রি করে উৎপাদন খরচ
ঘরে আসবে না।
আউশিয়া গ্রামের চাষি মনিরুল ইসলাম বলেন, ৭ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ উৎপাদন করেছি। বিঘাপ্রতি খরচ হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। বিক্রি হচ্ছে ৭শ’ থেকে ১১শ’ টাকা মণ। লোকসানের মুখে আমরা।
পাইকারি ব্যবসায়ী রোকনুজ্জামান বলেন, বাজারে পেঁয়াজ বেশি। তাই ১১শ’ থেকে ১২শ’ টাকা মণ বিক্রি হচ্ছে।
পেঁয়াজ মজুতদার হাজী নুরুজ্জামান বলেন, গত মঙ্গলবারের তুলনায় শনিবার পেঁয়াজের মণে ১ থেকে ২শ’ টাকা বেশি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরিফুজ্জামান বলেন, পেঁয়াজের ফলন অনেক কম। ফলে এখন যে দাম তাতে চাষির খরচের টাকা পূরণ হবে না। দাম একটু বাড়লে চাষিরা পরিশ্রমের টাকা তুলতে পারবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শ লক প
এছাড়াও পড়ুন:
নিহতের সংখ্যা ২০০০ ছাড়িয়ে গেল, ৬০ ঘণ্টা পর চারজনকে জীবিত উদ্ধার
মিয়ানমারে শক্তিশালী ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ২০০০ পেরিয়ে গেছে। সোমবার দেশটির সামরিক সরকার জানিয়েছে, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২০৫৬ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া ভূমিকম্পে আহত হয়েছে আরও ৩ হাজার ৯০০। এখনও নিখোঁজ ২৭০ জন। দেশটিতে ভূমিকম্পের প্রায় ৬০ ঘণ্টার পর ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে চারজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। রোববার সাগাইং অঞ্চলে ধসে পড়া একটি স্কুল ভবন থেকে তাঁদের উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছে দেশটির ফায়ার সার্ভিস। এই বিপর্যয়ের পর দেশটিতে এক সপ্তাহের জাতীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। ৬ এপ্রিল পর্যন্ত জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে। খবর- বিবিসি
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন মিয়ানমার সরকারের মুখপাত্র মেজর জেনারেল জাও মিন তুনজানান, মান্দালয় অঞ্চলে ২৭০ জন নিখোঁজ রয়েছেন। সেখানে ভূমিকম্পে মসজিদ, সেতু এবং বিমানবন্দরসহ বিভিন্ন অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্যদিকে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ভূমিকম্পে নিহত ও আহতের প্রকৃত সংখ্যা সরকারি হিসাবের চেয়ে অনেক বেশি হতে পারে। টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা বিকল হওয়ায় অনেক অঞ্চলের ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা যাচ্ছে না।
গত শুক্রবার মিয়ানমারে শক্তিশালী ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। উদ্ধার তৎপরতা চালাতে গিয়ে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে দেশটির সরকারকে। এসব সীমাবদ্ধতার মধ্যে উদ্ধারকারীরা যখন জীবিতদের সন্ধান করছেন তখন জাতিসংঘ জানিয়েছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে চিকিৎসা সরঞ্জামের তীব্র অভাব দেখা দিয়েছে, যা ত্রাণ প্রচেষ্টাকে ব্যাহত করছে।
সাহায্যকারী সংস্থাগুলোর বরাত দিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের ঘটনায় মিয়ানমারের রাস্তাঘাটে লাশের দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। হাসপাতালগুলো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে মিয়ানমারের জন্য জরুরি ভিত্তিতে ৮০ লাখ মার্কিন ডলারের তহবিল সহায়তা চেয়ে আবেদন জানিয়েছে জাতিসংঘ।
ভূমিকম্পে রাস্তাঘাট এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার মতো গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এর সঙ্গে সামরিক সরকার, বিদ্রোহী গোষ্ঠী এবং সশস্ত্র যোদ্ধাদের মধ্যে চলা গৃহযুদ্ধের ফলে এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্ধারে কাজ করা সাহায্য সংস্থাগুলোর পক্ষে কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
দুর্যোগ মোকাবিলা করার জন্য মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকার আন্তর্জাতিক সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে। তবে বিরোধী ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট জোর দিয়ে বলছে, যেকোনো সহায়তা যেন স্বাধীনভাবে ও স্থানীয় নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়। মিয়ানমারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহর মান্দালয়ের ঐতিহাসিক অনেক ভবন এই ভূমিকম্পে মাটিতে মিশে গেছে। উদ্ধারকর্মীরা খালি হাতে ধ্বংসস্তুূপ ঘেঁটে দেখছেন।
২০২১ সাল থেকে মিয়ানমার শাসন করা সামরিক জান্তা দেশটির সাগাইং, মান্দালয়, মাগওয়ে, বাগো, ইস্টার শান রাজ্য এবং নেপিডো অঞ্চলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। দেশটির দুই বড় শহর, মান্দালয় ও ইয়াংগুনের বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা এখনও বিচ্ছিন্ন রয়েছে।