ঈদ এলে বাড়ি ফিরতে ট্রেনের ছাদে চড়ে বসেন অনেকেই। এভাবে ঝুঁকি নিয়ে আপনজনের কাছে ছুটে যান তাঁরা। ট্রেনের ছাদে চড়ে ঝুঁকি নিয়ে ভ্রমণ করা যাবে না, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের এমন নিষেধাজ্ঞা থাকলেও প্রতিবছরেরই চিত্র এটা।

এবার ঈদযাত্রার শুরুর দিকে এ নিয়ে কঠোর ছিল কর্তৃপক্ষ। আজ শনিবার ঈদযাত্রার ষষ্ঠ দিনে এসে সেই চেষ্টায় ছন্দপতন ঘটেছে।

গত পাঁচ দিনের ঈদযাত্রায় অন্তত কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে যাত্রীদের ছাদে উঠে ভ্রমণ করতে দেখা যায়নি। গতকাল শুক্রবার কিছু ট্রেনে অল্পসংখ্যক যাত্রী ছাদে উঠে যাত্রার চেষ্টা করলেও রেল পুলিশ ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা তাঁদের নামিয়ে দেন।

আজ সকাল সোয়া ১০টার দিকে একটি আন্তনগর ট্রেন ছাদে শতাধিক যাত্রী নিয়ে কমলাপুর ছেড়ে গেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ছাদে উঠে পড়া যাত্রীদের নিচে নামাতে চেষ্টার কমতি ছিল না। ট্রেন ছেড়ে দেওয়ার আগমুহূর্ত তাঁদের চেষ্টা করে যেতে দেখা যায়, কিন্তু ফল মেলেনি।

সকাল ১০টা ১০ মিনিটের দিকে কমলাপুর রেলস্টেশনের ৭ নম্বর প্ল্যাটফর্মে গিয়ে দেখা যায়, পঞ্চগড় অভিমুখী একতা এক্সপ্রেস ট্রেনটি ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ভেতরে যাত্রী ঠাসা। অনেকেই দাঁড়িয়ে যাত্রার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কেউ কেউ ট্রেনের বগির দরজা কিংবা দুই বগির সংযোগস্থলেও অবস্থান নিয়েছেন।

এমন সময়ে ট্রেনের সামনের দিকে রেলওয়ে পুলিশ সদস্যরা অনবরত বাঁশি বাজাতে শুরু করেন। মাইকেও কিছু একটা ঘোষণা দেওয়া হয়। কিন্তু প্রচণ্ড ভিড় আর মানুষের কোলাহলে সেই শব্দ অস্ফুট রয়ে যায়। সামনে এগিয়ে ছাদের দিকে তাকাতেই দেখা যায় শতাধিক মানুষের কোমর থেকে হাঁটুর অংশ। ট্রেনের ছাদ ও প্ল্যাটফর্মের ছাদের এ দুইয়ের মাঝে থাকা ফাঁকা অংশটুকুতে একজন মানুষের ওই টুকুই দেখা যাচ্ছিল। দেখা যায়, ছাদে থাকা বেশির ভাগ মানুষ বাঁশির শব্দ আর মাইকে হুঁশিয়ারি শুনে তাঁরা এক বগির ছাদ থেকে অন্য বগির ছাদের দিকে সরে যাচ্ছিলেন, কিন্তু কেউ নামছিলেন না। অপেক্ষা করছিলেন ট্রেন ছেড়ে যাওয়ার।

প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ করতে রাজধানী ছাড়ছেন মানুষ। কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন, ঢাকা, ২৯ মার্চ.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কমল প র

এছাড়াও পড়ুন:

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ঘটনার মামলায় গ্রেপ্তারে অনুমতির সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে রিটের শুনানি বুধবার

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়কার ঘটনায় করা মামলায় আসামি গ্রেপ্তারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে—ঢাকা মহানগর পুলিশের এমন সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে রিট শুনানির জন্য আগামী বুধবার (২৩ এপ্রিল) দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।

শুনানির জন্য বিষয়টি উত্থাপন করা হলে বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার এই দিন ধার্য করেন।

৯ এপ্রিল ঢাকা মহানগর পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স থেকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন-সংক্রান্ত মামলায় আসামি গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে একটি অফিস আদেশ জারি করা হয়। আদেশে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন-সংক্রান্ত মামলায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে এজাহারভুক্ত আসামির সংখ্যা অধিক। এসব মামলার এজাহারভুক্ত কিংবা তদন্তে প্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে উপযুক্ত প্রমাণসহ অবশ্যই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে। উপযুক্ত প্রমাণ ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ঘটনার মামলার এজাহারভুক্ত কিংবা তদন্তে প্রাপ্ত কোনো আসামি গ্রেপ্তার না করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

এই আদেশের বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. জসিম উদ্দিন গতকাল রোববার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট করেন। আজ সকালে আদালতে রিটের বিষয়টি উত্থাপন করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. রুহুল কুদ্দুস। তাঁর সঙ্গে ছিলেন রিট আবেদনকারী মো. জসিম উদ্দিন।

আরও পড়ুনবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ঘটনার মামলায় গ্রেপ্তারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতির সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে রিট২২ ঘণ্টা আগে

পরে আইনজীবী মো. জসিম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘রিটের বিষয়টি উত্থাপন করা হলে আদালত ২৩ এপ্রিল শুনানির জন্য দিন নির্ধারণ করেছেন।’

রিটের প্রার্থনায় দেখা যায়, ৯ এপ্রিলের অফিস আদেশ কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, এ বিষয়ে রুল চাওয়া হয়। রুল হলে বিচারাধীন অবস্থায় অফিস আদেশের কার্যক্রম স্থগিত চাওয়া হয়েছে রিটে। স্বরাষ্ট্রসচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার, ডিবি প্রধান, সিআইডি প্রধান, এসবি প্রধানসহ সাতজনকে রিটে বিবাদী করা হয়েছে।

আরও পড়ুনবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ঘটনার মামলায় গ্রেপ্তারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি লাগবে১২ এপ্রিল ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ