মিয়ানমারে ভূমিকম্প মোট নিহতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে। এছাড়া আর্থিক, পরিবেশগত এবং সার্বিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এক হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতত্ত্ব জরিপ ও গবেষণা সংস্থা ইউনাইটেড স্টেটস জিওলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস) এই তথ্য জানিয়েছে। 

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, শুক্রবার (২৮ মার্চ) মধ্যরাতে নিজেদের ওয়েব সাইটে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে ইউএসজিএস জানিয়েছে, মিয়ানমারে শুক্রবারের ভূমিকম্পে ১০ হাজারের বেশি মানুষ মারা যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দেশটির মোট দেশজ উৎপাদনের মূল্যের চেয়েও বেশি হতে পারে। ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভিসের ভবিষ্যদ্বাণীমূলক একটি সিস্টেম প্রাণহানি এবং ক্ষয়ক্ষতির এই পরিমাণ অনুমান করেছে। 

প্রসঙ্গত, শুক্রবার দুপুরে মিয়ানমারে ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হানে। এর কেন্দ্রস্থল ছিল দেশটির উত্তর-পশ্চিমের শহর সাগাইং থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরে। এলাকাটি রাজধানী নেপিদো থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার উত্তরে। 

আরো পড়ুন:

মিয়ানমারে ভূমিকম্পে নিহত ১৪৪

মিয়ানমারে বাংলাদেশি নাগ‌রিকরা নিরাপদে রয়েছেন: রাষ্ট্রদূত

এতে দেশটির বড় অংশ জুড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শক্তিশালী এই ভূমিকম্পের প্রভাব অনুভূত হয় পাশ্ববর্তী  থাইল্যান্ডসহ দক্ষিণ-পশ্চিম চীন, ভারত, ভিয়েতনাম, লাওস, কম্বোডিয়া এবং বাংলাদেশেও। এর মধ্যে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে থাইল্যান্ডে। ব্যাংককে কয়েকটি বহুতল ভবন ধসে পড়ায় এখনও নিখোঁজ আছেন শতাধিক মানুষ।

ইউনাইটেড স্টেটস জিওলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, ৭ দশমিক ৭ মাত্রার কম্পনের পর মিয়ানমারে অন্তত ১৪টি আফটারশক (ভূমিকম্প পরবর্তী ছোট ছোট কম্পন) আঘাত হেনেছে।

এদিকে মিয়ানমারে ক্ষমতাসীন সামরিক সরকারের হিসেব অনুযায়ী, ভূমিকম্পে দেশটিতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬৯৪ জনে পৌঁছেছে। এছাড়া আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১ হাজার ৬৭০ জন। নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন সরকারি কর্মকর্তারা।

শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানার পর মিয়ানমারের ছয়টি অঞ্চলে জরুরি অবস্থা জারি করেছে দেশটির সামরিক জান্তা সরকার। সাগাইং, মান্দালাই, ম্যাগওয়ে, বাগো, ইস্টার শান রাজ্য এবং নেপিদো অঞ্চলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ভ ম কম প ভ ম কম প র পর ম

এছাড়াও পড়ুন:

ভূমিকম্পে ব্যাংককে একাধিক ভবন ধস, এখনও নিখোঁজ ১০১

ভূমিকম্পে থাইল্যান্ডে একাধিক ভবন ধসের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ব্যাংককে নির্মাণাধীন একটি ৩০তলা ভবন ধসে ১০১ জন শ্রমিক নিখোঁজ রয়েছেন। দেশটিতে ভূমিকম্পে এ পর্যন্ত ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন ১৬ জন। ব্যাংককের ডেপুটি গভর্নর তাভিদা কামোলভেজ এ তথ্য জানিয়েছেন।

আজ শনিবার ব্যাংকক টাইমসের এক প্রতিবেদন বলা হয়েছে, ব্যাংককের চাটুচাক জেলার একটি উচু ভবন ধসে আটজনের মৃত্যু হয়েছে। একজন শ্রমিক মারা যান ক্রেনের নিচে পড়ে। ব্যাং চ্যান এলাকায় আরেকজন মারা যান ঘরের সিলিংয়ের নিচে পড়ে।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৭। এর উৎপত্তিস্থল মিয়ানমারের সাগাইং থেকে ১৬ কিলোমিটার উত্তর–উত্তরপশ্চিমে। ভূমিকম্পটির উৎপত্তি ১০ কিলোমিটার গভীরে। 

ইউএসজিএস জানিয়েছে, স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে আঘাত হানা ভূমিকম্পের প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশ, ভারত, লাওস, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড এবং চীনে।

দুর্যোগ প্রতিরোধ ও প্রশমন বিভাগের মহাপরিচালক পাসাকর্ন বুনিয়ালাক বলেন, ভূমিকম্পে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংকক ছাড়াও আরও ১০টি প্রদেশে আঘাত হানে। এর মধ্যে সামুত সাখন, চিয়াং মাই, চিয়াং রাই, ফারে, মাই হোং সন, লাম্পেং, চাই নাট, লাম্ফুন, লোয়েই ও কামফায়েন্ং ফেট।

এদিকে থাইল্যান্ডের আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ মাই হং সনে আরও দুটি ভূমিকম্প শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি ঘটে পাই জেলায়। এখানে ৪ দশমিক এক মাত্রার, গভীরতা ৫ কিলোমিটার। স্থানীয় সময় ১১ টা ২১ মিনিটে এটি ঘটে। অন্যটি পাই জেলায় ২ মাত্রার, ভোর ৩টা ২৪ মিনিটে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মিয়ানমারে কেন এত বিধ্বংসী ভূমিকম্প 
  • মুঠোফোন বেজে চললেও কোনো জবাব আসছে না: ভবনের বাইরে উদ্বিগ্ন স্বজনদের অপেক্ষা
  • ভয়াবহ ভূমিকম্পের পরও মিয়ানমারে জান্তা বাহিনীর বিমান হামলা
  • মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে কী কারণে এত শক্তিশালী ভূমিকম্প হলো
  • ভূমিকম্পে ব্যাংককে একাধিক ভবন ধস, এখনও নিখোঁজ ১০১
  • মিয়ানমারের নিহতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে