আইনি বিপাকে অভিনেতা শ্রেয়াস তলপাড়ে। তাঁর বিরুদ্ধে ভুয়া অর্থলগ্নি সংস্থা খুলে ১০০ কোটি টাকার বেশি আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। ভারতের উত্তর প্রদেশের এই প্রতারণা মামলায় নাম জুড়েছে আরও ১৩ জনের। খবর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের।

জানা গেছে, ‘লোনি আরবান মাল্টিস্টেট ক্রেডিট’ ও ‘থ্রিফট কো–অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড’ নামের দুটি সংস্থার সঙ্গে যুক্ত এই অভিনেতা। ওই সংস্থা দুটি মূলত গ্রামের বাসিন্দাদেরই টার্গেট করত। বিনিয়োগ করলে কম সময়ে বিপুল সুদের লোভ দেখিয়ে তাঁদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হতো। পরে যদিও ওই টাকা ফেরত পেতেন না গ্রাহকেরা। এ সংস্থার বেশির ভাগ এজেন্টই গা ঢাকা দিয়েছেন।

শ্রীনগরের মাহোবা থানায় এফআইআর করেন এক প্রতারিত ব্যক্তি। ওই সূত্র ধরে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। তাতেই উঠে আসে অভিনেতা শ্রেয়াস তলপাড়ে ও অলোক নাথের নাম। দুজনে কমপক্ষে ৯ কোটি টাকা প্রতারণা করেছেন বলেই অভিযোগ। গোমতী নগর ও সোনিপথ থানাতেও তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়।

আরও পড়ুন৬৭৭তম থেকে জনপ্রিয়তার তালিকায় ১ নম্বরে, কে এই অভিনেতা২৯ ডিসেম্বর ২০২৪

গতকাল সারা দিন এই আর্থিক প্রতারণা মামলায় শ্রেয়াসের নাম জড়িয়ে নানা ধরনের খবর হয়েছে। এরপর রাতে এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অভিনেতা। ম্যানেজারের মাধ্যমে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে তিনি বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ একেবারেই ভিত্তিহীন।

‘ওয়েলকাম টু দ্য জঙ্গল’ ছবিতে কাজ করেছেন শ্রেয়াস। ওই ছবিতে অক্ষয় কুমার, সঞ্জয় দত্ত, রাবিনা ট্যান্ডন, আরশাদ ওয়ার্সি, পরেশ রাওয়াল রয়েছেন। এ ছাড়া ‘হাউসফুল ৫’ ছবিতেও কাজ করছেন শ্রেয়াস। সেখানেও রয়েছেন অক্ষয় কুমার। সঙ্গে থাকছেন রীতেশ দেশমুখ, অভিষেক বচ্চনের মতো তারকারা।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

৯ মাসে মতিন স্পিনিংয়ের ৬৫০ কোটি টাকা ব্যবসা

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) ৬৫০ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে বস্ত্র খাতের কোম্পানি মতিন স্পিনিং। আগের বছরের একই সময়ে কোম্পানিটি ব্যবসা করেছিল ৫৫৭ কোটি টাকার। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ডিবিএল গ্রুপের সহযোগী এই কোম্পানির ব্যবসা বেড়েছে ৯৩ কোটি টাকার বা প্রায় ১৭ শতাংশ। সেই সঙ্গে বেড়েছে মুনাফাও।

মতিন স্পিনিং গতকাল রোববার দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) তাদের তৃতীয় প্রান্তিকের (জুলাই-মার্চ) আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য প্রকাশ করেছে। এর আগে গত শনিবার কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের সভায় এই প্রতিবেদন অনুমোদন করা হয়।

আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত জুলাই থেকে মার্চ—এই ৯ মাসে কোম্পানিটি ৩৬ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। তাতে এটির শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস বেড়ে দাঁড়ায় ৩ টাকা ৬৬ পয়সায়। আগের অর্থবছরের একই সময়ে মতিন স্পিনিং মুনাফা করেছিল ১৫ কোটি টাকা। ওই সময় কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় ছিল ১ টাকা ৫৬ পয়সা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির মুনাফা বেড়েছে ২১ কোটি টাকা বা ১৪০ শতাংশ।

মুনাফায় ভালো প্রবৃদ্ধির বিষয়ে মতিন স্পিনিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম এ জব্বার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগের বছরগুলোর তুলনায় কারখানার বিদ্যুৎ পরিস্থিতি কিছুটা ভালো ছিল। সে কারণে আমরা আমাদের উৎপাদন সক্ষমতার ব্যবহার ভালোভাবে করতে পেরেছি। আবার পণ্য বৈচিত্র্যকরণের মাধ্যমে ভালো মূল্য সংযোজন হয় এ রকম পণ্য উৎপাদনে গিয়েছি। পাশাপাশি উৎপাদন খরচ যাতে না বাড়ে, সেই ব্যাপারে সচেষ্ট ছিলাম। এসব পদক্ষেপের কারণে আমরা ভালো মুনাফা করতে পেরেছি। ভবিষ্যতেও যদি নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকে, তবে আমরা ব্যবসা ও মুনাফা প্রবৃদ্ধির এই ধারা অব্যাহত রাখতে পারব বলে বিশ্বাস করি।’

পণ্য বৈচিত্র্যকরণের মাধ্যমে ভালো মূল্য সংযোজন হয় এ রকম পণ্য উৎপাদনে গিয়েছি। পাশাপাশি উৎপাদন খরচ যাতে না বাড়ে, সেই ব্যাপারে সচেষ্ট ছিলাম। এসব পদক্ষেপের কারণে আমরা ভালো মুনাফা করতে পেরেছিএম এ জব্বার, এমডি, মতিন স্পিনিং

আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, কোম্পানিটির ব্যবসা যতটা বেড়েছে, তার চেয়ে বেশি হারে বেড়েছে মুনাফা। যার বড় কারণ কাঁচামালের খরচ তুলনামূলক কম ছিল। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে ৫৫৭ কোটি টাকার ব্যবসার বিপরীতে কাঁচামাল আমদানিতে খরচ হয়েছিল ৫০৬ কোটি টাকা। সেখানে চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে সাড়ে ৬০০ কোটি টাকার ব্যবসা করতে কাঁচামাল আমদানিতে খরচ হয় ৫৪৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ আগের বছরের চেয়ে চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে কোম্পানিটির ব্যবসা বেড়েছে ৯৩ কোটি টাকার। তার বিপরীতে একই সময়ের ব্যবধানে কাঁচামাল আমদানির খরচ বেড়েছে ৪১ কোটি টাকা বা ৮ শতাংশ। এ ছাড়া প্রশাসনিক ও উৎপাদিত পণ্যের সরবরাহ খরচও খুব বেশি বাড়েনি। তাতে গত জুলাই-মার্চ সময়কালে মতিন স্পিনিংয়ের পরিচালন মুনাফা বেড়ে দাঁড়ায় ৭৮ কোটি টাকায়। গত অর্থবছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৩০ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির পরিচালন মুনাফা বেড়েছে ৪৮ কোটি টাকা।

চলতি অর্থবছরের তিন প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা যায়, কোম্পানিটি ভালো মুনাফা করেছে গত অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে। ওই প্রান্তিকে কোম্পানিটি প্রায় সাড়ে ১৫ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। বাকি দুই প্রান্তিকের প্রতিটিতে মুনাফার পরিমাণ ছিল ১০ কোটি টাকার ঘরে। দ্বিতীয় প্রান্তিকে মুনাফা বেশি করলেও গত তিন প্রান্তিকের মধ্যে কোম্পানিটি সবচেয়ে বেশি ব্যবসা করেছে জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে। জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার গণ–অভ্যুত্থানে যখন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া হিমশিম ছিল, তখন কোম্পানিটি ২২৫ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। বাকি দুই প্রান্তিকের মধ্যে অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে ২২১ কোটি টাকা এবং সর্বশেষ জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে ২০৪ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। তাতে সব মিলিয়ে অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে কোম্পানিটির ব্যবসা দাঁড়ায় ৬৫০ কোটি টাকায়।

এদিকে মুনাফা বাড়লেও গতকাল শেয়ারবাজারে কোম্পানিটির শেয়ারের দরপতন হয়েছে। সার্বিকভাবে বাজারে দরপতন চলতে থাকায় তাতে মতিন স্পিনিংয়ের শেয়ারের দামও কমে যায়। ঢাকার বাজারে এদিন কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ১ টাকা ২০ পয়সা বা প্রায় পৌনে ৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ৪৪ টাকা ৫০ পয়সায়। গত ৫ মাসের ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম প্রায় ১৩ টাকা বা ২২ শতাংশের বেশি কমেছে। গত ১৭ নভেম্বর এটির শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ৫৭ টাকা ২০ পয়সা। গতকাল তা সাড়ে ৪৪ টাকায় নেমে আসে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ